বাংলাদেশের আয়তন, জনসংখ্যা, সম্পদ, পরিবেশ ও আর্থ-সামাজিক বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে পরিকল্পিত পরিবার গঠনের বিকল্প নেই বলে মনে করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তাই সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোকেও এ ক্ষেত্রে আরও সক্রিয় দেখতে চান তিনি।
পরিকল্পিত ও প্রাণবন্ত মানবসম্পদ আগামী দিনের প্রাপ্তি আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দেশের অগ্রগতি ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পরিবার পরিকল্পনা, মা ও শিশুস্বাস্থ্য সেবার পরিধি এবং মান আরও বৃদ্ধি করা দরকার।’
বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উপলক্ষে আলাদা বাণীতে এসব কথা বলেছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী।
বিশ্বের অন্য দেশগুলোর সঙ্গে সোমবার বাংলাদেশেও পালিত হবে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস। এবার দিবসের প্রতিপাদ্য ‘৮০০ কোটির পৃথিবী: সবার সুযোগ, পছন্দ ও অধিকার নিশ্চিত করে প্রাণবন্ত ভবিষ্যৎ গড়ি।’
জনসংখ্যা বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো এবং পরিবেশ ও উন্নয়নের সম্পর্ক স্থাপনের লক্ষ্যে ১৯৯০ সাল থেকে জাতিসংঘ ও সদস্য দেশগুলো দিনটি পালন করে আসছে।
রাষ্ট্রপতির বাণীদিনটি উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। আয়তনের তুলনায় দেশের জনসংখ্যা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার সীমিত রাখতে পরিকল্পিত পরিবার গঠন অত্যন্ত জরুরি।
‘দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে হলে জনসংখ্যাকে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় রেখে বিদ্যমান সম্পদের টেকসই ও সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। জনসংখ্যাকে পরিণত করতে হবে জনসম্পদে।’
টেকসই উন্নয়নে পরিকল্পিত ও দক্ষ জনসম্পদের গুরুত্ব অপরিসীম বলেও মনে করেন রাষ্ট্রপতি।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের আয়তন, অবস্থান, জনসংখ্যা, প্রাকৃতিক সম্পদ, পরিবেশ ও আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে পরিকল্পিত পরিবার গঠনের বিকল্প নেই। সরকার বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পরিকল্পিত জনসংখ্যা গড়তে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। তাহলে দেশের টেকসই উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে সকলের সুযোগ, পছন্দ ও অধিকার নিশ্চিত হবে।’
তাই সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে আরও সক্রিয় ও আন্তরিকতার সঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে বলেও জানান রাষ্ট্রপতি।
প্রধানমন্ত্রীর বাণী‘জনসংখ্যা ও উন্নয়ন একে অপরের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো দেশের জনসংখ্যা আয়তনের তুলনায় বেশি হলে প্রতিটি সেক্টরে এর প্রভাব পড়বে। তাই একটি দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি টেকসই করতে হলে, সে দেশের জনসংখ্যা হতে হবে পরিকল্পিত।’
খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের মতো অন্যান্য মৌলিক অধিকার পূরণের পাশাপাশি সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গঠনে পরিকল্পিত জনসংখ্যা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে বলেও মনে করেন তিনি।
নিরাপদ মাতৃত্ব, কিশোর-কিশোরীর স্বাস্থ্য, নারী শিক্ষা ও নারী কর্মসংস্থানের জন্য নতুন নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘এসব উদ্যোগের ফলে মাতৃ ও শিশুমৃত্যু হার হ্রাস পেয়েছে এবং পরিকল্পিত পরিবারের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের অগ্রগতি ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পরিবার পরিকল্পনা, মা ও শিশুস্বাস্থ্য সেবার পরিধি এবং মান আরও বৃদ্ধি করা দরকার।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটি পরিকল্পিত ও প্রাণবন্ত মানবসম্পদ হোক আমাদের আগামী দিনের প্রাপ্তি। আসুন, আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে সবাই মিলে একটি অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তুলি।’