গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্ত্রীর মরদেহ রেখে পালিয়েছেন স্বামী। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শ্বশুরকে আটক করা হয়েছে।
ঘটনার পর সোমবার রাতেই শ্বশুর রামনাথকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মৃত ১৮ বছরের বর্ষা রাণী গাজীপুর মহানগরের পশ্চিম বিলাশপুর এলাকার বাদল রাজভরের মেয়ে। বর্ষার স্বামী দীপ্ত রাজভর গাজীপুর মহানগরের উত্তর বিলাশপুর এলাকার রামনাথ রাজভরের ছেলে।
বর্ষা রাণীর মা লক্ষ্মী নারায়ণ রাজভর বলেন, ‘২০২১ সালের মার্চে প্রেম করে বিয়ে করে বর্ষা রাণী ও দীপ্ত। বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির লোকজন মেয়েকে আমাদের বাড়িতে তেমন আসতে দিত না। এসএসসি পাস করার পর এবার বর্ষাকে গাজীপুর বিজ্ঞান কলেজের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন বর্ষা আরও লেখাপড়া করুক তা পছন্দ করত না।’
দীপ্ত বেকার জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন সময় তারা যৌতুকের জন্য বর্ষাকে চাপ দিত। সর্বশেষ দীপ্তর দাদিকে দিয়ে বর্ষার কাছে ৫ লাখ টাকা ও তিন ভরি স্বর্ণালংকার যৌতুক চেয়েছিল।’
এসব নিয়ে তাদের সংসারে বিভিন্ন সময় কলহ হতো বলে জানান মা লক্ষ্মী। তার ভাষ্য, ‘সোমবার রাত ৮টার দিকে বর্ষা ও দীপ্তর মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে বর্ষার শ্বশুর রামনাথ মোবাইল ফোন করে আমাদের জানান, বর্ষা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাকে হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে। ১১টার দিকে হাসপাতালে গিয়ে মেয়ের লাশ পড়ে থাকতে দেখি। এ সময় দীপ্ত কাছে ছিল না।’
ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বর্ষার কপালে ও গলার নিচে কালো দাগ রয়েছে। সোমবার রাতেই হাসপাতাল চত্বর থেকে নিহতের শ্বশুর রামনাথকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। ঘটনার পর দীপ্তর পরিবারের লোকজন পালিয়ে গেছে।’
এ ঘটনায় এখনও নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।’
সোমবার রাত পৌনে ১১টার দিকে দীপ্ত মৃত অবস্থায় বর্ষাকে হাসপাতালে নিয়েছেন বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।’