ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিন। সূর্য পশ্চিমে হেলে পড়তেই ঈদ আনন্দ-আড্ডায় মেতে উঠেছে মানুষ। কেউ প্রিয়জনের সঙ্গে গল্প করছে, কেউ বা আবার পরিবার নিয়ে আড্ডায় ব্যস্ত, কেউ খাবারের দোকানে ভিড় করছে, কেউ নানা রঙের বেলুন নিয়ে শিশুদের খেলার সঙ্গী হচ্ছেন।
সোমবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রাজধানীর হাতিরঝিলে এমন চিত্রই দেখা যায়।
যাত্রাবাড়ী থেকে হাতিরঝিলে ঘুরতে এসেছিলেন তিন বন্ধু কাওসার, আরিফ ও রাকেশ। বিকেলে খোলা আকাশের নিচে নিজেদের মতো করে আড্ডা দিচ্ছিলেন তারা।
কাওসার বলেন, ‘গতকাল খুব ব্যস্ত সময় পার করেছি। আজ তাই বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছি। হাতিরঝিলের পরিবেশ খুব ভাল, তাই যাত্রাবাড়ি থেকে এখানে আসাা।’
ঈদের ছুটিতে যারা ঢাকার বাইরে যাননি তাদের অনেকেই এসেছেন হাতিঝিলে। তেমনই একজন মধুবাগের বাসিন্দা আক্কাস শেখ।
তিনি বলেন, ‘গত ঈদে গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলাম, এবার যাওয়া হয়নি। তাই পরিবার নিয়ে বাসার পাশের হাতিরঝিলেই সময় কাটাচ্ছি।’
কথা হয় সরকারি চাকুরীজীবি রবিউল আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘নাতনি আগে থেকেই বায়না ধরেছিল ঈদের ছুটিতে ঘুরতে নিয়ে যেতে। ওর বাবা-মা আসেনি। কি আর করা, আমাকেই নিতে আসতে হলো।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকা শহরে শিশুদের তো আর খেলার কোনো ভালো জায়গা নেই। তবে এখন হাতিরঝিল হওয়াতে কিছুটা রক্ষা। এখানে এসে শিশুরা অনেক মজা পায়।’
হাতিরঝিলে ঘুরে দেখা যায়, নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের উপস্থিতিতে উৎসবমুখর পরিবেশ। সবগুলো স্পটেই মানুষের ভিড়। দুপুরের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সাধারণ মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। অধিকাংশই পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরছেন। অনেকে আবার দল বেঁধেও ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
একই সঙ্গে শিশু-কিশোরদের ভিড়ও চোখে পড়ার মতো। কেউ খেলছে, কেউ ছবি তুলছে, কেউবা ছোটাছুটিতে ব্যস্ত।
এছাড়া হাতিরঝিলের লেকপাড়ের গোল চত্বরে মানুষের ভিড় দেখে মনে হয় যেন মেলা বসেছে। বেলুন, ফুচকা, ছোট-বড় দোকানে মানুষের ভিড় লেগেই আছে। রাস্তার পাশের খাবারের দোকানগুলোতে চলছে জোর বিক্রি। ইন্ডিয়ান জনপ্রিয় খাবার দোসা, চিকেন, কাবাব কম দামে প্যাকেজ আকারে বিক্রি হচ্ছে এখানে।
আনন্দ নৌ ভ্রমণ প্যাকেজ
হাতিরঝিলের ভেতর লেকের মধ্যে বিনোদনপ্রেমীদের জন্য চালু করা হয়েছে আনন্দ নৌ ভ্রমণ প্যাকেজ। মেরুল বাড্ডামুখী লেকের টিকিট কাউন্টারে দেখা যায় দীর্ঘ লাইন। সেখানে কাগজে দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে লেখা রয়েছে ৮০ টাকায় নৌ ভ্রমণ প্যাকেজ। লেকের ভেতর নৌকাতে ৩০ মিনিট ঘোরা যাবে এই প্যাকেজের আওতায়। যা চলবে ঈদের তৃতীয় দিন পর্যন্ত।
টিকিটের লাইনে দাঁড়িয়ে মাজাহারুল আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ছেলে বায়না ধরেছে নৌকায় ঘুরবে। তাই বাধ্য হয়ে তাই টিকিট কাটছি।