বিএম কনটেইনার ডিপোর জন্য প্রয়োজনীয় ২৫টি সংস্থারই হালনাগাদ লাইসেন্স ও ছাড়পত্র আছে বলে দাবি করেছে কর্তৃপক্ষ।
বিস্ফোরণের ঘটনায় মালিকপক্ষসহ তদারকি সংস্থাকে দায়ী করে প্রতিবেদন জমা পড়ার এক দিন পর এই দাবি করা হলো।
নগরীর লালখান বাজার এলাকার একটি রেস্টুরেন্টে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বৃহস্পতিবার বিকেলে এই দাবি করেন দেশে ডিপোর মালিকায় থাকা স্মার্ট গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক মেজর (অব.) শামসুল হায়দার সিদ্দিকী।
সীতাকুণ্ডে ওই ডিপোতে গত ৪ জুন রাতে আগুন লাগে। কনটেইনারে থাকা রাসায়নিক পদার্থের কারণে দফায় দফায় বিস্ফোরণে বাড়ে আগুনের ভয়াবহতা।
৮৭ ঘণ্টা পর ডিপোর আগুন নেভে। আগুন ও বিস্ফোরণের ঘটনার প্রথম দুই দিনে ৪১টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান চারজন। বুধবার পর্যন্ত দেহাবশেষ পাওয়া গেছে ছয়জনের। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত নিহত ৫১ জন।
এ ঘটনায় গঠিত বিভাগীয় প্রশাসনের তদন্ত কমিটি বুধবার প্রতিবেদন জমা দেয়। সেদিন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ও তদন্ত কমিটির প্রধান মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা ডিপো কর্তৃপক্ষসহ সব সরকারি তদারকি সংস্থার দায় পেয়েছি। আগুন লাগার কারণও আমরা আইডেন্টিফাই করেছি। ডিপোগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা ২০টি সুপারিশ করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আইএমডিজি কোডের সঙ্গে মিলিয়ে বিপজ্জনক কার্গোব্যাগ মেইনটেইন চুক্তিটি সংশোধনের সুপারিশ করেছি, বন্দরের নেতৃত্বে যে মনিটরিং কমিটি আছে, সেটাকে আরও সক্রিয় করার কথা বলেছি, অফডক প্রতিষ্ঠার জন্য যে ২৫টি দপ্তরের সনদ লাগে, সেগুলো এক জায়গায় আনার সুপারিশ করেছি।’
আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা লজিক্যাল সিকোয়েন্স অনুযায়ী ব্যাখ্যা করে আমাদের মতামত দিয়েছি। এটা এভাবে বললে বিভ্রান্তি তৈরি হবে। তবে বিস্ফোরণের পেছনে মালিক, সরকারি তদারকি সংস্থা ও শিপিং লাইনের দায় পেয়েছি আমরা।’তবে স্মার্ট গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক মেজর (অব.) শামসুল হায়দার সিদ্দিকী লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘২০১০ সালে দেশি-বিদেশি প্রায় ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে বিএম ডিপো প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর ২৫টি সংস্থারই লাইসেন্স ও ছাড়পত্র নিয়ে কমপ্লায়েন্স মেনে ডিপোর অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছিল। সব প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স ও ছাড়পত্র হালনাগাদ রয়েছে। সব ধরনের লাইসেন্স ও ছাড়পত্রের কপি সরকারি সব তদন্ত কমিটিকে দেয়া হয়েছে।’
অগ্নিকাণ্ডে হাজার কোটি টাকার মতো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘শতাধিক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বিএম ডিপোর কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়েছে। ইতোমধ্যে ডিপোতে অক্ষত থাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মূল্যবান আমদানি-রপ্তানি পণ্য খালাসের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিহত ২৬ জন ও আহত ৪৩ জনের পরিবারকে ৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকা সহায়তা দেয়া হয়েছে। দুর্ঘটনার পর প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৬০০ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে মে ও জুন মাসের বেতন ও কোরবানির বোনাস দেয়া হয়েছে। নিহত-আহতদের বাড়িতে, বাসায় বেতন-ভাতা ও বোনাসের টাকা পৌঁছে দেয়া হয়েছে।’
ওই সময় বিএম ডিপোর মহাব্যবস্থাপক মাইনুল আহসান, পরিচালক শফিকুর রহমান, ইয়াসিন মজুমদারসহ উপস্থিত ছিলেন আরও অনেকে।