বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

লজ্জা থাকলে বিএনপি লোডশেডিং নিয়ে কথা বলত না: কাদের

  •    
  • ৭ জুলাই, ২০২২ ১৬:৩২

‘বিএনপির শাসনামলে জনগণকে বিদ্যুতের পরিবর্তে খাম্বা এবং পুলিশের গুলিতে লাশ উপহার দিয়েছিল। সেই বিএনপি নেতারা যখন বিদ্যুৎ নিয়ে কথা বলে, তখন তাদের শাসনামলের ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের সেই দুঃসময়ের কথা মনে পড়ে।’

সারা বিশ্বেই এখন বিদ্যুতের সংকট জানিয়ে এ নিয়ে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বিএনপি শাসনামলে বিদ্যুতের কী পরিস্থিতি ছিল, সেটিও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘লজ্জা থাকলে বিএনপি লোডশেডিং নিয়ে কথা বলত না।’

বৃহস্পতিবার রাজধানীর রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের অন্তর্ভুক্ত নবগঠিত ৭৫টি ইউনিট কমিটির পরিচিতি সভায় তিনি এ কথা বলেন।বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে জনগণকে ধৈর্য ধরার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেছেন, ‘সারা বিশ্বেই এখন বিদ্যুতের সংকট।’

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির শাসনামলে জনগণকে বিদ্যুতের পরিবর্তে খাম্বা এবং পুলিশের গুলিতে লাশ উপহার দিয়েছিল। সেই বিএনপি নেতারা যখন বিদ্যুৎ নিয়ে কথা বলে, তখন তাদের শাসনামলের ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের সেই দুঃসময়ের কথা মনে পড়ে। বিএনপি নেতাদের যদি লজ্জা-শরম থাকত, তাহলে তারা লোডশেডিং নিয়ে কথা বলত না।’

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর বিদ্যুৎ খাতকে অগ্রাধিকার নিয়ে কাজ করেছে। এই সময়ে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি নানা প্রকল্পের সুফলও পেয়েছে দেশ। এক যুগে বিদ্যুতের উৎপাদনক্ষমতা ছয় গুণের বেশি বেড়েছে, উৎপাদনও বেড়েছে চার গুণের বেশি। বিদ্যুতের আরও কয়েকটি বড় প্রকল্প উৎপাদনে আসার অপেক্ষায়।

বিদ্যুৎ খাত নিয়ে বরাবর গর্ব করে থাকেন আওয়ামী লীগ নেতারা। তবে গত এক বছরে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল ও গ্যাসের ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধির পর দেশে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সমস্যা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সরকারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে তরল গ্যাস বা এলএনজি আপাতত আমদানি করা হবে না। গ্যাসের ঘাটতিজনিত উৎপাদনের যে সংকট সেটি সমাধান করা হবে লোডশেডিংয়ের মাধ্যমে। দেশে এখন দুই হাজার মেগাওয়াট ঘাটতি আছে।

বিদ্যুৎ বিভাগ গত কয়েক বছরে লোডশেডিং শব্দটা ব্যবহার করত না। তারাই এখন লোডশেডিংয়ের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছে। দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আর না কেনার কথা জানিয়েছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এ জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হবে জানিয়ে তিনি দুঃখও প্রকাশ করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদ্যুৎ পরিস্থিতির এই কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ আমরা সবার ঘরে পৌঁছে দিয়েছিলাম এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সবাই পাচ্ছিল। কিন্তু এখন আন্তর্জাতিক বাজারে বিদ্যুৎ উৎপাদনের যে উপকরণগুলো, সেগুলোর দাম অত্যধিক বৃদ্ধি পেয়ে গেছে। যেমন ডিজেলের দাম বেড়েছে, তেলের দাম বেড়েছে, এলএনজির দামসহ সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। কয়লা এখন প্রায় পাওয়াই যায় না।’

বিদ্যুতের এই যাওয়া-আসা শুরুর পর বিএনপি সরকারকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করছে। তারা বলছে, দুর্নীতির কারণে বিদ্যুতের এই পরিস্থিতি। দেশে বিদ্যুৎ পরিস্থিতির আসলে যে কোনো উন্নয়ন হয়নি, এখন তার প্রমাণ মিলছে।

দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘প্রচণ্ড লোডশেডিং হচ্ছে- এটা ভয়াবহ। সরকারের শতভাগ বিদ্যুতের যে কথা, আজকের এই অবস্থা (লোডশেডিং) প্রমাণ করে যে আমরা যে কথাগুলো বলে আসছি, সেগুলো বাকসর্বস্ব কথা। এগুলো (কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট) করার আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে দুর্নীতি করা, এসব করে নিজেদের পকেট ভারী করা, বিদেশে গিয়ে বাড়িঘর তৈরি করা।’

দলের আরেক মুখপাত্র রুহুল কবির বিজভী বলেছেন, ‘উন্নয়নের এত যে ঢাকঢোল বাজানো হলো, তাহলে সারা দেশে লোডশেডিংয়ে দুর্বিষহ পরিস্থিতি কেন?’

২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি শাসনামলে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি ছিল নাজুক। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি ও তার জোটের বড় পরাজয়ের পেছনে যেসব কারণ কাজ করেছে, তার মধ্যে অন্যতম ছিল বিদ্যুৎ খাত নিয়ে ব্যর্থতা।

এই পাঁচ বছরে বিএনপি সরকার একটিও নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র করতে পারেনি, উল্টো এর আগে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন কার্যাদেশ বাতিল করেছে। বিদ্যুতের দাবিতে এখানে সেখানে বিক্ষোভ সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খেয়েছে সেই সরকার। এমনকি বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলিও হয়েছে।

সড়ক মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত বিদ্যুৎ নিয়ে কথা বলে কোনো মুখে? তাদের কি বড় কথা বলার কিছু আছে? মনে আছে ফখরুল সাহেব আপনাদের সময় ঘণ্টায় ঘণ্টায় লোডশেডিং, দিনের পর দিন লোডশেডিং। আপনাদের লজ্জা যদি থাকত লোডশেডিং নিয়ে কথা বলতেন না।’

ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জ্বালানি সরবরাহজনিত সমস্যার কারণে এখন উন্নত বিশ্বেও বিদ্যুৎ সংকট দেখা দিয়েছে বলেও জানান ওবায়দুল কাদের। সেই তুলনায় বাংলাদেশের পরিস্থিতি অনেক ভালো বলে মনে করেন তিনি।

আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘শেখ হাসিনার মতো সৎ ও দক্ষ নেতা ক্ষমতায় আছেন বলেই বাংলাদেশ এখনও বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিশ্ব অর্থনীতিতে ভারসাম্য বজায় রেখেছে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে পরিচিতি সভায় আরও বক্তব্য রাখেন দলেরর সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রাজ্জাক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।

এ বিভাগের আরো খবর