পাঁচ বছরের ব্যবধানে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপকূলীয় অঞ্চলগুলোর জমির দাম বেড়ে তিন গুণ হয়েছে।
পাঁচ বছর আগেও সেখানে বিঘাপ্রতি জমির দাম ছিল সাড়ে তিন লাখের মধ্যে। মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে দাম বেড়ে হয়েছে নয় থেকে ১০ লাখ টাকা।
জমির দাম নিয়ে এমন তথ্য নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন সাতক্ষীরা জেলা রেজিস্ট্রার আব্দুল হাফিজ।
তিনি বলেন, ‘জমির দাম প্রতি পাঁচ বছরে সরকারিভাবে পরিবর্তন হয়। সবশেষ ২০১৫ সালে পরিবর্তন হয়েছে জমির দাম। সরকারিভাবে জমির দামের চেয়ে অনেক বেশি দামে জমি বিক্রি করা হয়। উপকূলীয় অঞ্চলে জমির দাম অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।’
ওই কর্মকর্তা জানান, পদ্মা সেতু চালুর প্রভাবে শ্যামনগর সুন্দরবন উপকূলীয় অঞ্চলে গড়ে উঠছে একাধিক কাঁকড়া চাষের এগ্রো ফার্ম, ফিড তৈরির কারখানা, চিংড়ি প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া এই অঞ্চলে বাণিজ্যিক নানা ধরনের প্রতিষ্ঠানের মালিকরা জমি কিনছেন।
পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় যোগাযোগব্যবস্থা আরও সহজ হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা এসে জমি কিনে প্রতিষ্ঠান করছেন উপকূলে। গড়ে উঠছে শিল্প-কারখানাসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। বাড়ছে উপকূলীয় জনপদের অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থান। এর সঙ্গে বেড়েছে উপকূলীয় জনপদের মানুষের জীবনযাত্রার মান।
উপকূলীয় অঞ্চলটি এক কথায় বাণিজ্যিক অঞ্চলে পরিণত হচ্ছে। এতে এসব অঞ্চলের জমির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েক গুণ। বছর ঘুরতে না ঘুরতে জমির দাম বেড়ে যাচ্ছে।
শ্যামনগর উপজেলার উপকূলীয় পাতাখালি গ্রামের বাসিন্দা মাসুম বিল্লাহ্ জানান, এসব এলাকায় ২০১০ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বিঘাপ্রতি জমির দাম ছিল দুই লাখ থেকে আড়াই লাখ টাকার মধ্যে। তবে মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে এই অঞ্চলের জমির দাম বেড়েছে চক্রবৃদ্ধি হারে। এখন প্রতি বিঘা জমির দাম কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা।
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান এখানে ব্যবসা শুরু করছে। এতে একদিকে যেমন অর্থনৈতিক অঞ্চলে পরিণত হচ্ছে, অন্যদিকে কর্মসংস্থান বাড়ছে, বেকারত্ব কমছে।’
তিনি আরও জানান, আগে যোগাযোগব্যবস্থা ভালো না হওয়ার কারণে এখানে মানুষ জমি কিনত না। তবে এখন যাতায়াতব্যবস্থা ভালো হওয়ায় শহরের মানুষ এখানে এসে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান করছেন। এই অঞ্চলে রয়েছে অনেক দেশি-বিদেশি কাঁকড়ার এগ্রো ফার্ম, রয়েছে চিংড়ি প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠান। এতে জমির দাম ও চাহিদা দুটিই বেড়েছে।