স্থানীয় দৈনিক কুষ্টিয়ার খবর পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এবং আমাদের নতুন সময় পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক হাসিবুর রহমান রুবেলের মাথার পেছন দিকে আঘাতের চিহ্ন ছিল বলছে সুরতহাল প্রতিবেদন।
নিখোঁজের পাঁচ দিন পর বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে ভাসমান অবস্থায় কুমারখালীর যদুবয়রার গড়াই নদ থেকে রুবেলের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেন নৌপুলিশের এসআই আব্দুর রাজ্জাক। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘মৃত্যুর কারণ বলতে পারব না, তবে মাথার পিছনের দিকে একটি আঘাতের চিহ্ন ছিল।’
এদিকে শুক্রবার রুবেলের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
ময়নাতদন্ত শেষে হাসিবুরের মরদেহ নেয়া হয় কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এলাকার নিজ বাসায়। এরপর নেয়া হয় পৌর গোরস্থানে। সেখানে জানাজা শেষে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে তাকে দাফন করা হয়।
শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে এই সাংবাদিকের মরদেহ ময়নাতদন্ত করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তিন সদস্যের চিকিৎসক দল। এই দলের প্রধান আশরাফুল আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে কী থাকছে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। ঈদের ছুটির পর ময়নাতদন্ত রিপোর্ট দেয়া হবে।’
কীভাবে তার মৃত্যু হয়েছে বা এটি হত্যাকাণ্ড ছিল কি না; এসব ব্যাপারে কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।
এদিকে বেলা পৌনে ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন সাংবাদিকরা। এ সময় রুবেল হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তারা।
ছেলেক হারিয়ে পাগলপ্রায় মা ফিরোজা আক্তার। কান্নায় মূর্ছা যাচ্ছেন বারবার। বিলাপ করতে করতে বলেন, ‘রুবেল যদি কারোর কোনো কিছু জেনে ফেলত, সে অন্য ক্ষতি করত। মেরেই ফেলবে কেন?
‘নিখোঁজ হওয়ার পর আল্লার কাছে বারবার চেয়েছি হাত কেটে, পা কেটে, চোখ তুলে হলেও আমার ছেলের জানটা যেন ফেরত দেয়।’
সাংবাদিক রুবেল জেলা রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি স্থানীয় দৈনিক কুষ্টিয়ার খবর পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এবং আমাদের নতুন সময় পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন। সাংবাদিকতার পাশাপাশি কুষ্টিয়া পৌর বাজারে কাঁচামালের আড়ত চালাতেন। এ ছাড়া অন্য ঠিকাদারের সঙ্গে যৌথভাবে বিএডিসিতে ঠিকাদারি ব্যবসাও করতেন তিনি।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মরদেহ পাওয়ার পর থেকেই পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। অভিযানও চালানো হয়েছে। শিগগির হত্যার রহস্যের জট খুলবে।’
মরদেহ দাফনের পর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা হবে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।