ময়মনসিংহের তারাকান্দায় আব্দুস সামাদ নামে এক কিশোরকে হত্যার ঘটনায় দুই ভাইসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
জেলার ফুলপুর ও তারাকান্দা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার বিকেলে তাদের ময়মনসিংহ মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে পাঠানো হবে।
এর আগে নিহত সামাদের বাবা শাহজাহান মিয়া সোমবার বিকেলে অজ্ঞাত আসামি করে থানায় মামলা করেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন উপজেলার দাদরা এলাকার ১৯ বছরের রবিন মিয়া, তার বড় ভাই ২৪ বছরের রোহান মিয়া, ওই উপজেলার হাটপাড়া গ্রামের ১৯ বছরের মুস্তাফিজুর রহমান নাঈম ও পুঙ্গুয়াই গ্রামের ২২ বছরের শাহীনুর ইসলাম।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ‘গ্রেপ্তার রবিন মিয়া নিহত রিকশাচালক সামাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল। এ সুবাদে প্রায়ই রবিনের বাড়িতে আসা-যাওয়া করত সামাদ। এক সময় রবিনের ছোট বোনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে সামাদের। বিষয়টি জানতে পারে রবিন। পরে তার বোনের সঙ্গে কথাবার্তা বলতে নিষেধ করেও ব্যর্থ হয়। পরে সামাদকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করে রবিন ও তার ভাই রোহান।
‘পরিকল্পনা অনুযায়ী গত সোমবার সন্ধ্যার দিকে সামাদের অটোরিকশা নিয়ে বিভিন্ন জায়গা ঘোরাফেরা করে রাত সাড়ে ৮টার দিকে পঙ্গুয়াই উমেদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে নিয়ে যায় রবিন, রোহান ও নাঈম। সেখানে ঝোপের আড়ালে আগেই ওত পেতে ছিল শাহীনসহ আরও দুজন। সামাদকে সেখানে নেয়ার পর প্লাস্টিকের রসি ও জালের টুকরা গলায় প্যাঁচিয়ে হত্যা করে স্কুলের সেপটিক ট্যাংকে মরদেহ ফেলে রাখে তারা।’
ওসি বলেন, ‘সামাদের মরদেহ পাওয়ার পর পুলিশ সুপারের নির্দেশে অভিযানে নামে জেলা ডিবি পুলিশের একাধিক টিম। জেলার ফুলপুর ও তারাকান্দা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিকেলে ময়মনসিংহ মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে পাঠানো হবে।’
১৪ বছর বয়সী নিহত সামাদ দাদরা গ্রামের শাহজাহান মিয়ার ছেলে। সে রিকশা চালিয়ে পরিবারের ভরণপোষণ করত।
তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের মামলার বরাতে বলেন, ‘সোমবার বিকেল ৩টার দিকে খাবার খেয়ে বাড়ি থেকে রিকশা নিয়ে বের হয় সামাদ। কিন্তু সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হলেও বাড়ি ফেরেনি। এ অবস্থায় পরিবারের লোকজন স্থানীয় বাজারসহ স্বজনদের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। পরে রাত ১০টার দিকে স্থানীয় পঙ্গুয়াই উমেদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশের সড়কে সামাদের রিকশাটি পাওয়া গেলেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি।
‘মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে সামাদের স্বজনরা ওই স্কুলটিতে অনুসন্ধান চালালে সেপটিক ট্যাংকের ঢাকনা ভাঙা দেখতে পায়। ঢাকনা সরানোর পর ভেতরে পাওয়া যায় সামাদের মরদেহ।’
ওসি বলেন, থানায় খবর দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
বিকেলেই নিহত সামাদের বাবা শাহজাহান মিয়া অজ্ঞাত আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন বলেও জানান তিনি।