চাকরিপ্রার্থীদের অর্থ আত্মসাৎ ও নারী চাকরিপ্রার্থীদের শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে চক্রের হোতাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম আমির হামজা ওরফে সিরাজী। মঙ্গলবার ভোরে খিলক্ষেত বনরুপা আবাসিক এলাকার রিয়েল ফোর্স সিকিউরিটি অ্যান্ড লজিস্টিক সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেডের অফিসে অভিযান চালিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সিরাজীকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
গ্রেপ্তারের সময় সিরাজীর কাছ থেকে ৪টি ওয়াকিটকি সেট, ৩টি ওয়াকিটকি চার্জার, ১৬টি বিভিন্ন কালারের সিকিউরিটি গার্ড ইউনিফর্মের প্যান্ট, ২টি ক্যাপ (রিয়েল ফোর্স), ১টি মেটাল ডিটেকটর, ১টি সিগন্যাল লাইট, ৬টি বেল্ট, ২টি মোবাইল, ৩ জোড়া বুট ও চার হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘সিরাজী ১৯৯৮ সালে ঢাকায় একটি সিকিউরিটি এজেন্সিতে চাকরি শুরু করেন। পরে পর্যায়ক্রমে তিনি বিভিন্ন সিকিউরিটি কোম্পানি এবং সুপার শপে ২০১৬ সাল পর্যন্ত চাকরি করেন। সিরাজী ২০১৭ সালের শুরুতে রিয়েল ফোর্স নামে সিকিউরিটি কোম্পানির যাত্রা শুরু করেন। ২০২০ সালে কোম্পানিটি লিমিটেড কোম্পানিতে পরিণত হয় এবং এসিআই লজিস্টিকের স্বপ্ন শোরুমে সিকিউরিটি গার্ড নিয়োগের একটি বড় চুক্তি করে।’
লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, ‘চক্রটি মূলত বিভিন্ন থার্ড পার্টি দালালের মাধ্যমে অনলাইনে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে লোক কালেকশন করত। প্রথমে চাকরিপ্রত্যাশীরা দালালের সঙ্গে দেখা করতেন এবং তাদের চার হাজার টাকা জমা দিতে বলা হতো। পরে দালালরা সিরাজীর সঙ্গে যোগযোগ করে তার বারিধারা অফিসে চাকরিপ্রত্যাশীদের রিপোর্ট করতে বলতেন। এ পর্যায়ে ফরম ফিলাপ এবং ইউনিফর্ম বাবদ আরও চার হাজার টাকা নেয়া হতো। চাকরিপ্রত্যাশীদের সুপারভাইজার হিসেবে আট ঘণ্টা ডিউটি এবং মাসিক ১৪ হাজার ৫০০ টাকা বেতনের অফার দেয়া হতো।’
চাকরিপ্রত্যাশীদের বরাত দিয়ে র্যাব জানায়, চাকরিপ্রত্যাশীরা অধিকাংশই লোভনীয় চাকরির অফারে এই চক্রের খপ্পরে পড়েন। পরে ১২ ঘণ্টা সিকিউরিটি গার্ডের ডিউটি এবং ডে-নাইট হিসেবে একসঙ্গে ডিউটি করানো হলেও তাদের বেতন দেয়া হতো না। এর প্রতিবাদ করলে ভিকটিমদের ওপর মানসিক নির্যাতন চালানো হতো। দেখানো হতো প্রশাসনের ভয়।
নারী ভিকটিমদের বরাত দিয়ে র্যাব জানায়, কলহ এবং পরিবার থেকে বিভিন্ন সমস্যার কারণে অনলাইনে লোভনীয় চাকরির বিজ্ঞাপন দেখে তারা ঢাকা শহরে চাকরির উদ্দেশে আসেন। পরবর্তীতে তারা চাকরিতে যোগদানের পর চক্রের মূল হোতা সিরাজী নারীদের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন।