ভোলার তজুমদ্দিনে ‘নবলোক’ নামের একটি এনজিও ঋণ দেয়ার প্রলোভনে গ্রাহকদের কাছ থেকে জামানতের অন্তত ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে সটকে পড়েছে।
সোমবার সকালে প্রায় ৫০ জন গ্রাহক ঋণের টাকা নিতে ‘নবলোকের’ অফিসে গিয়ে তালাবদ্ধ দেখতে পান। পরে গ্রাহকরা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
অফিসের সামনে লাগানো সাইনবোর্ডে পিকেএসএফের অর্থায়নে পরিচালিত ঋণ কার্যক্রমের কথা উল্লেখ করেছে এনজিও ‘নবলোক’। সেখানে এনজিওটির একটি সনদ নম্বরও দেয়া আছে। সদস্যদের দেয়া পাশ বইতে সংস্থাটির প্রধান কার্যালয় লেখা রয়েছে খুলনা সদরের নিরালা রোড।
অভিযোগ থেকে জানা গেছে, সম্প্রতি তজুমদ্দিনের গোডাউন রোডের শ্রমিক কালা চানের বাসা ভাড়া নেয় ‘নবলোক’ নামের ওই এনজিও প্রতিষ্ঠান। ২৮ জুন ওই বাসায় অফিস চালু করেন এক নারীসহ তিন ব্যক্তি। অজ্ঞাত ওই ব্যক্তিরা এনজিওর পরিচয় দিয়ে উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের পঞ্চায়েত কান্দি, বাদুরা, খাশের হাট, কালির বাজার, দেওয়ানপুর, চৌমুহনী, সোনাপুরের ইন্দ্রনারায়ণপুর, চাপড়ি, শম্ভুপুরের ভুবন ঠাকুর, গোলকপুর, শিবপুরসহ অন্তত ২৫টি এলাকায় নারীদের নিয়ে সমিতি গঠন করে।
সেসব সমিতির সদস্যদের কাছ থেকে ঋণের সঞ্চয়ের কথা বলে ৫-২০ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নেয় এনজিওটি।
আড়ালিয়ার বাদুড়া গ্রামের ভুক্তভোগী মো. হান্নান বলেন, ‘আমাকে এক লাখ টাকা ঋণ দেয়ার কথা বলে ১০ হাজার টাকা সঞ্চয় হিসেবে জমা নেয়। এখন ঋণের টাকা নিতে এসে দেখি অফিস তালাবদ্ধ। আমাদের এলাকায় সমিতি গঠন করে আমার সাথে আরও ২০-২৫ জনের কাছ থেকে এভাবে টাকা নিয়েছে নবলোক।’
তিনি বলেন, ‘বাড়ির মালিক কালা চাঁদ দাস জানিয়েছেন এক সপ্তাহ আগে এনজিওটি বাসা ভাড়া নেয়। কিন্তু তাদের সঙ্গে আগামী বুধবার এক বছরের অগ্রিম ভাড়া প্রদান সাপেক্ষে লিখিত চুক্তির কথা ছিল। কিন্তু রোববার সন্ধ্যার পর থেকেই তারা নিরুদ্দেশ, ফোনও বন্ধ।’
তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম জিয়াউল হক বলেন, ‘প্রতারণার মাধ্যমে টাকা নিয়ে চলে সটকে পড়ার বিষয়টি নিয়ে গ্রাহকরা অভিযোগ করেছেন। তবে প্রতারকদের বিষয়ে সঠিক তথ্য কেউ দিতে পারেননি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
তজুমদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মরিয়ম বেগম বলেন, ‘উপজেলায় নবলোক নামের এনজিওর কার্যক্রম সম্পর্কে আমাকে কিছু জানানো হয়নি। এ এনজিওর কোনো তথ্যও আমার জানা নেই। টাকা লেনদেনের বিষয়টিও জানি না। তবে বিষয়টি খোঁজ নেয়া হবে।’