গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার পারকোনা গণেশ পাগল সেবাশ্রমের অন্তত ২০০ বছরের পুরোনো বিশাল বটগাছটি ভেঙে পড়েছে।
প্রায় এক একর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত বটগাছ সোমবার সন্ধ্যায় বিকট শব্দে হঠাৎ ভেঙে পড়ে। এতে সেবাশ্রমের চাল দুমড়ে-মুচড়ে যায়। তবে কেউ হতাহত হয়নি।উপজেলা ফরেস্ট অফিসার এফ আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটি পাকুড় গাছ হলেও স্থানীয়ভাবে বটগাছ নামে পরিচিত। গাছ কাটার পর গোড়ার রিং দেখে এর বয়স সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। প্রাথমিকভাবে গাছটির বয়স ২০০ বছরের বেশি বলে মনে হচ্ছে। গাছের বয়স বেশি হলে প্রতি বছর এর কাণ্ডের ক্ষয় হয়। এ কারণে গাছটি ভেঙে পড়তে পারে।’
মঙ্গলবার সকাল থেকে সেবাশ্রমের লোকজন গাছটি অপসারণের কাজ শুরু করেছে। প্রায় অর্ধশত শ্রমিক গাছটি অপসারণে কাজ করছেন। এভাবে কাজ করলে সম্পূর্ণ গাছটি অপসারণ করতে ১০ থেকে ১৫ দিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন গণেশ পাগল সেবাশ্রম মন্দির কমিটির সভাপতি মাইকেল হিরোহিত বিশ্বাস।
তিনি বলেন, ‘মহামানব গণেশ পাগল তার জীবদ্দশায় পারকোনার এই বটগাছের নিচে বসে সাধনা করতেন। তার দেহ ত্যাগের পরে এখানে তার নামে আশ্রম গড়ে ওঠে। স্বাধীনতার পর থেকে আমরা এখানে প্রতি বছর ২১ পৌষ এই বটগাছের নিচে বাৎসরিক মহোৎসব পালন করে এসেছি।’
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ কোটালীপাড়া উপজেলা শাখার সভাপতি সুভাষ চন্দ্র বালা বলেন, ‘মহামানব শ্রীশ্রী গণেশ পাগল ১২৫৫ বঙ্গাব্দে কোটালীপাড়ার পোলসাইর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। সেখান থেকে তিনি উনশিয়ার ভট্টের বাগানে এসে সিদ্ধিলাভ করেন। এরপর তিনি পারকোনার এই বটগাছের নিচে এসে ঈশ্বরের সাধনা ও মানবসেবায় জীবনের অনেকটা সময় কাটিয়েছেন।’
বটগাছটি ভেঙে পড়ার খবর শুনে সেটি দেখতে এসেছেন উপজেলার তারাকান্দর গ্রামের গৃহবধূ অঞ্জনা রায়। তিনি বলেন, ‘৮ বছর ধরে আমি এখানে মহোৎসবে আসি। এই বটগাছটিকে ঘিরে এই এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। তাই শেষবারের মতো গাছটি দেখতে এলাম।’