বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অবশেষে লঞ্চে ভিড়

  •    
  • ৭ জুলাই, ২০২২ ২০:৩৯

সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে বৃহস্পতিবার সকালেও দেখা যায়, যাত্রীর চাপ কম থাকায় অনেকটা আরামদায়কভাবে বাড়ি ফিরছেন যাত্রীরা। তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাড়তে থাকে যাত্রীর চাপ। সন্ধ্যায় জনারণ্যে পরিণত হয় রাজধানীর প্রধান নদীবন্দর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল।

রাজধানীর সদরঘাটে ঈদযাত্রার সেই চিরচেনা রূপ ফিরেছে আবার। লঞ্চের টিকিট পেতে দৌড়ঝাঁপ-ধাক্কাধাক্কি, ডেকে জায়গা দখলের প্রতিযোগিতা দেখা গেছে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়। বেশ কয়েক দিনের যাত্রী খরার পর বৃহস্পতিবার অফিস ছুটির পর দক্ষিণাঞ্চলের লঞ্চযাত্রীদের ভিড়ে সদরঘাট ধারণ করে অন্যরূপ।

পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর বদলে যায় লঞ্চঘাটের চিত্র। ফলে ফাঁকা কেবিন আর কম যাত্রী নিয়েই ঢাকা ছাড়ছিল দক্ষিণের লঞ্চগুলো। ঈদযাত্রা শুরুর কয়েক দিনে সেই চেহারা বদলায়নি। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে বৃহস্পতিবার সকালেও দেখা যায়, যাত্রীর চাপ কম থাকায় অনেকটা আরামদায়কভাবে বাড়ি ফিরছেন যাত্রীরা। তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাড়তে থাকে যাত্রীর চাপ। সন্ধ্যায় জনারণ্যে পরিণত হয় রাজধানীর প্রধান নদীবন্দর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল।

আসন্ন ঈদুল আজহার ছুটিতে দক্ষিণাঞ্চলের বাড়িতে ফেরা হাজার হাজার যাত্রী নিয়ে লঞ্চগুলো ছাড়তে শুরু করে। শুক্রবারসহ ঈদের আগে ও পরের দিনগুলোতে যাত্রীর এমন চাপ অব্যাহত থাকবে বলে মনে করছেন লঞ্চমালিকরা। যাত্রীদের এ চাপ সামাল দিতে ঢাকা-বরিশাল রুটে থাকছে স্পেশাল সার্ভিস। নির্ধারিত ট্রিপের অতিরিক্ত হিসেবে শুক্রবার ভোর ৬টায় ঢাকা থেকে বরিশালের উদ্দেশ্য ছেড়ে যাবে সুরভী-৮।

লঞ্চ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত বিলাসবহুল ১০টি বড় লঞ্চ যাত্রী নিয়ে বরিশাল যাবে।

লঞ্চঘাটে মূলত বৃহস্পতিবার বিকেল ঘনিয়ে সন্ধ্যা নামার মুহূর্তে যাত্রীর চাপ বাড়তে থাকে। যাত্রীদের বেশির ভাগই বরিশালগামী লঞ্চে ভিড় করছেন। পটুয়াখালী, বগা, ইলিশা রুটের যাত্রীরাও আসতে শুরু করেছেন।

একাধিক লঞ্চের সুপারভাইজার ও টিকিট কাউন্টার থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, লঞ্চগুলোতে ডেকের যাত্রীসংখ্যাই বেশি ৷ নিম্ন ও মধ্যম আয়ের পরিবারগুলো লঞ্চে বাড়ি যাচ্ছে বেশি। সড়কপথের চেয়ে তুলনামূলক ভাড়া কম ও যাত্রাপথ আরামদায়ক হওয়াতেই যাত্রীদের এমন চাপ। শেষ মুহূর্তে টিকিট বিক্রির চাপে লঞ্চসংশ্লিষ্ট কেউ কথা বলারই সময় পাচ্ছেন না।

মানামি লঞ্চের চালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এবারের ঈদে আজকেই সবচেয়ে বেশি যাত্রী হয়েছে। তবে গত ঈদের মতো যাত্রী এখনও দেখছি না। আশা করছি ভালোভাবে বরিশাল পৌঁছাতে পারব।’

ঈদ যাত্রায় সদরঘাটে লঞ্চ ধরতে যাত্রীদের ভিড়। ছবি: নিউজবাংলা

রাজধানীর মিরপুরের বাসিন্দা মো. আনোয়ার পরিবার নিয়ে পটুয়াখালীর গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘এমভি এ আর খান লঞ্চের টিকিট পেয়েছি। তবে ঘাটে অনেক মানুষের ভিড়। লঞ্চে ঠিকভাবে উঠতে পারলেই হয়। একা হলে সমস্যা ছিল না, পরিবার নিয়ে এত ভিড়ের মধ্যে লঞ্চে উঠতে অনেক কষ্ট।’

এমভি পূবালী-১ লঞ্চে করে রাজধানীর বসিলার বাসিন্দা সোহেল রানা বরগুনায় গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘ঘাটে ভিড় এবং যাত্রী বেশি থাকলেও সময়মতো লঞ্চ ছেড়ে যাচ্ছে। আর ভিড় ঠেলে লঞ্চে উঠতে পেরে অনেক ভালো লাগছে।’

অন্যদিকে ভিড়ের কারণে অনেকে আবার নির্ধারিত লঞ্চে উঠতে পারেননি। তাই পরবর্তী লঞ্চের জন্য টার্মিনালে অপেক্ষা করছেন। পরিবার নিয়ে এই অপেক্ষাটা অনেকের জন্য ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ভোলার চরফ্যাশন অভিমুখী এমভি কর্ণফুলী-১২ লঞ্চের যাত্রী ছিলেন সজীব হোসেন। কিন্তু অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে লঞ্চে উঠতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘ঘাটে প্রচুর যাত্রীর চাপ। লঞ্চে টিকিট কেটেও উঠতে পারলাম না। এখন পরের লঞ্চের জন্য অপেক্ষা করছি। এখনও যে ভিড় তাতে সেটিতেও উঠতে পারব কি না সন্দেহ।’

তবে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় থাকলেও পর্যাপ্তসংখ্যক লঞ্চ যাত্রার জন্য তৈরি আছে বলে জানায় বিআইডব্লিউটিএ।

বিআইডব্লিউটিএ সদরঘাটের নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম-পরিচালক মো. শহীদ উল্যাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঈদযাত্রার জন্য ১৫০টির বেশি লঞ্চ প্রস্তুত আছে। বিকেলে ৫০টি লঞ্চ বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে গেছে। আর ৭০টি লঞ্চ প্রস্তুত আছে যাত্রী নিতে। ভিড় থাকলেও যাত্রীদের জন্য লঞ্চ সংকট হবে না।’

সদরঘাট নৌপুলিশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কায়ুম আলী সরদার বলেন, ‘যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি। ঈদযাত্রায় জননিরাপত্তার কোনো ঘাটতি যেন না থাকে সেদিকে আমাদের নজর আছে। অপরাধীরা মানুষের ভিড় দেখে যেন কোনো ধরনের অপরাধ না করতে পারে সেদিকে আমাদের কঠোর নজরদারি আছে।’

এ বিভাগের আরো খবর