‘এই বরিশাল, পটুয়াখালী, গোপালগঞ্জ, খুলনা। এই রাজবাড়ী, পাংশা…।’ রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে এভাবে যাত্রীদের ডাকছেন বিভিন্ন টিকিট কাউন্টারের লোকজন। অনেকে আবার কাউন্টারের সামনে দিয়ে হেঁটে যাওয়া যাত্রীদের টেনে ধরে জিজ্ঞাসা করছেন, ‘ভাই কোথায় যাবেন?’
মাত্র এক দিনের ব্যবধানে পাল্টে গেছে রাজধানীর বাস টার্মিনালগুলোর চিত্র। শনিবারও যেখানে টিকিকেট জন্য মানুষ হাহাকার করেছেন, সেখানে ঈদের দিনে এভাবেই ডেকে ডেকে যাত্রী জোগাড়ের চেষ্টা করছেন পরিবহন শ্রমিকরা।
গত কয়েক দিনে রাস্তায় নানা ভোগান্তি পার করে প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে রাজধানী ছেড়েছেন লাখো মানুষ। আবার অনেকে নানা কারণে ঈদের আগে বাড়ি ফিরতে পারেননি। যারা আগে পারেননি তাদের অনেকেই রোববার বাড়ি ফিরছেন।
বরিশালগামী হানিফ পরিবহনের টিকিট বিক্রেতা ফয়সাল হোসেন বলেন, ‘ঈদের নামাজ পড়ে মাত্র এসে কাউন্টার খুললাম। সারাদিন ওভাবে যাত্রী হবে না। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত যাত্রী পাব বলে আশা করছি।’
ঈগল পরিবহনের টিকিট বিক্রেতা জিয়াউর রহমান বলেন, ‘সকাল থেকে এখনো গাড়ি ছাড়ি নাই। কারণ, যাত্রী নাই। কয়েকজন পাইছি, আর কয়েকজন পেলে ট্রিপ ছাড়মু।’
রোববার সকাল থেকে গাবতলীর রাস্তা ফাঁকা। ভোর থেকে ট্রাক, বাস যে যেটা পেয়েছেন তাতে করেই বাড়ি ফিরেছেন।
সকাল থেকে কাউন্টার ফাঁকা থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীরা কাউন্টারে আসা শুরু করছে। সকালে দুই-একটি কাউন্টার খোলা থাকলেও ঈদের নামাজের পর থেকে বেশ কিছু কাউন্টার খুলে।
সাকুরা পরিবহনের টিকিট বিক্রেতা সালাউদ্দিন বলেন, ‘রোজার ঈদে সকালে যাত্রীর চাপ থাকে। কিন্তু এই ঈদে বিকেলে যায় যাত্রীরা। অনেকে কোরবানির মাংস নিয়ে বাড়ি যায়। আবার অনেক সারা দিন কসাইয়ের কাজ করে রাতে গ্রামে যায়। এ কারণে বিকেল থেকে যাত্রী পাওয়ার যাবে।’
দক্ষিণাঞ্চলের বাস সুবর্ণ পরিবহনের টিকিট বিক্রেতা খোকন চক্রবর্তী বলেন, ‘সকাল ৯টায় রাজবাড়ীর একটা ট্রিপ ছাড়ছি। যাত্রী অর্ধেকেরও কম ছিল। আজকে সারাদিন এরকমই যাত্রী হবে, অল্প অল্প। প্রতি বছরের মতো বিকেলে বাড়তে পারে।’
হানিফ পরিবহনের বাসে বরিশাল যাবেন ফয়সাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘সকালে নামাজ পড়ে বাড়ি যাচ্ছি। আমি একটু অসুস্থ ছিলাম, তাই ভিড়ের মধ্যে যাই নাই। আজকে নিরিবিলি যাচ্ছি।’
কাউন্টারে এসে মাগুরার বাস খুঁজছেন সিরাজ মিয়া। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ভাবছিলাম এই ঈদে বাড়ি যাব না। পরে বাড়ির মানুষের অনুরোধে যাওয়া লাগতেছে। সকালে নামাজ পড়লাম এলাকার মসজিদে। পরে নাশতা খেয়ে বের হইছি। একটা বাস পেলেই উঠে পড়ব।’