মাধ্যমিক হয়েছে সেই ১৯৯৭ সালে। এর মধ্যে ঝরাপাতা গুনে কেটে গেছে পঁচিশটি বছর। বেড়েছে বয়স। তবু মনের ভেতর সেই স্কুলজীবনের দুরন্তপনা।
এমন দুরন্তপনাকে প্রশ্রয় দিয়ে রজতজয়ন্তী উৎসবে মেতেছেন বগুড়া জিলা স্কুলের ১৯৯৭ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।
প্রাণের বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সোমবার সকাল থেকে সাবেক ছাত্ররা উৎসবে মেতে ওঠেন। নিজেদের ব্যাচের লোগো দেয়া টিশার্ট পরে স্কুলজীবনের আদলে সমাবেশ করেন তারা। শুরুতে কোরআন তিলাওয়াত করা হয়। এরপর শপথবাক্য পাঠ ও জাতীয় সংগীত গেয়ে সমাবেশ শেষ হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বগুড়া জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও স্কুলের সাবেক শিক্ষক হযরত আলী। তিনি সমাবেশ পরিচালনা করেন।
সমাবেশের পর তারা বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করেন। শহরের প্রধান সড়ক ঘুরে এটি আবার স্কুলে ফিরে আসে।
আয়োজক কমিটির সদস্য আরিফ রহমান সুজন জানান, ১৯৯৭ সালে বগুড়া জিলা স্কুল থেকে ১৬২ জন এসএসসি পরীক্ষা দেন। এর মধ্যে অনেক সহপাঠী মারা গেছেন। অনেকে দেশের বাইরে রয়েছেন।
রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠানে ব্যাচের ১৩০ জন সহপাঠী অংশ নিয়েছেন। এ পুনর্মিলনীর জন্য দীর্ঘদিন তারা অপেক্ষায় ছিলেন। দিনব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে মধুর স্কুলজীবনের স্মৃতিচারণা করবেন তারা।
কেমন লাগছে এই প্রশ্নের জবাবে সাবেক শিক্ষার্থী ও যমুনা টেলিভিশনের নিউজ এডিটর আহসানুল হক আসিফ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অলমোস্ট ২৫ বছর পর এক দিনের জন্য ফিরে গেছি সেই শৈশবের দুরন্তপনায়। তৃতীয় থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়নকালে স্যারেরা যেমন পিটি, শপথ করিয়েছেন, আজও তাই করেছি। ‘দিনভর বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, খুনসুটি, খেলাধুলা যেমন আনন্দের খোরাক জোগাচ্ছে, তেমনি বুকের এক কোনায় কষ্টও আছে। সহপাঠীদের কেউ কেউ অসুস্থ। অনেকে আবার পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে। যে শিক্ষকদের স্নেহ-আদর-শাসনে বেড়ে উঠেছি, তাদের অনেকের মুখ সামনে ভেসে উঠছে।’
অনুভূতির কথা বলতে গিয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা ও জিলা স্কুলের সাবেক শিক্ষক হযরত আলী বলেন, ‘জীবনে অনেকগুলো স্মরণীয় দিন রয়েছে। আজকেও তেমন একটি দিন জীবনে যুক্ত হলো। সেই সময়ের ছোট ছোট বাচ্চাগুলো এখন বড় হয়েছে। তারা দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছে। দেশের সেবা করছে। তাদের কাছে পেয়ে অত্যন্ত ভালো লাগছে। শিক্ষকতার সার্থকতা এখানেই।’
শোভাযাত্রার পর সাবেক শিক্ষার্থীরা খেলার আয়োজন করেন। এরপর দুপুরের খাবারের বিরতি। পরে বিকেলে শিক্ষকদের বরণ ও আলোচন সভা, সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়ে রাতের খাবারের বিরতি। এরপর আতশবাজি ও র্যাফল ড্র করে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানা হবে।
রজতজয়ন্তী পরিচালনা কমিটির সদস্য আরিফ রহমান সুজন বলেন, ‘আমরা সবাই এক প্ল্যাটফরমে একত্রিত হতে পেরেছি এতেই খুশি। এই প্রোগ্রামকে সফল করতে যারা যারা এগিয়ে এসেছে, যাদের ছাড়া আমরা আজকের এই আয়োজন দাঁড় করাতে পারতাম না, তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।’