হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের হ্যাঙ্গারে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের দুই উড়োজাহাজের মধ্যে সংঘর্ষে দুটির ডানা ক্ষতিগ্রস্তের ঘটনায় তদন্ত কমিটি করেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় চার সদ্যসের এই তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এতে আহ্বায়ক করা হয়েছে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিমান ও সিএ) মো. মহিদুল ইসলামকে। কমিটিতে অন্যান্যের মধ্যে আছেন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (বিমান ও সিএ) নজরুল ইসলাম সরকার, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক (এয়ারওয়ার্দিনেস স্টান্ডার্ড) আব্দুল কাদের, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের উপমহাব্যবস্থাপক আনোয়ার হোসেন।
গত রোববার রাত ৯টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের হ্যাঙ্গারে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের দুই উড়োজাহাজের মধ্যে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সে সময় বিমানের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক তাহেরা খন্দকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিমানের একটি বোয়িং সেভেন এইট সেভেন ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজকে হ্যাঙ্গারে প্রবেশ করানোর সময় সেখানে বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বোয়িং সেভেন থ্রি সেভেন উড়োজাহাজের একটি পাখা এবং পাখার নিচের অংশে আঘাত লাগে।
‘এতে সেভেন থ্রি সেভেন উড়োজাহাজটির বাম ডানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যদিকে ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজটির ডান ডানাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’
এ ঘটনায় বিমানের এয়ার সেফটি বিভাগের পরিচালক এনামুল হক তালুকদারকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তাহেরা খন্দকার জানান, ‘তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে বিমানের স্বাভাবিক ফ্লাইট কার্যক্রমে এই দুর্ঘটনার কোনো প্রভাব পড়বে না।’
বিমান কর্মকর্তারা বলছেন, দুর্ঘটনার ফলে আপাতত এই দুই উড়োজাহাজ দিয়ে যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। উড়োজাহাজ দুটির কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা নিরূপণ করতে এসব তথ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের কাছে পাঠানো হবে। তাদের মূল্যায়নের পর জানা যাবে ক্ষতির পরিমাণ।
তারও আগে, গত ১০ এপ্রিল দুপুরে বিমানের বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজ হ্যাঙ্গারের ভেতরে প্রবেশ করানোর সময় আগে থেকেই সেখানে থাকা বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। ফলে ৭৭৭ উড়োজাহাজের র্যাডোম ও সামনের বাল্কহেড এবং ৭৩৭ উড়োজাহাজের বাঁদিকের আনুভূমিক স্ট্যাবিলাইজারের কোনার অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এ ঘটনার পরপরই বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। সেই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে গাফিলতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর বিমানের পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বরখাস্তের আদেশ দেয়া হয়।
বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা হলেন বিমানের মুখ্য প্রকৌশলী মোহাম্মদ বদরুল ইসলাম, প্রকৌশলী মাইনুল ইসলাম, সৈয়দ বাহারুল ইসলাম ও সেলিম হোসেন খান এবং জিএসই অপারেটর মো. হাফিজুর রহমান।