আনন্দমুখর পরিবেশে প্রিয়জনদের সঙ্গে দেশবাসীর ঈদুল আজহা উদযাপনকালে বিএনপির মিথ্যাচার ও বিদ্বেষপ্রসূত বক্তব্য দেশের মানুষকে হতাশ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
ঈদের দিনেও বিএনপি মহাসচিবের দেয়া বক্তব্য দলটির ‘ঘৃণ্য ও পরশ্রীকাতর রাজনীতিকে’ স্পষ্ট করেছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ঢাকায় সরকারি বাসভবনে সোমবার সকালে এক ব্রিফিংয়ে ঈদের দিনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দেয়া বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে এ মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ নেতা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেশের মানুষ যখন আনন্দমুখর পরিবেশে প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করছেন, তখন বিএনপির মিথ্যাচার আর বিদ্বেষপ্রসূত বক্তব্য দেশবাসীকে হতাশ করেছে। পবিত্র ঈদের দিনে সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে বিএনপি নেতারা ঘৃণ্য এবং পরশ্রীকাতর রাজনীতির পরিচয় স্পষ্ট করেছেন।’
আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এই নেতা বলেন, ‘বিএনপি যে মানুষের আনন্দ-বেদনার সঙ্গে একাত্ম হতে পারে না, তার প্রমাণ পবিত্র ঈদের দিনে তাদের মিথ্যাচার এবং বিষোদগার।’
ক্ষমতার প্রতি তীব্র হাহাকারের দীর্ঘশ্বাস থেকে বিএনপি নেতারা এসব প্রলাপ বকছেন বলেও মন্তব্য করতে ছাড়েননি কাদের।
ঢাকার চন্দ্রিমা উদ্যানে ঈদের দিন সকালে ঈদযাত্রায় দুর্ভোগ আর ভোগান্তি সয়ে বাড়ি ফেরা মানুষের কোনো ঈদ আনন্দ নেই বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যাতায়াত-যোগাযোগব্যবস্থা বিশেষ করে ট্রেনের কথা আপনি বলছেন- এগুলোর কোনো অথরিটি আছে, কোনো কর্তৃত্ব আছে- সেটাই মনে হয় না। রাস্তাঘাটে আপনারা দেখেছেন প্রতিদিন কীভাবে দুর্ঘটনা ঘটছে।’
বিএনপি নেতা বলেন, ‘এই সরকার বলতে আমরা যেটা মনে করি যে, কোনো সুশাসন নেই, কোনো গভর্নেন্স নেই। শুধু একটা দিকে তাদের লক্ষ্য, দুর্নীতি করা এবং প্রকৃতপক্ষে দেশকে তারা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করছে।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের জবাবে বিএনপির প্রতি প্রশ্ন ছুড়ে দেন কাদের। তিনি বলেন, ‘যারা দিনরাত সরকারের বিরোধিতাকে রাজনীতির লক্ষ্য করে নিয়েছে তারা সুশাসন নিশ্চিত করতে এ পর্যন্ত কী করেছে?’
কাদের বলেন, ‘বিএনপি গণতন্ত্রের প্রকাশ্য শত্রু, সাম্প্রদায়িক রাজনীতির ধারক ও উসকানিদাতা, মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের প্রশ্রয়দাতা এবং ধর্মান্ধ গোষ্ঠীরও উসকানিদাতা।’
রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে মর্মান্তিক গ্রেনেড হামলা, রাজনীতিতে সন্ত্রাস, দুর্নীতি, জীবন্ত মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে মারা তাদের ঐতিহ্য বলেও জানান কাদের।
এ প্রসঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির মুখে সুশাসনের কথা মানায় না, এসব কথা বলার আগে আয়নায় নিজেদের চেহারা দেখুন।’
‘বিএনপি হচ্ছে দুঃশাসনের প্রতিভূ, গণতন্ত্র বিনাশী এক রাজনৈতিক অপশক্তি’, মন্তব্য ওবায়দুল কাদেরের।
বিএনপির শাসনামলের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ খাতের ইনডেমনিটির কথা বলার আগে বিএনপি কি ভুলে গেছে, তারাই বঙ্গবন্ধুর খুনিদের রক্ষায় ইনডেমনিটি দিয়েছিল। অপারেশন ক্লিন হার্টের সময় বেগম খালেদা জিয়াও ইনডেমনিটি দিয়েছিলেন।’
কাদের বলেন, ‘বিএনপির ইনডেমনিটি খুনিদের রক্ষা করার জন্য, আর শেখ হাসিনার সরকার ইনডেমনিটি দিয়েছে উন্নয়ন অব্যাহত রাখার স্বার্থে, জনগণের কল্যাণে। বিএনপি দেশকে অন্ধকারে নিমজ্জিত করেছিল, আর শেখ হাসিনা সরকার সে অন্ধকার থেকে দেশকে আলোকিত করেছে।’
বিএনপিকে দেশের ‘চিহ্নিত লুটেরা’ এবং ‘অর্থ পাচারকারী দল’ বলে আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিদেশের আদালতে প্রমাণিত সন্ত্রাসী দল বিএনপি। তারাই চায় এ দেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হোক, কিন্তু দেশের জনগণ তা হতে দেবে না।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি তার দেশি-বিদেশি দোসরদের নিয়ে যত অপচেষ্টাই করুক, যত ষড়যন্ত্রই করুক এ দেশকে আর কখনও দাবিয়ে রাখা যাবে না।’