বেড়েছে গরম। এর মধ্যেই দফায় দফায় লোডশেডিং। এ অবস্থায় রাতের বেলায় ঘুমানোই কঠিন হয়ে পড়েছে চাঁদপুরবাসীর। চাঁদপুর শহর ও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় খোঁজ নিয়ে এমন পরিস্থিতির কথা জানা গেছে।
গত কয়েক দিনের লোডশেডিংয়ে চাঁদপুরের জনজীবন অতিষ্ঠ হওয়া ছাড়াও ব্যাহত হচ্ছে অফিস, ব্যাংক-বীমা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে শিক্ষার্থীদের।
চাঁদপুর শহরের মাদ্রসা রোড এলাকার শিক্ষার্থী শারমিন আক্তার ও মাহিম বলেন, ‘দুদিন ধরে ঘন ঘন বিদ্যুৎ যাচ্ছে। এতে আমরা পড়াশোনা করতে পারছি না। প্রচণ্ড গরমে বিদ্যুৎ না থাকায় ঘরেও বসে থাকা যাচ্ছে না। বিশেষ করে, রাতে লোডশেডিং বেশি হওয়ায় ঘুমানোই যাচ্ছে না। আমরা এই সমস্যার নিরসন চাই।’
শহরের নাজির পাড়া এলাকার ব্যবসায়ী মামুন তালুকদার বলেন, ‘একবার বিদ্যুৎ গেলে ২-৩ ঘণ্টার মধ্যেও আসে না। কিন্তু আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বিদ্যুৎ ছাড়া চালানো সম্ভব না। লোকজন এসে ফিরে যাচ্ছে।’
মামুন জানান, লোডশেডিংয়ে বাসা বাড়িতে বয়স্ক ও ছোট শিশুদেরই বেশি সমস্যা হচ্ছে। একবার বিদ্যুৎ গেলে তাদেরকে ঘরে আটকে রাখা কষ্ট হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, চাঁদপুর শহরে অবস্থিত ১৫০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উৎপাদন বন্ধ থাকাই এই অঞ্চলে লোডশেডিং বাড়ার অন্যতম কারণ। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে বন্ধ রয়েছে এটি। যদিও ডাকাতিয়ার অপর প্রান্তে ইচলী এলাকার ‘চাঁদপুর পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেড’ নামে একটি প্রাইভেট বিদ্যুৎকেন্দ্রে অল্প পরিসরে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। তবে তা সীমিত।
পর্যবেক্ষণ বলছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিদ্যুৎ সংকট এত প্রকট ছিল না চাঁদপুরে। বর্তমানে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চাহিদার ৬০-৭০ ভাগ সরবরাহ পেলেও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি পাচ্ছে অর্ধেকের মতো। তাই গত তিন দিন ধরে বিদ্যুতের ঘন ঘন আসা-যাওয়া লক্ষ্য করা গেলেও সহসা এই সমস্যা থেকে উত্তরণের কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারেনি স্থানীয় বিদ্যুৎ বিভাগ।
চাঁদপুর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ‘উৎপাদন সমস্যার কারণে সারা দেশেই বিদ্যুৎ সল্পতা আছে। চাঁদপুরে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন এলাকায় প্রতিদিন দিনের বেলায় ১৮ মেগাওয়াট ও রাতে ২২ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা। জাতীয় গ্রিড থেকে সরবরাহ কম পাওয়ায় পরিস্থিতি সামাল দিতে লোডশেডিং হচ্ছে। বর্তমানে দিনে ১২ মেগাওয়াট আর রাতে ১৪ মেগাওয়াট দেয়া হচ্ছে।’
গ্যাসের সমস্যা নিরসন না হওয়া পর্যন্ত এমন অবস্থা থাকবে বলে জানান মিজানুর রহমান।