রাজধানীর সায়েদাবাদ জনপদের মোড় ও টার্মিনাল এলাকা থেকে কুমিল্লা ও ফেনীর যাত্রীদের কাছ থেকে লোকাল বাসে ভাড়া নেয়া হচ্ছে দ্বিগুণ থেকে তিন গুণ।
অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া হলে কঠোর ব্যবস্থা- এই ঘোষণার মধ্যে প্রকাশ্যেই এই কাজের মধ্যেও সব দেখেও নীরব ভূমিকা পালন করছে পুলিশ।
অভিযোগ আছে, লোকাল বাসে এই বেশি ভাড়া নেয়ার পর এখান থেকে পুলিশ ও নেতাদের কমিশন দিতে হয়। তাই ভাড়া বেশি।
সায়েদাবাদ জনপথের মোড় থেকে এন ট্রাভেলসের সুপারভাইজার রানা বলেন, ‘ফেনীর ভাড়া ৬০০। রাস্তায় যানজট, ভাড়া বেশি নিচ্ছি।’
এই কর্মীর দাবি, তাদের ভাড়া তাও কম। বলেন, ‘সায়েদাবাদ রেললাইনের পাশে যান। ওইখানে ফেনীর ভাড়া ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা নিচ্ছে।’ মা আল-তাবুক পরিবহনে করে ফেনী যাচ্ছেন মো. নয়ন।
তিনি বলেন বলেন, ‘স্টার লাইনে ফেনীর ভাড়া নেয় ৩৬০ টাকা। এটা অনেক ভালো মানের বাস। কিন্তু বাজে বাস হওয়ার পড়েও এরা ভাড়া নিচ্ছে ৬০০ টাকা। সামনে একটা লোকাল বাস গেল সেটায় ভাড়া নিছে ৭০০ টাকা। প্রতিবাদ করে কোনো লাভ নাই। তাই চুপচাপ যাচ্ছি।
‘সামনের গাড়িতে প্রতিবাদ করছিলাম। তখন গাড়ির লোক বলছে ৮ হাজার টাকা নাকি সার্ভিস চার্জ দিতে হয় এখানের পুলিশ আর নেতাদের।’
চেয়ার কোচের ভাড়া স্বাভাবিক সময়ে ৩৬০ টাকা। লোকাল বাসে কেন ৬০০ টাকা নিচ্ছেন- জানতে চাইলে মা আল-তাবুক বাসের চালক মো. আবুল বলেন, ‘এইখানে সবাই নিতাছে। তাই আমিও নিচ্ছি। আগের গাড়িতে ৭০০ টাকা করে নিছে। লাইন খরচ দিতে হচ্ছে।’
ঢাকার ভেতরে চলা ট্রান্সসিলভা পরিবহন এখন চলছে লক্ষ্মীপুর রুটে। এই বাসে যাচ্ছেন মো. সুমন। তিনি বলেন, ‘হিনো ৪০ সিটের গাড়িতে অন্য সময় ভাড়া নেয় ৪৫০ টাকা। একটু খারাপ গাড়িতে গেলে ৩৫০ টাকা। আজকে এই লোকাল বাসে ভাড়া নিচ্ছে ৮০০ টাকা। দেখেন বাসের চেহারা। সিটের কী বাজে অবস্থা! বাড়ি যেতে হবে তাই যাচ্ছি।’
ট্রান্সসিলভার বাসের চালক উজ্জ্বল মিয়া বলেন, ‘এটা তো লাইনের গাড়ি না। আমাদের ভাড়া করে আনছে, আমাদের দিবে ৬০০। আর সারজেন্ট, পুলিশ, টিআই, হাবিজাবি, নেতা- এগো বাকি টাকা দিবে।’
হিমালয় পরিবহনের সুপারভাইজার নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘কুমিল্লার ভাড়া এক দাম ৫০০ টাকা। গেলে আসেন। না গেলে থাকেন।’
তাসপিয়া ক্লাসিক পরিবহনের চালক মো. হানিফ বলেন, ‘সায়েদাবাদ থেকে কুমিল্লার ভাড়া ৫০০। এক দাম। আসার সময় খালি গাড়ি নিয়ে আসতে হয়। তাই ভাড়া বেশি নিচ্ছি।’
স্বাভাবিক সময়ে ঢাকা-কুমিল্লা রুটে বাসের মানভেদে ভাড়া ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা।
ঘটনাস্থলে কথা হয় এএসআই মো. নজরুলের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘৯৯৯-এ ফোন করে অভিযোগ দেয়। আমরা আসি। গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়ার ভয়ে যাত্রীরা কিছু বলে না। বিষয়টা হচ্ছে এ রকম, মানুষের বাড়ি যাওয়া লাগবে। আমাদের দেশের মানুষ যে যার জায়গা থেকে দুর্নীতি করতেছে।’