ঈদুল আজহার প্রধান জামাত সকাল ৮টায় জাতীয় ঈদগাহে হবে। ইতিমধ্যেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ঈদগাহ মাঠের সব প্রস্তুতি শেষ করেছে।
এবার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদগাহে আমন্ত্রণ জানিয়েছে আয়োজক দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। গতবছর এক লাখ মুসল্লি নামাজ আদায় করলেও এ বছর তা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫ হাজার।
জাতীয় ঈদগাহে একসঙ্গে ৩৫ হাজার মানুষ নামাজ আদায় করবেন। শনিবার দুপুরে ঈদগাহ ময়দান পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
তিনি জানান, বৃষ্টি না হলে সকাল ৮টায় জাতীয় ঈদগাহ মাঠে ঈদের প্রধান জামাত হবে আর যদি বৃষ্টি হয় তাহলে ঈদের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে হবে।
শনিবার দুপুরে জাতীয় ঈদগাহ ময়দান পরিদর্শন শেষে সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। ছবি: নিউজবাংলা
আগে জাতীয় ঈদগাহতে এক লাখের মতো মুসল্লি অংশ নিতে পারতেন, কিন্তু এবার ৩৫ হাজার কেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘যেহেতু করোনা মহামারি আবারও ঊর্ধ্বমুখী সে ক্ষেত্রে সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে উপস্থিত হবেন। আমাদের যে সক্ষমতা, সে অনুযায়ী আমরা ৩৫ হাজার মুসল্লি আমন্ত্রণ করছি।’
মেয়র পরিদর্শনে আসার আগেই শনিবার সকালে জাতীয় ঈদগাহ মাঠের সকল প্রস্তিতি সম্পন্ন করা হয়। মূল ফটকের সজ্জা, মাঠের প্যান্ডেল, লাইটিংসহ সকল কাজ শেষ করা হয়। জাতীয় ঈদগাহের মাঠটি ৬৫০ ফুট দৈর্ঘ্যের এবং ৩৬০ ফুট প্রস্থের।
৩০ হাজার বর্গমিটার ময়দানের ২৫ হাজার ৪০০ বর্গমিটার জুড়ে প্যান্ডেল করা হয়েছে। এর নিচেই জামাত আদায় করবেন মুসল্লিরা।
ঈদগাহে থাকছে ডিএমপি ও র্যাবের আলাদা নিরাপত্তা ব্যবস্থা
ঈদুল আজহার প্রধান জামাতকে কেন্দ্র করে আলাদা নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ ও এলিট ফোর্স র্যাব। দুই বাহিনীর পক্ষ থেকেই কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকছে।
শুক্রবার বেলা ১১ টায় জাতীয় ঈদগাহের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে মুসল্লিদের আশ্বস্ত করে ডিএমপি কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, আপনারা যে যেখানে খুশি যেভাবে খুশি নামাজ পড়তে যাবেন আপনাদের নিরাপত্তা দিবে মহানগর পুলিশ। যেকোন ধরনের হামলার শঙ্কা উড়িয়ে না দিলেও, প্রতিরোধে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বলে জানান ডিএমপি কমিশনার। একই সঙ্গে জাতীয় ঈদগাহে নিরাপত্তার জন্য আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর, ডগ স্কোয়ার্ড, টহল টিমসহ সাদা পোশাকে ডিএমপির গোয়েন্দারা দায়িত্ব পালন করবেন।
অন্যদিকে, ঈদ জামাতকে ঘিরে জাতীয় ঈদগাহে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরি করেছে র্যাব।
শনিবার সকালে জাতীয় ঈদগাহ পরিদর্শন শেষে র্যাব অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) কর্নেল মো. কামরুল হাসান এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঈদগাহে ও প্রতি বছরের মতো আমরা বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছি। স্পেশাল টিম, ডগ স্কোয়ার্ড এবং আমাদের সুইপিং টিমের মাধ্যমে এখানকার নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।’
পাশাপাশি অবজারভেশন পোস্ট এবং সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। ঈদগাহে পর্যাপ্ত পরিমাণে সাদা পোশাকে গোয়েন্দা দল উপস্থিত থাকবে।
মুসল্লিদের প্রতি নির্দেশনা
ডিএমপি ও র্যাবের এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা অতিক্রম করেই ৩৫ হাজার মুসল্লি রোববার সকালে জাতীয় ঈদগাহে প্রধান জামাতে অংশ নিবেন। আর এই তল্লাশি কার্যক্রমের জন্য মুসল্লিদের দীর্ঘ লাইন তৈরি হতে পারে। এমনটা বিবেচনায় ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তাদের দায়িত্ব পালনে সহযোগিতা করতে কিছুটা বাড়তি সময় হাতে নিয়ে জাতীয় ঈদগাহে আসতে অনুরোধ করেন র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) কর্নেল মো. কামরুল হাসান।
তিনি বলেন, তল্লাশির জন্য ঈদগাহ মাঠে ঢুকতে কিছু লম্বা লাইন তৈরি হতে পারে, আপনারা (মুসল্লিরা) একটু সময় হাতে নিয়ে আসবেন।
তা ছাড়া ডিএমপির নির্দেশনা হল ঈদগাহে জায়নামাজ, ছাতা ও মুঠোফোন ছাড়া সঙ্গে কোন ব্যাগ বা অন্য কিছু বহন না করা। মুঠোফোন বহন করলেও তা পকেটে না রেখে হাতে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার।
তিনি বলেন, অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে যারা নামাজে আসেন তাদের অন্যান্য মুসল্লিদের থেকে আলাদা করা মুশকিল। ভিড়ের মধ্যেই তারা অঘটন ঘটায়। তাই আপনার (মুসল্লিদের) মোবাইল ফোনটি পকেটে না রেখে হাতে রাখবেন যেন তা চুরি না হয়ে যায়।