বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যানজটে তৃষ্ণার্তদের দিনভর পানি দিল একদল যুবক

  •    
  • ৯ জুলাই, ২০২২ ২১:২১

দিনাজপুরের ট্রাকচালক আলী আজম বলেন, ‘আমরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গাড়ি চালাই। কিন্তু যানজটে পড়লেও কাউকে কখনও ফ্রিতে পানি সরবরাহ করতে দেখিনি। তাদের পানি পান করে আমি খুবই আনন্দিত।’

ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে শুক্রবার ভোর থেকেই তীব্র যানজট। এই সুযোগে মহাসড়কের আশপাশের অস্থায়ী হকাররা ১৫ টাকার পানি ২০-২৫ টাকাও বিক্রি করেছে। এ ছাড়া কলা, পাউরুটিসহ বিভিন্ন খাবারের দামও তারা বেশি রাখা শুরু করে।

এমন পরিস্থিতিতেই যানজটে আটকে থাকা তৃষ্ণার্ত মানুষের দিকে পানির বোতল নিয়ে এগিয়ে গেলেন একদল যুবক। হাতে হাতে বিনা মূল্যে এই পানি সরবরাহ করেছে তারা।

ঘটনাটি ঘটেছে মহাসড়কের টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার মিরহামজানি গ্রামে। ওই গ্রামের বেল্লাল হোসেন, লাল মিয়া, সেলিম, ফরিদসহ আরও কয়েক যুবক শনিবার সকাল থেকে প্রচণ্ড গরমে হাজারও মানুষের মাঝে পানি সরবরাহ করেছেন। শুধু তা-ই নয়, আশপাশের গ্রামগুলোর নানা বয়সী নারী-পুরুষ ঘরমুখো যাত্রীদের মাঝে বিনা মূল্যে পানি ছাড়াও নিজেদের গাছের ফলও সরবরাহ করছেন।

সংশ্লিষ্টদের বরাতে জানা যায়, শুক্রবার ভোর রাতে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম প্রান্তের পিলারের কাছে সড়ক দুঘর্টনার কারণে ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট টোল আদায় বন্ধ রাখে সেতু কর্তৃপক্ষ। এতে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়।

শনিবার সকাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব পার থেকে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার করটিয়া পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা কমে এলেও বিকেল ৪টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে সদর উপজেলার রাবনা পর্যন্ত প্রায় ২৩ কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজট দেখা গেছে। এই সুযোগকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করে মহাসড়কের স্থায়ী হকাররা। তারা পানি ও খাবারের দাম প্রায় দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেয়।

এ অবস্থায় মিরহামজানি গ্রামের যুবকদের বিনা মূল্যে পানি সরবরাহ করার উদ্যোগের প্রশংসা করেন ভুক্তভোগী যাত্রীরা।

নাটোরগামী কুরবান আলী বলেন, ‘রাবনা এলাকায় তিন গ্লাস পানি ২০ টাকা দিয়ে কিনে খেয়েছি। অথচ একই জেলার কালিহাতীতে বিনা টাকায় এক বোতল পানি পেয়েছি। আমার মতো শত শত ঘরমুখো মানুষ এই উপকার পেয়েছে। যারা এই মহৎ উদ্যোগ নিয়েছে তাদের জন্য দোয়া রইল।’

কুষ্টিয়ার গোপাল মিয়া বলেন, ‘টাঙ্গাইলে যানজটে পড়ে আধালিটার ফ্রেশ পানি ২৫ টাকা দিয়ে কিনে খেয়েছি। এখানে এসে দেড় লিটার পানি ফ্রিতে পেয়েছি। যানজটে আটকে থেকে দুর্ভোগ হলেও পানি সরবরাহ দেখে আমার খুবই ভালো লেগেছে।’

দিনাজপুরের ট্রাকচালক আলী আজম বলেন, ‘আমরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গাড়ি চালাই। কিন্তু যানজটে পড়লেও কাউকে কখনও ফ্রিতে পানি সরবরাহ করতে দেখিনি। তাদের পানি পান করে আমি খুবই আনন্দিত।’

পানি বিতরণ করা যুবকরা জানান, সকাল থেকেই তারা স্থানীয় মাদ্রাসা থেকে বিশুদ্ধ পানির পাইপ লাইন এনে পানি সরবরাহ করেছেন। যাত্রীদের অনেকের কাছেই খালি বোতল আছে। তাদের বোতলই পানি দিয়ে পূর্ণ করে দিয়েছেন তারা।

যুবকরা জানান, যতক্ষণ যানজট থাকবে ততক্ষণই পানি সরবরাহ করার পরিকল্পনা তাদের।

এ বিভাগের আরো খবর