ঈদযাত্রার তৃতীয় দিন বৃহস্পতিবার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ভিড় বেড়েছে ঘরমুখো মানুষের। পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপনে বাড়ি যেতে উদগ্রিব তারা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেক মানুষকে ট্রেনের ছাদে উঠে বসতে দেখা গেছে।
স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকেই প্রচুর মানুষের সমাগম, তবে গত ঈদের তুলনায় ভিড় তুলনামূলক কম।
এর আগের বিভিন্ন ঈদযাত্রার সময় দেখা যায়, ট্রেনে পা ফেলার জায়গা থাকছে না, কিন্তু এবার বেশ ফাঁকাই ছিল বগিগুলো।
সকালে নীলসাগর এক্সপ্রেস কমলাপুর স্টেশন ছাড়ার আগে ৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ছিল। ওই সময় দেখা যায়, ট্রেনের ভেতরে ফাঁকা থাকলেও টিকিট নেই এমন মানুষজন চেপে বসেছেন ছাদে। জটলা বেঁধে একে অন্যের হাত ধরে টেনে তুলছেন। নিচে থেকে ঠেলে তুলে দিচ্ছেন অনেকেই।
ওই ট্রেনের ছাদে ওঠার চেষ্টায় ছিলেন নজরুল নামের এক ব্যক্তি। এমন সময় নিউজবাংলার সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, ঢাকায় দিনমজুর হিসেবে কাজ করেন তিনি। টিকিট নেই। তাই ছাদে চড়ে যাবেন বাড়িতে।
বাড়ি কোথায়, জীবনের ঝুঁকি রয়েছে জেনেও কেন ছাদে উঠে যাবেন, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল তার কাছে। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি আর কথা বলেননি।
আরও অনেকের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে নিউজবাংলা, তবে কেউই সংবাদমাধ্যমের পরিচয় পেয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক মাসুদ সারওয়ার বলেন, ‘ঈদযাত্রায় ঘরমুখো মানুষের যে স্রোত, চাইলেও ছাদে ভ্রমণ বন্ধ করা যায় না অনেক সময়।’
এদিকে আগের কয়েক দিন কমলাপুর স্টেশন থেকে ফাঁকা আসন নিয়ে ট্রেন ছেড়ে যেতে দেখা যায়। কারণ অনেক যাত্রীই এয়ারপোর্ট স্টেশন থেকে উঠবেন।
বৃহস্পতিবার ফাঁকা সিট নিয়ে ট্রেন ছেড়ে যেতে দেখা যায়নি খুব একটা। যাদের টিকিট নেই বা স্ট্যান্ডিং টিকিট আছে, তারা ফাঁকা আসনগুলোতে চেপে বসেছেন।
ঈদ শেষে ট্রেনের ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হয় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে। ফিরতি টিকিটের জন্য খুব বেশি লাইন দেখা যায়নি স্টেশন কাউন্টারে, তবে দীর্ঘ লাইন ছিল কমিউটার ট্রেনের কাউন্টারে।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যে স্টেশন থেকে যাত্রা, সেই স্টেশন থেকেই দেয়া হবে ফিরতি টিকিট।
বৃহস্পতিবার সকালে স্টেশন থেকে বেশিরভাগ ট্রেনই ছেড়ে যায় নির্ধারিত সময়ে, তবে কয়েকটি ট্রেন কিছুটা দেরিতে ছেড়েছে। সেটাও ১৫ বা ২০ মিনিটের বেশি নয়।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন কর্তৃপক্ষ বলছে, এটা তেমন কোনো দেরি নয়। স্বাভাবিক সময়েও যাত্রী ওঠানামা ও ত্রুটি-বিচ্যুতি আছে কি না, তা পরীক্ষা করতে এতটুকু সময় লেগেই যায়।
আর ট্রেনে ঈদযাত্রায় যানজটের ভোগান্তি নেই বলে স্বস্তি প্রকাশ করেন যাত্রীরা।