দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ২০২০ সাল থেকে কম খরচে কোরবানির পশু পরিবহনের জন্য ক্যাটল স্পেশাল নামে বিশেষ ট্রেন চালুর উদ্যোগ নেয় রেলওয়ে। তারই অংশ হিসেবে এবারের ঈদের জন্য বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় জামালপুরের ইসলামপুর থেকে ২৫টি ওয়াগনে ৪০০টি গরু নিয়ে ক্যাটল স্পেশালের প্রথম ট্রেন রওনা হয়েছে ঢাকার উদ্দেশে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ট্রেনে পশু পরিবহনে খরচ কমার পাশাপাশি এড়ানো যাবে ভোগান্তিও। এ ছাড়া এই পরিবহনে দুর্ঘটনার ঝুঁকিও কম।
গরু ব্যবসায়ী আশরাফ আলী খান বলেন, ‘অনেক দিন বন্ধ থাকার পর এই সেবা আবার চালু হয়েছে। আমরা এতে খুব খুশি। আগে আমাদের খুব কষ্ট হতো। এক ট্রাক গরু ঢাকা নিয়ে গেলে খরচ পড়ত ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা। এখন ৮ হাজার টাকায় ১৬টি গরু এক ওয়াগনে আরামে নিয়ে যাচ্ছি। এর চেয়ে শান্তি আর কী আছে?’
আরেক ব্যবসায়ী মুন্নাফ বলেন, ‘আগে রাস্তাঘাট দিয়ে গরু নিয়ে গেলে হাজার জায়গায় চাঁদা দেয়া লাগত। এ ছাড়া রাস্তার ঝাঁকুনিতে গরুর অবস্থাও কাহিল হয়ে যেত। ট্রেনে গেলে কোনো ঝামেলা নেই। গরু আরামে ঘুমায়ে ঘুমায়ে ঢাকা চলে যাচ্ছে।’
তবে এমন পরিবহন ব্যবস্থা চালু রাখার পাশাপাশি অবিক্রীত গরু ফিরিয়ে আনার জন্য ঢাকা থেকেও ক্যাটল স্পেশাল ট্রেন চালুর দাবি জানিয়েছেন গরু ব্যবসায়ীরা।
গরু ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মনে করেন একটা ওয়াগনে আমরা ১৬টি গরু নিয়ে ঢাকা যাই। কারও কারও সব গরুই তো আর বেচা হয় না। এই গরুগুলো ফেরত আনতে গেলে আবার ওই ট্রাক ভাড়া করে আনতে হয়। এতে কষ্ট ও খরচ দুটিই থেকে যায়।’
শুকুর আলী জানান, গত বছর অনেক ব্যবসায়ীকেই ট্রাকে করে তাদের অবিক্রীত গরু ফেরত আনতে হয়েছে। এ অবস্থায় গরু ফেরত নেয়ার বিষয়ে সরকারকে সিদ্ধান্ত নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
ইসলামপুর রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার শাহীন মিয়া জানান, ক্যাটল স্পেশাল ট্রেনে ভালো সাড়া পাওয়া গেছে। এমন পরিবহন ব্যবস্থা চালু রাখার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা হবে।
এ ছাড়া রাজধানী ঢাকা থেকে ক্যাটল স্পেশালের ফিরতি ট্রেনের জন্য যাত্রীদের আবেদন করতে হবে। পরে কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও জানান তিনি।
জামালপুরের ইসলামপুর থেকে ক্যাটল স্পেশালের দ্বিতীয় ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে রাত ১০টায় ছেড়ে গেছে।