পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলমুখী যাত্রীরা বাসের টিকিট কিনতে গাবতলীর পরিবর্তে বেশিসংখ্যক যাচ্ছেন গুলিস্তান ও সায়েদাবাদে। ঈদযাত্রায় তাই গাবতলীতে এই অঞ্চলের যাত্রীরা সহজেই পাচ্ছেন বাড়ি ফেরার টিকিট, তবে বেগ পেতে হচ্ছে উত্তরাঞ্চলের যাত্রীদের।
পদ্মা সেতুর পর আরিচা ঘাটের ব্যবহারও ব্যাপকহারে কমে গেছে।
বৃহস্পতিবার সকালে গাবতলী বাস টার্মিনাল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এখানে উত্তরাঞ্চলের যাত্রীদের ভিড় রয়েছে। এদিকে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের ডেকে ডেকে টিকিট বিক্রি করছেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরা।
সার্বিক পরিবহনের গোপালগঞ্জের যাত্রী নুরুল আমিন বলেন, ‘বাসা গাবতলী হওয়ায় আরিচা হয়ে যাচ্ছি। আর খুব সহজে টিকিট পেয়ে গেলাম তাই আর মাওয়া হয়ে গেলাম না। শুনলাম গুলিস্তান ও সায়েদাবাদে জ্যাম। তাই এই দিক দিয়ে চলে যাচ্ছি।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বাস সুমন ডিলাক্সের টিকিট বিক্রেতা আখিল আলী বলেন, ‘সকাল থেকে ডেকে ডেকে টিকিট বিক্রি করছি। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বাসে গাবতলীতে চাপ কম। এই এলাকার মানুষ এবার পদ্মা সেতু দিয়ে বাড়ি যাচ্ছে, তবে উত্তরাঞ্চলের গাড়িতে ভালোই চাপ আছে।
দক্ষিণাঞ্চলের গোল্ডেন লাইন পরিবহনের টিকিট বিক্রেতা হাবিবুর রহমান বলেন, এই যে দেখেন কত সিট ফাঁকা। যাত্রীরা আসলেই টিকিট পাবেন। পদ্মা সেতু হওয়ার পর দক্ষিণের যাত্রীদের দিন বদলাইছে।’
কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে উত্তরাঞ্চলের যাত্রীদের, তবে কোনো না কোনোভাবে বাড়ি ফেরার টিকিট তারা পাচ্ছেন।’
উত্তরাঞ্চলগামী হানিফ পরিবহনের টিকিট বিক্রেতা দুলাল ঘোষ বলেন, ‘আমাদের টিকিট অনলাইনে বিক্রি হয় বেশি এখন। ঈদে সবাই অগ্রিম টিকিট নিয়ে রেখেছে। আমার কাউন্টারে আর টিকিট নাই। তবে অন্য বাসে যেতে পারবে।’
টিআর ট্রাভেলসে করে বগুড়ার যাত্রী আহসান হাবীব বাড়ি যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘সকালে এসে শ্যামলী ও হানিফে টিকিট পাই নাই। খুব টেনশনে পড়ে গেছিলাম। পরে টিআর ট্রাভেলসে টিকিট পাই। উত্তরাঞ্চলের টিকিট পেতে একটু কষ্ট হলেও পাওয়া যাচ্ছে।’
অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয়ে গেলেও উত্তরাঞ্চলের মানুষ কিভাবে বাড়ি যাচ্ছেন এর ব্যাখ্যা দিলেন শ্যামলী পরিবহনের টিকিট বিক্রেতা রিপন ঘোষ।
তিনি বলেন, ‘উত্তরাঞ্চলের বেশির ভাগ গাড়ির টিকিট অগ্রিম বিক্রি হয়ে গেছে। তবে টিকিট এখনও পাওয়া যাচ্ছেন। এদিকে পরিবহনের অনেকে নিজ দায়িত্বে গাড়ি ভাড়া করে একটু বেশি ভাড়া আদায় করে যাত্রীদের নিয়ে যাচ্ছেন। এ ছাড়া লোকাল বাস থেকে শুরু করে কত রকমের পরিবহন আছে। বাড়ি যাওয়া কারো থেমে থাকছে না।’
আইনশৃঙ্খলা ও যান চলাচল স্বাভাবিক
গাবতলী পুলিশ কন্ট্রোল রুমের এএসআই মো. এমরান হোসেন বলেন, ‘সকাল থেকে ডিউটিতে আছি। এখন পর্যন্ত কোনো ঝামেলা হয়নি। পুলিশের পাশাপাশি অন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরাও আছেন। ঈদযাত্রায় এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রিয়কর ঘটনা ঘটেনি গাবতলীতে।’
ট্রাফিক পুলিশ আব্দুল হামিদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সকাল থেকে গাবতলীতে কোনো যানজট নেই। সুন্দর মতো গাড়ি যাচ্ছে আর আসছে। পদ্মা সেতুর কারণে গাবতলীতে চাপ কমেছে এবার। এদিক দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ কম যাচ্ছে, তাই চাপ কম।'