ঈদুল ফিতরে মানুষ নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরলেও এবার বাড়ির পথে যাত্রায় ভজকট লেগে গেলেও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জেনেছেন কোথাও কোথাও যান চলাচলে ধীরগতি হচ্ছে। তার দাবি, দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে সড়ক সচল রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।
ঢাকায় নিজের বাসভবনে শুক্রবার সকালে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
বৃহস্পতিবার বিকেল গড়াতেই রাজধানী থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে বাড়ি ফিরতে গিয়ে তীব্র ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষ। গত ঈদে ভোগান্তি না থাকলেও এবার বাসের টিকিটের জন্য হাপিত্যেস, নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি আদায়ের পাশাপাশি রাজধানী থেকে বের হতেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় লেগে যাচ্ছে।
উত্তরের পথে গাজীপুর, সাভারের দিকের পাশাপাশি দক্ষিণে এই মুহূর্তে প্রধান পথ বঙ্গবন্ধু মহাসড়কে উঠতেই তীব্র ভোগান্তি হচ্ছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট রুটের নারায়ণগঞ্জ অংশ পাড়ি দিতেই কয়েক ঘণ্টা সময় লেগে যাচ্ছে।
ধারণা করা হচ্ছে, মহাসড়কে মোটরসাইকেল নিষিদ্ধ ঈদযাত্রায় এই ভোগান্তির এক কারণ। চলতি বছর ঈদুল ফিতরে আনুমানিক ২০ লাখের মতো মানুষ মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফিরেছে। এবার সে সুযোগ না থাকায় সড়কের পাশাপাশি ট্রেনেও উপচে পড়া যাত্রী দেখা গেছে।
সড়কমন্ত্রী বলেন, ‘কোরবানির পশুবাহী গাড়ি ধীরে চলায় এবং পথের মধ্যে নষ্ট হওয়ায় কোথাও কোথাও যান চলাচল ধীরগতি হচ্ছে। এ জন্য ত্বরিত ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে গাড়ির চাকা সচল রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।
‘হাইওয়ে পুলিশ, জেলা পুলিশ, জেলা প্রশাসন, পরিবহন, মালিক, শ্রমিকসহ সবাইকে নিজ নিজ প্রয়াস জোরদারের মাধ্যম ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করারও আহ্বান জানাচ্ছি।’
মহাসড়কের পাশে থাকা পশুর হাটগুলো যাতে যান চলাচলে বাধা তৈরি করতে না পারে, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দেন তিনি।
ঢাকা ছেড়ে লাখো মানুষ বাড়ির পথ ধরেছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বহু মানুষ এবার গ্রামে যাওয়ার অভিযাত্রায় শামিল হয়েছে। যাত্রা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন রাখতে সাবধানতার সঙ্গে গাড়ি চালানোর জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা থেকে সবাইকে নিরাপদে থাকার পরামর্শ দিয়ে কাদের বলেন, ‘অনেকে রাস্তা ফ্রি পেয়ে ওভারস্পিডে গাড়ি চালান এবং রিস্কি ওভারটেকিং করেন। জীবনের প্রতি মায়া রেখে, জীবনের সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে মহাসড়কে নিয়ম মেনে যাতায়াত করার জন্য আবারও আমি আহ্বান জানাচ্ছি।’
জরুরি এবং রপ্তানি পণ্য ছাড়া ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ রাখার কথা আবারও স্মরণ করিয়ে দেন মন্ত্রী।
করোনাভাইরাস সংক্রমণকে ঈদযাত্রার বড় চ্যালেঞ্জ বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমাদের উদাসীনতা, স্বাস্থ্যবিধির প্রতি অবহেলা ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। বিশেষজ্ঞরা এই অভিমত ব্যক্ত করেছেন। তাই পরিবহনে, ঈদের ছুটিতে ও ফিরতি যাত্রায় মাস্ক পরিধান করুন, সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করুন।’