বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সাড়ে ১০ লাখে দেননি, এখন ৭ লাখ বলা লোককে খুঁজছেন

  •    
  • ৯ জুলাই, ২০২২ ১৮:২৮

‘গত পরশু এর দাম বলে গিয়েছিল সাড়ে ১০ লাখ টাকা। আমরা ছাড়িনি। আজ সকালে ১২ লাখ টাকা হাঁকাই। কিন্তু ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত ওঠে। আমরা এখন ৯ লাখ টাকা হলেও ছেড়ে দেব। কিন্তু ক্রেতা পাচ্ছি না। যারা ৭ লাখ পর্যন্ত বলেছেন তাদেরও আর খুঁজে পাচ্ছি না। এখন শঙ্কায় আছি গরু বিক্রি নিয়েই।’

কোরবানির পশুর হাটের শোভা তারা। তবে তাদের হাটে যারা নিয়ে আসেন, তাদের মনের কোণে থাকে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা।

পশুগুলো আকারে বিশাল, স্বভাবতই দাম এত বেশি থাকে যা সিংহভাগ মানুষের সামর্থ্যে কুলায় না। গরুগুলো দেখে চোখের আরাম ছাড়া কিছুই করার নেই।

শুরুতে দেখা যায়, একেকটা গরুর জন্য আকাশচুম্বী দাম হাঁকা হয়। কিন্তু ক্রেতা কম থাকায় ধীরে ধীরে চাওয়া দাম কমতে থাকে।

ঈদের আগের দিন আফতাবনগর হাটে বড় আকাদের গরু নিয়ে আসা ব্যাপারীদের মধ্যে উৎকণ্ঠা দেখা দেয়। হাটে ছোট ও মাঝারি গরুর তুমুল চাহিদার মধ্যে বড় গরুগুলোকে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

ক্রেতা যারা এসব গরুর পাশে আসছেন, তারা যত না দাম করছেন, তার চেয়ে বেশি ব্যস্ত ছবি তুলতে। নড়াইল লোহাগড়া থানার খাদিজা ডেইরি ফার্ম থেকে এসেছেন খোকন মিয়া। তার গরুটির নাম ‘সুলতান’। লালচে সাদার মধ্যে কালো বর্ণের সাড়ে ১১ ফুট লম্বা আর ছয় ফুটের দীর্ঘকায় ফ্রিজিয়ান জাতের গরুটি যেন এই হাটের সত্যি সত্যি সুলতান।

গরুটির সামনের ডিসপ্লেতে লেখা রয়েছে এটি খুলনা বিভাগের সবচেয়ে বড় গরু। ৪৫ মণ বা ১ হাজার ৮০০ কেজি।খোকন প্রথম দিকে সুলতানের দাম চেয়েছেন ১৮ লাখ টাকা। এখন নেমে এসেছেন ১২ লাখে।

খোকন জানান, ‘গত চার দিনে বাজারে হাজার হাজার ক্রেতা আসছেন, আসা-যাওয়ার পথে সবাই সুলতানকে দেখে যাচ্ছেন। কিন্তু এদের মধ্যে এখন পর্যন্ত দরদাম করেছেন ২০-২৫ জন ক্রেতা।’‘গত পরশু এর দাম বলে গিয়েছিল সাড়ে ১০ লাখ টাকা। আমরা ছাড়িনি। আজ সকালে ১২ লাখ টাকা হাঁকাই। কিন্তু ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত ওঠে। আমরা এখন ৯ লাখ টাকা হলেও ছেড়ে দেব। কিন্তু ক্রেতা পাচ্ছি না। যারা ৭ লাখ পর্যন্ত বলেছেন তাদেরও আর খুঁজে পাচ্ছি না। এখন শঙ্কায় আছি গরু বিক্রি নিয়েই।’

‘শেষ বিকেলে ভাগ্যে থাকলে বিক্রি হবে। না হলে বুকে চাপা কান্না নিয়েই ফেরত যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি আমরা।’

আফতাবনগর হাটে তোলা রাজার দাম বিক্রেতা শুরুতে চান ১২ লাখ। সর্বোচ্চ দাম উঠেছে সাড়ে তিন

সুলতানের পাশেই তোলা হয়েছে ফ্রিজিয়ান জাতের আরেক দীর্ঘকায় গরু সাদার মধ্যে কালচে বর্ণের ‘রাজা’কে।এর মালিক গাইবান্ধার খামারি মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, ‘আমরা রাজার দাম চেয়েছিলাম ১২ লাখ টাকা। গত চার দিনে তাকেও সবাই দেখতে এসেছেন। দরদাম করেছেন ১৫-১৬ জন ক্রেতা। কিন্তু তারা সাড়ে তিন লাখ টাকার বেশি বলছেন না।’

তিনি বলেন, ‘ফ্রিজিয়ান জাতের এই রাজার গায়ে মাংস আছে ১ হাজার ৫৬০ কেজি বা ৩৯ মণ। আজ শেষ দিন কিন্তু ক্রেতা আসছে না। যারা আসছে তারা ছোট ও মাঝারি গরুর দিকে যাচ্ছে, আর কপাল পুড়ছে আমাদের।’

ইউনুস বলেন, ‘দেশে আরও খারাপ সময় গেছে, কিন্তু বড় গরু বিক্রি এবং সামর্থ্যবান ক্রেতার কোনো সমস্যা হয়নি। আল্লাহই জানে আবার কী হচ্ছে। জান পানি করে রাজাকে এত বড় করেছি এবং এতদূর নিয়ে এসেছি। এখন তো দেখছি আম-ছালা দুটোই যাচ্ছে আমার।’ঝিনাইদহ মহেশপুরের মোস্তফা নিয়ে এসেছেন কালচের মধ্যে ধূসর সাদা বর্ণের ফ্রিজিয়ান জাতের ১৮ মণ ওজনের গরু। তিনিও ক্রেতার দেখা পাচ্ছেন না।এর দাম ছয় লাখ টাকা চাইছেন মোস্তফা। তিন লাখের বেশি কেউ বলছেন না। কেন বড় গরুতে এমন অনাগ্রহ- জানতে চাইলে মোস্তফা বলেন, ‘ধারণা করছি, দেশের বড়লোকরাও গরিব হয়ে গেছে। এ ছাড়া অন্য কোনো কারণ আমি খুঁজে পাচ্ছি না।’

হাটের ইজারাদার প্রতিষ্ঠানের তথ্যমতে, এই বাজারে হাজার কেজি থেকে ১ হাজার ৮০০ কেজি পর্যন্ত ফ্রিজিয়ান জাতের ৪০ থেকে ৫০টি গরু এসেছে। এর মধ্যে অপেক্ষাকৃত ছোট আকৃতির ৮ থেকে ১০টি বিক্রি হয়েছে আড়াই থেকে তিন লাখ টাকায়।

এ বিভাগের আরো খবর