বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বামপন্থিদের কথা শুনলে বিদ্যুতের এই দশা হতো না: সিপিবি

  •    
  • ৬ জুলাই, ২০২২ ২১:২৮

‘জ্বালানি খাতকে আমদানিনির্ভর করাসহ ভুলনীতি ও দুর্নীতি পরিত্যাগ করে দেশের দেশপ্রেমিক বিশেষজ্ঞদের, বামপন্থিদের কথা শুনে জ্বালানি খাত অগ্রসর করলে আজ এই পরিস্থিতি হতো না। জ্বালানি খাতকে আমদানি নির্ভর করে সংকট তৈরিসহ সরকারের এই ভুলনীতি ও দুর্নীতির দায় সাধারণ মানুষ নেবে না।’

আন্তর্জাতিক বাজারে তেল-গ্যাসের বাড়তি দামের কারণে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে লোডশেডিং করার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে বামপন্থি দল বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি। তারা বলছে, বিদ্যুৎ নিয়ে সরকারের নীতি ছিল ভুল। এ কারণে এই দশা তৈরি হয়েছে। বামপন্থিদের কথা শুনলে এটা হতো না।

সিপিবি সভাপতি শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বুধবার এক বিবৃতিতে এই দাবি জানান।

গত এক দশকে দেশে বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক উন্নতির পর দেশের শতভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। গত কয়েক বছরে লোডশেডিং শব্দটিও সরকার ব্যবহার করত না। কোথাও কোথাও বিদ্যুতের যাওয়া আসাকে সরবরাহ লাইনের বিভ্রাট হিসেবে বলা হতো। সেই সমস্যা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা চলছে বলেও জানানো হয়েছে।

কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে তরল গ্যাস ও এলএনজির দাম এক বছরে ১০ গুণ হয়ে যাওয়ার পর স্পট মার্কেট থেকে আর গ্যাস না কেনার সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদনে। গ্যাস সংকটের কারণেই ঘাটতি প্রায় দুই হাজার মেগাওয়াট। পরিকল্পিত লোডশেডিং করেই পরিস্থিতি সামাল দিতে চাইছে সরকার।

তবে লোডশেডিংয়ের সিদ্ধান্তে ক্ষোভ ও উদ্বেগ জানিয়ে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছে সিপিবি।

বিবৃতিতে নেতারা বলেন, ‘সরকারের ভুলনীতি ও দুর্নীতির কারণে বিদ্যুতের গল্প আজ গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভর্তুকির নামে প্রতিদিন জনগণের করের কোটি কোটি টাকা অপচয় করেও বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সরকার ব্যর্থ হচ্ছে। অথচ জ্বালানি খাতকে আমদানিনির্ভর করাসহ ভুলনীতি ও দুর্নীতি পরিত্যাগ করে দেশের দেশপ্রেমিক বিশেষজ্ঞদের, বামপন্থিদের কথা শুনে জ্বালানি খাত অগ্রসর করলে আজ এই পরিস্থিতি হতো না। জ্বালানি খাতকে আমদানি নির্ভর করে সংকট তৈরিসহ সরকারের এই ভুলনীতি ও দুর্নীতির দায় সাধারণ মানুষ নেবে না।’

সরকারের পক্ষ থেকে বিদ্যুতে সাশ্রয়ী হতে যে আহ্বান জানানো হয়েছে, সেটির আগে সরকারকেই দৃষ্টান্ত রাখার আহ্বানও জানান সিপিবি নেতারা।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কোনো কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ঘাটতি হলে প্রথমে সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে সাশ্রয়ী ব্যবহার, এসির ব্যবহার বন্ধ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। সর্বত্র এসির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সাধারণ মানুষ, কৃষি-শিল্পের অগ্রাধিকার বিবেচনায় নিয়ে বিদ্যুৎ বণ্টন নিশ্চিত করতে হবে।’

সিপিবির দৃষ্টিতে সরকারের কী কী ভুল-সেটিও উঠে আসে বিবৃতিতে। এতে বলা হয়, ‘দেশের স্থল ও সমুদ্রের গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে উপেক্ষা করা হয়েছে। গ্যাস চুরি, অপচয় বন্ধ করে, সাশ্রয়ী ব্যবহার করতে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। অন্যদিকে বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানিকে গুরুত্ব দিয়ে জ্বালানি খাতকে এলএনজি আমদানিনির্ভরতা অনিবার্য করে তোলা হয়েছে। তেলের ওপর নির্ভরতা বাড়ানো হয়েছে।

‘শুধু তাই নয়, সংবিধানের মূল দৃষ্টিভঙ্গিকে উপেক্ষা করে বেসরকারি খাতের প্রাধান্যও বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে কমিশনভোগী ও বিশেষ গোষ্ঠী লাভবান হয়েছে। প্রতি বছর জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে ও হচ্ছে। আজ তার পরিণতিতে বিদ্যুৎ সংকট তীব্র হয়ে উঠেছে। সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। কৃষি শিল্প উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।’

এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে দেশ আরেক সংকটে পড়বে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয় বিবৃতিতে। বিদ্যুৎসহ জ্বালানি খাতের শ্বেতপত্র প্রকাশ, তাদের ভাষায় ‘জ্বালানি অপরাধীদের’ চিহ্নিত ও বিচারের দাবি জানান সিপিবি নেতারা।

বিবৃতিতে রেন্টাল, কুইক রেন্টালসহ ‘অপ্রয়োজনীয় বিদ্যুৎকেন্দ্র’ বন্ধ ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবি জানানো হয়। একইসঙ্গে জ্বালানি খাতে আমদানিনির্ভরতা দূর করে জাতীয় সক্ষমতা বাড়াতে স্থল ও সমুদ্র ভাগে নতুন নতুন গ্যাস ক্ষেত্র অনুসন্ধান ও উত্তোলনে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়ারও দাবি জানান নেতারা।

এ বিভাগের আরো খবর