বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সাম্যের যে প্রথায় কোরবানির মাংস সবার

  •    
  • ১১ জুলাই, ২০২২ ১৬:৩৬

স্বরূপনগরের শেখ জাবের বলেন, ‘একটা প্রথা চলে আসছে, বাপ-দাদারা করে গেছেন, এখন আমরাও এটা ধরে রেখেছি। শুধু কোরবানির মাংস বণ্টন করা নয়, সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, কেউ মারা গেলে তার কবর খননসহ দাফনের কাজে সহায়তা করেন সমাজের লোকজন। এসব কারণে এখনও টিকে আছে এ প্রথা।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা জামে মসজিদ। সেখানে অনেক মানুষের উপস্থিতি। সবাই একে অপরের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছেন।

এই চিত্র ঈদের দিন রোববারের। উৎসব ঘিরে একত্রিত হওয়ার উপলক্ষ পেয়েছেন কয়েকটি গ্রামের মানুষ।

সমাজ প্রথা বা পঞ্চায়েতের কারণে কোরবানি মাংসের একটা অংশ নিয়ে আসেন সামর্থ্যবানরা। সেই মাংস পরে সবার মাঝে সমানভাবে বণ্টন করে দেয়া হয়। এ ব্যবস্থার মাধ্যমে শুধু কোরবানির মাংস বণ্টনই নয়, সুখে-দুঃখে সবাই একসঙ্গে কাজ করার বার্তাও ছড়িয়ে দিচ্ছে বলে মনে করেন প্রবীণরা।

শহরের শাহিবাগ এলাকার বাসিন্দা শাহনেওয়াজ দুলাল বলেন, ‘কোরবানির ঈদে সমাজের কার্যক্রম বেশ বাড়ে। বিশেষ করে যারা কোরবানি করেন তারা তিন ভাগ করে এক ভাগ মাংস নিয়ে আসেন। সবার মাংস একত্রিত করে সমাজভুক্ত সব পরিবারের মাঝে সমানভাবে বিতরণ করা হয়। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ কাজটি করেন এলাকার নবীনসহ নানা বয়সী মানুষ।

‘মাংস বণ্টনের পাশাপাশি কোরবানির চামড়া বিক্রিও করা হয় সমাজের মাধ্যমে। প্রথমে সমাজে সব চামড়া জমা করা হয়। তারপর সেগুলো বিক্রি করে সেই টাকা যিনি চামড়া জমা দিয়ে গেছেন, তাকে পৌঁছে দেয়া হয়।’

স্বরূপনগরের শেখ জাবের বলেন, ‘একটা প্রথা চলে আসছে, বাপ-দাদারা করে গেছেন, এখন আমরাও এটা ধরে রেখেছি। শুধু কোরবানির মাংস বণ্টন করা নয়, সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, কেউ মারা গেলে তার কবর খননসহ দাফনের কাজে সহায়তা করেন সমাজের লোকজন। এসব কারণে এখনও টিকে আছে এ প্রথা।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্বরূপনগর উপরাজারামপুর সমাজের পথচলা সম্পর্কে বলতে গিয়ে সমাজের অন্যতম প্রবীণ ব্যক্তি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বলেন, ‘যুগ যুগ ধরে চলে আসা এ প্রথা সমাজের মানুষের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ সৃষ্টি করে। কে ছোট কে বড়, কে ধনী কে গরিব এ ভেদাভেদ দূর করতে এমন সামাজিক কাঠামো খুবই কার্যকর।

‘যেমন আমরা ঈদের সময় সমাজের মাধ্যমে কোরবানির মাংস গ্রামের সবার মাঝে সমানভাবে ভাগ করে দেই। যাতে সবার ঘরেই আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে। শুধু মাংস বণ্টন নয়, গ্রামের মধ্যে কোনো সমস্যা হলে তা সমাধানে চেষ্টা করা হয়। কেউ বিপদে পড়লে তাকে সহায়তা করতে এগিয়ে আসেন গ্রামের অন্যরা।

‘এ ছাড়া গ্রামের মধ্যে ছোটখাটো ঝগড়া-বিবাদ যাতে বড় হতে না পারে আগেই মিটিয়ে ফেলা যায়, সেই কাজটিও করে থাকেন সমাজের দায়িত্বশীলরা। তাদের গ্রামের মোড়ল বলি আমরা। আশা করি, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে মানুষের এমন বন্ধন টিকে থাকবে।’

এ বিভাগের আরো খবর