বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া রাজি থাকলে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী তাকে নিয়ে পূর্ণিমার রাতে পদ্মা সেতু দেখতে যেতে পারেন বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
সচিবালয়ে সোমবার ‘মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধু’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আগের দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে পূর্ণিমার রাতে পদ্মা সেতুতে ঘুরতে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন জাফরুল্লাহ।
তিনি বলেন, ‘চিন্তা করেন, আপনার (প্রধানমন্ত্রী) গাড়ি সামনে, পরে খালেদা জিয়ার গাড়ি, আর তার পেছনে তিনজন মুক্তিযোদ্ধা দাঁড়ায়া থাকবে। আস্তে আস্তে যাব। এখনও সময় আছে, অন্যদিকে পয়সা খরচ না করে এক পূর্ণিমার রাতে চলেন না যাই! এইটাই হবে বাংলাদেশ। তার আগে মুক্তি দিতে হবে... এনাদেরও (আলেম) নিয়ে যাই।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে আজ টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনে গিয়েছেন। তার পূর্ণিমার রাতে যাওয়ার দরকার নাই। যদি খালেদা জিয়া রাজি হন, তাহলে জাফরুল্লাহ সাহেব পূর্ণিমা রাতে যেতে পারেন।’
অন্য সময় বাদ দিয়ে হঠাৎ পূর্ণিমার রাতে খালেদা জিয়াকে নিয়ে পদ্মা সেতুতে যাওয়ার ইচ্ছা কেন- সেই প্রশ্নও তুলেছেন হাছান মাহমুদ।
খালেদা জিয়া ও হেফাজতের সহিংসতার মামলায় সংগঠনের নেতাদেরকে মুক্ত করতে ১০ হাজার মানুষকে নিয়ে হাইকোর্ট ঘেরাও করার যে ঘোষণা জাফরুল্লাহ চৌধুরী দিয়েছেন তাকে আদালতের প্রতি হুমকি হিসেবে দেখার কথাও জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমি জানি না, আদালত সেটিকে কীভাবে বিবেচনা করবেন। এটি আদালতকে হুমকি দেয়ার শামিল।’
পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান জনগণ বর্জন করেছে বলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী যে বক্তব্য রেখেছেন, সেটি নিয়েও কথা বলেন হাছান মাহমুদ। বলেন, ‘বিএনপি নেতাদের বক্তব্যে মনে হচ্ছে, পদ্মা সেতু তাদের গলার কাঁটা হয়ে গেছে। সারা দেশের মানুষ উচ্ছ্বসিত। মানুষ যেভাবে পুলকিত, উল্লসিত এবং গর্বিত। কিন্তু বিএনপি ঠিক সমপরিমাণ লজ্জিত এবং সমপরিমাণ গলার কাঁটা হয়ে গেছে বলে তাদের বক্তব্যে মনে হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘মূল অনুষ্ঠানে শুধু তিন হাজার মানুষকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সেখানে আর কারও যাওয়ার সুযোগ ছিল না। তিন হাজার মানুষের প্রত্যেককে করোনা টেস্ট করে সেখানে যেতে হয়েছে।
‘আর যে জনসভা হয়েছে সেখানে, লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাবেশ হয়েছে। আর সেদিন যদি পদ্মা সেতু দেখার সুযোগ দেওয়া হতো, কত মানুষ হতো, সেটা আমি জানি না। পদ্মা সেতু যদি দেখার সুযোগ করে দেয়া হতো, আমার মনে হয় যদি সুযোগ থাকত, দেশের সব মানুষ সেখানে চলে যেত। শুধু বিএনপির উদ্ভ্রান্ত বক্তব্য রাখা কয়েকজন নেতা ছাড়া।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের বক্তব্যে মনে হচ্ছে, তাদের একটু মানসিক চিকিৎসার এখন সত্যিই প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেভাবে উদ্ভ্রান্তের মতো কথা বলছেন, বিশেষ করে রিজভী আহমেদকে।
‘তিনি অসুস্থ ছিলেন। আমার মনে হয় পুরোপুরি সুস্থ হননি। সে জন্য অসুস্থ মানুষের মতোই কথা বলেন। আরও একটু চিকিৎসা দরকার আছে বলে আমার মনে হচ্ছে।’