পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলায় ব্যাপক উন্নয়ন হবে বলে আশাবাদী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, তিনি ক্ষমতায় এসে উত্তরাঞ্চলে মঙ্গা দূর করেছেন, দেশের দক্ষিণও পিছিয়ে থাকবে না।
পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর প্রথমবারের মতো এই সেতু পাড়ি দিয়ে গোপালগঞ্জে নিজ এলাকায় গিয়ে এসব কথা বলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই পদ্মার ওপারের মানুষরা দীর্ঘ অপেক্ষায় ছিল প্রমত্তা নদীর বুকে সেতুর জন্য। নানা ঘটনা প্রবাহের কারণে সেতুটি রাজনৈতিক একটি রূপও নিয়েছে, দৃশ্যত আওয়ামী লীগ এ দিক দিয়েও বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে।
এই সেতু নির্মাণর আগে যে সম্ভাব্যতা যাচাই হয়েছিল, তখনই বলা হয়েছিল, সেতুটি চালু হলে দেশের ডিজিপিতে এক শতাংশ যোগ হবে। এখন এই মূল্যায়ন বাড়ানো হয়েছে। বছরে ডিজিপিতে দেড় শতাংশ যোগ করবে পদ্মা সেতু-এটি হলো এখনকার মূল্যায়ন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে আমি যখন দেশে ফিরে আসি, তখন সবচেয়ে অবহেলিত ছিল দক্ষিণাঞ্চল। উত্তরাঞ্চল ছিল মঙ্গাকবলিত এলাকা। তখন কোনো মানুষের গায়ে মাংস ছিল না। তাদের খাবার ছিল না। রোগের চিকিৎসা ছিল না। আর প্রতি বছর দুর্ভিক্ষ হতো।
‘তখন থেকে আমার একটা প্রতিজ্ঞা ছিল, যখন সুযোগ পাব, দেশের জন্য কাজ করব। এখন উত্তরাঞ্চলে মঙ্গা নাই। পদ্মা সেতুর মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলেও ব্যাপক উন্নয়ন হবে।’
সোমবার গাড়িতে করে পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় যান প্রধানমন্ত্রী।
গত ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর প্রথমবারের মতো স্থাপনাটির ওপর দিয়ে বাড়িতে গেলেন সরকারপ্রধান। তার সঙ্গে ছিলেন ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।
দুপুর পৌনে ১২টার দিকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান জাতির পিতার কন্য়া।
দুপুরে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি। কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে তিনি প্রায় ঘণ্টাব্যাপী কথা বলেন।
এ সময় তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের ভূয়সী প্রশংসা করেন। বলেন, শত জুলুম নির্যাতনের মধ্যেও তৃণমূলের নেতাকর্মীরা দলকে সামলে রেখেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপির সময় আওয়ামী লীগের সব নেতাকর্মীর ওপর অত্যাচার-নির্যাতন হয়েছে। জেল-জুলুম হয়েছে। অনেক মানুষ মারা গেছে, অনেক লাশ হারিয়ে গেছে।
‘আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া খান, এরশাদ, জিয়া সব আমলেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে। কিন্তু শত নির্যাতনের মধ্যেও আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে সব সময় শক্তিশালী ছিল। বিশেষ করে আমাদের মাঠকর্মীরা সব সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং তারাই কিন্তু দলকে ধরে রাখছেন।’