রাজধানীর যাত্রাবাড়ী মোড়ে ভোর থেকে মধ্যাঞ্চলগামী মানুষের উপচে পড়া ভিড়। বাড়ি যাওয়ার জন্য নেই পর্যাপ্ত বাস। আর এ সুযোগে ইচ্ছামতো ভাড়া হাঁকাচ্ছে বাসগুলো।
স্বাভাবিক সময়ে যাত্রাবাড়ী থেকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় যেতে লাগে ৮০ টাকা। ঈদযাত্রায় একই পথের জন্য যাত্রীদের গুনতে হচ্ছে ৩০০ টাকা।
অন্যদিকে যাত্রাবাড়ী থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত যেখানে ২৫০ টাকা ভাড়া, সেখানে এখন নেয়া হচ্ছে ৫০০ টাকা।
ঢাকায় চলাচলকারী বাসগুলো যাত্রাবাড়ী থেকে বাড়তি ভাড়ায় ঘরমুখো মানুষকে নিয়ে রওনা হচ্ছে গন্তব্যের উদ্দেশে।
অনাবিল পরিবহনের বাসে মাওয়া ঘাট পর্যন্ত যাত্রীপ্রতি ভাড়া নেয়া হয় ৩০০ টাকা। ওই বাসের যাত্রী মো. সোহান বলেন, ‘ভাই, বাড়ি যেতে হবে। এখন কী করব বলেন? তারা যেমনে ইচ্ছা ভাড়া নিচ্ছে। প্রতিবাদ করলে নিচ্ছে না; নামিয়ে দিচ্ছে। মানুষ কোনো উপায় না পেয়ে তাদের ভাড়াতেই যাচ্ছে।’
অনাবিল পরিবহনের সুপারভাইজার মো. আকাশ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মাওয়ার ভাড়া ৩০০ নিচ্ছি।’
‘ভাড়া তো ৮০ টাকা। তাহলে কেন এত বেশি ভাড়া নিচ্ছেন?’
উল্লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কেন বেশি নিচ্ছি গেলে বুঝতে পারবেন। গেলে চলেন; না হলে থাকেন।’
ট্রান্স সিলভা পরিবহনের বাস যাচ্ছে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত। রাজধানীতে চলা এ বাসে ভাড়া নেয়া হচ্ছে ৫০০ টাকা।
ওই বাসের যাত্রী মো. এমদাদুল বলেন, ‘ভাই, বাইক বন্ধ করে মানুষের ভোগ বাড়াইছে। আমাদের এই দুর্ভোগ দেখার কেউ নাই। পরিবহনের লোক কোনো দিন যাত্রীদের দুর্ভোগ দেখে নাই আর দেখবেও না।
‘সরকার তাদের খেদমত করে। আর আমরা পচে মরি। যেমনে খুশি ভাড়া নিচ্ছে। কই সরকারের পক্ষ থেকে কেউ তো কিছু বলে না।’
ভাড়া জানতে চাইলে ট্রান্স সিলভা পরিবহনের সুপারভাইজার কিসমত আলী বলেন, ‘ভাঙ্গার ভাড়া ৫০০। গেলে বসেন; না গেলে গাড়ি থেকে নামেন।’
সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে কেন দ্বিগুণ ভাড়া নেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঈদের বাজার, বড় ভাই। কিচ্ছু করার নাই বড় ভাই।’
যাত্রাবাড়ী মোড়ে আপন পরিবহনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না। এ বিষয়ে টিকিট বিক্রেতা রাশেদ রায়হান বলেন, ‘আমাদের গাড়িতে টিকিট নাই। ঈদযাত্রার আগে ঢাকা থেকে মাওয়া ঘাট নিত ৮০ টাকা। ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ভাড়া নিত ২৫০ টাকা।’
এখন গাড়িগুলো কেন বেশি নিচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ভাই, মানুষের দরকার বাড়ি যাওয়া। যে যেমনে পারতেছে যাচ্ছে। ঢাকার লোকাল বাসগুলো ভাড়া যেমনে পারতেছে নিচ্ছে।’
বাড়তি ভাড়ার বিষয়ে জানতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহকে কল করেও পাওয়া যায়নি।