কয়েক দিন ধরে চলা লোডশেডিংয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জে জনজীবনের কষ্ট চরমে উঠেছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা পড়েছেন ভোগান্তিতে। হাসপাতালে বিকল্প বিদ্যুতের ব্যবস্থা না থাকায় লোডশেডিংয়ের সময় রোগীর স্বজনরা হাতপাখা দিয়ে বাতাস করছেন।
হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে শহরের শেয়ালা কলোনি মহল্লার আলেয়া বেগম নামে এক রোগীর স্বজন বলেন, ‘দিনেও কারেন্ট টানছে, রাতেও কারেন্ট টানছে। রোগী লিয়্যা অ্যাসা সুস্থ করব কি, রোগী তো ঘ্যাল হয়্যা যাছে, কারেন্ট না থাকার কারতে বাচ্চা আরও বেশি হয়্যা যাছে, পাখা দিয়্যা বাতাস করতে করতে হামারঘে হাত-পায়ের শক্তি হারিয়া যাছে। কারেন্টে খুবই সমস্যা করছে।’
হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, তীব্র গরমে কষ্টে আছেন রোগীরা। রোগীর স্বজনরা জানান, বিদ্যুৎ যখন চলে যাচ্ছে তখন হাতপাখাই তাদের ভরসা।
তাদের দাবি, হাসপাতালে রোগীদের কথা চিন্তা করে লোডশেডিংয়ের সমস্যা জেনারেটর বা অন্য কোনো উপায়ে ফ্যানগুলো চালানোর ব্যবস্থা করা, যাতে অন্তত রোগীদের কষ্ট কিছুটা কমে।
হাসপাতালে থাকা একটি জেনারেটর লোডশেডিংয়ের সময় চালানো হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে হাসপাতালের দায়িত্বশীল কেউ কথা বলতেও চান না।
তবে জেনারেটর চালানোর যে খরচ, সেই বরাদ্দ না থাকায় সব সময় জেনারেটর চালানো হয় না বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের এমপি হারুনর রশিদ হারুন।
তিনি বলেন, ‘লোডশেডিংয়ের কারণে রোগীরা কষ্ট পাচ্ছেন, কিন্তু হাসপাতালের জেনারেটর চালানোর জন্য তো বরাদ্দ দিতে হবে। সেটি দেয়া হলে জেনারেটর চালাতে সমস্যা নেই, কিন্তু এর জ্বালানি খরচ তো পেতে হবে।’
এমপি বলেন, ‘ওটিসহ জরুরি বিভাগে লোডশেডিংয়ের সময় যাতে সেবা কার্যক্রম চালিয়ে নেয়া যায়, সে বিষয়ে বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া আছে। তবে গোটা হাসপাতালকে সাপোর্ট দিতে হলে জেনারেটর চালাতে হবে, সেটির তো বরাদ্দ লাগবে।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে থাকা নর্দার্ন ইলেকট্রিসিটি পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (নেসকো) এক কর্মকর্তা জানান, তারা চাহিদার অন্তত ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বিদ্যুৎ কম পাচ্ছেন। এ কারণে লোডশেডিং হচ্ছে। কেন্দ্রীয়ভাবে সরবরাহ ঠিক না হওয়া পর্যন্ত এমন কষ্ট মেনে নিতেই হবে গ্রাহকদের।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে নেসকোর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী আলিউল আজিম বলেন, ‘চাহিদার চেয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রায় অর্ধেক পাওয়ায় লোডশেডিং হচ্ছে। আশা করি দ্রুতই পরস্থিতির উন্নতি হবে।’