পদ্মা সেতু চালুর পর থেকে রাজধানী থেকে দক্ষিণবঙ্গমুখি যাত্রীদের মধ্যে যে স্রোত, তা বহুগুণ বেড়েছে ঈদযাত্রায়। তবে এক্সপ্রেসওয়েতেও গাড়ির জটলা, সেতুর টোল প্লাজায় কয়েক কিলোমিটার যানজটেও টোলে এগিয়ে এখনও উত্তরের পথে যমুনা নদীর ওপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু সেতু।
শেষ ২৪ ঘণ্টার হিসেবে বঙ্গবন্ধু সেতু সরকারের জন্য পদ্মা সেতুর তুলনায় ১৭ লাখ ৫৬ হাজার ৩৫০ টাকা বেশি রাজস্ব আদায় করেছে।
বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জকে সংযুক্ত করা যমুনা সেতুতে টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৩৪ লাখ ৭ হাজার ৭০০ টাকা। যা এখন পর্যন্ত এই সেতুতে সর্বোচ্চ টোল আদায়ের ঘটনা।
অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মা সেতুতে টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ১৬ লাখ ৫১ হাজার ৩৫০ টাকা। তবে পদ্মার সেতুর হিসাবটি দিনেরটা দিনে করা হয়। অর্থাৎ রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে পরের দিন রাত ১২টা পর্যন্ত।
এই সময়ে উত্তরের পথে গাড়িও দক্ষিণের পথের তুলনায় বেশি ছিল।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের বঙ্গবন্ধু সেতুর সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান মাসুদ বাপ্পী জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে ৪৩ হাজার ৫৯৫টি ছোট-বড় যানবাহন পারাপার হয়েছে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (মনিটরিং) আবুল হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘ সেতুটি দিয়ে ছোটবড় ২২ হাজার ৭০০টি গাড়ি পারাপার হয়েছে।
গত ২৬ জুন চালু হওয়ার পর পদ্মা সেতুতে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ টোল আদায় করা হয়েছে গত ১ জুলাই। সেদিন ৩ কোটি ১৬ লাখ ৫৩ হাজার ২০০ টাকা টোল আদায় হয় সেতুটিতে। ওই দিন পদ্মা সেতু পাড়ি দেয়া গাড়ির সংখ্যা ছিল ২৬ হাজার ৩৯৮।
অর্থাৎ ঈদযাত্রার শুরুর দিন ব্যাপক ভিড়ের মধ্যেও গাড়ি পারাপার গত ১ জুলাইয়ের তুলনায় কম ছিল।
আবুল হোসেন মনে করছেন, শুক্রবার এই টোল আদায়ের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। যদিও সেই হিসাব পেতে অপেক্ষা করতে হবে আরও কয়েকঘণ্টা।
গত ২৪ ঘণ্টায় বঙ্গবন্ধু সেতুতে যে পরিমাণ টোল আদায় হয়েছে তা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ বলে জানিয়েছেন সেতুটির সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান মাসুদ বাপ্পী।
তিনি জানান, ঈদযাত্রার প্রভাবেই গত ২৪ ঘণ্টায় পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত যানবাহন, ট্রাক, পিকআপ, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, হায়েস ও মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন ব্যক্তিগত যানবাহন ছাড়াও বিপুলসংখ্যক বাস সেতু দিয়ে পারাপার হয়েছে।
গত ২৬ জুন পদ্মা সেতু খুলে দেয়ার পর প্রথম দিন গাড়ি পারাপার হয়েছে ৫১ হাজার ৩১৬টি। এই সংখ্যাটিই এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। যদিও সেদিন টোল আদায় হয়েছিল ২ কোটি ৯ লাখ ৩১ হাজার ৫৫০ টাকা।
সেদিন যত গাড়ি পার হয়, তার মধ্যে বাইকের সংখ্যাই ছিল বেশি, সব মিলিয়ে ৪৬ হাজার। আর প্রথম দিন বিশৃঙ্খলার কারণে সেতু দিয়ে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়।