বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মশা খুঁজতে ড্রোন, কেন?

  •    
  • ৩ জুলাই, ২০২২ ২১:০৭

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানান, বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছাদে অনুসন্ধান চালানো সহজ ব্যাপার নয়। অনেকে নিরাপত্তার কথা ভেবে বাড়ির ছাদে যেতে দেয় না। এ কারণে প্রত্যেক অঞ্চলের ছাদ দেখার জন্য ড্রোন ব্যবহার হচ্ছে। এ ড্রোন দিয়ে প্রত্যেক বাড়ির ছাদ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে, ছবি তোলা হচ্ছে, ভিডিও করা হচ্ছে।

ডেঙ্গু মশার বাহক এডিসের উৎস খুঁজতে শনিবার থেকে ড্রোনের মাধ্যমে দশ দিনের এক চিরুণি অভিযান শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন- ডিএনসিসি। মশা মারতে ড্রোনের ব্যবহার শুনে অনেকেই বিষয়টা নিয়ে ফেসবুকে কৌতুকপূর্ণ পোস্ট দিচ্ছেন।

মশা খুঁজতে ড্রোন ব্যবহারের উদ্যোগ এবারই প্রথম। উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. জোবায়দুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মশা নিয়ন্ত্রণে আমরা সব সময় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করি। সারা বছর সকালে সারভিসাইট ছিটানো ও বিকেলে ফগিং করি। এটা আমাদের ট্র্যাডিশনাল সিস্টেম।’

প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানান, এখন তাদের সব থেকে বড় মাথাব্যথা ছাদবাগান। অনেকেই এখন বাড়ির ছাদে বাগান করছেন। তবে তাদের অজান্তে টবে পানি জমে থাকে।

বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছাদে অনুসন্ধান চালানো সহজ ব্যাপার নয় বলে জানান জোবাইদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘সিকিউরিটির জন্য অনেকে বাড়ির ছাদে যেতে দেয় না। এ কারণে আমরা চিন্তা করলাম, প্রত্যেক অঞ্চলের ছাদ দেখার জন্য প্রযুক্তি ব্যবহার করা যাক। ড্রোন চালিয়ে এভাবে প্রত্যেক বাড়ির ছাদগুলোকে পর্যবেক্ষণ করছি, ছবি নিচ্ছি, ভিডিও করছি।

‘ড্রোনের মাধ্যমে যে বাড়ির ছাদে আমরা পানি দেখতে পাচ্ছি, সেখানে সঙ্গে সঙ্গে কর্মী পাঠিয়ে দিচ্ছি। তারা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিচ্ছে। ছাদ থেকে আমরা মাইকের মাধ্যমেও মানুষকে সচেতন করছি। এই পদ্ধতিতে নির্ভুলভাবে সুন্দর করে কাজ করতে পারছি। ছাদে, ছাদের ড্রামে, সোলার প্যানেলের নিচে, টবে জমে থাকা পানি নির্ভুলভাবে ড্রোনের মাধ্যমে দেখতে পাচ্ছি। এভাবে সকল ছাদের একটা ডেটাবেজ আমরা তৈরি করব।’

ঢাকা উত্তর সিটির ১০ অঞ্চলে প্রতিদিন এভাবে ড্রোন ব্যবহার করে রেকি করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘দশ দিনের জন্য একটা স্পেশাল প্রোগ্রাম নিয়েছি আমরা। তবে কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এটা চলতে থাকবে। মশা নিয়ন্ত্রণের কার্যপদ্ধতিকে কার্যকর করার জন্যই ড্রোন ব্যবহার করছি।’

মশা মারতে আরও যে ব্যবস্থা

জোবাইদুর রহমান বলেন, ‘ঢাকা উত্তর সিট করপোরেশনের প্রত্যেক জলাশয়ে আমরা মশার ডিম ও লার্ভা কমাতে গাপ্পি মাছ ছেড়ে দিয়েছি। এই মাছ মশার ডিম বা লার্ভাকে খেয়ে ফেলে। যার ফলে মশা জন্মাতে পারে না এবং ড্রেনের পানি পরিষ্কার থাকে।

নোভালুরন ট্যাবলেটের মাধ্যমেও মশার লার্ভা নষ্ট করা হয়। জোবাইদুর রহমান বলেন, ‘এডিস মশা জন্মায় বাড়ির ভেতরে জমে থাকা পরিষ্কার পানিতে। আমাদের অভিজ্ঞতায় দেখলাম, অনেক বাড়ির পানির মিটারের ভেতরে এডিস মশার লার্ভা। আমরা তখন এসব জায়গায় নোভালুরন ট্যাবলেট দিয়েছি। তিন মাস পর্যন্ত এই ট্যাবলেটের কার্যকারিতা থাকে। আমরা তিন মাস পর্যন্ত অপেক্ষা না করে এক মাস পরপর ট্যাবলেট দিচ্ছি। যাতে কোনোভাবে লার্ভা জন্মাতে না পারে।’

নির্মাণাধীন ভবনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যত আন্ডার-কনস্ট্রাকশন ভবন আছে, সেগুলোতে লার্ভা বেশি জন্মায়। আমরা গতবারের অভিজ্ঞতায় এটা দেখেছি। এ কারণে এ বছর আমরা সকল আন্ডার-কনস্ট্রাকশন ভবনকে আওতায় এনেছি। রিহ্যাবের সঙ্গে মিটিং করেছি। তাদেরকে নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছি। তারা কী কী কাজ করেছে, তার ফিডব্যাক নিয়েছি। অনেক ভবনকে জরিমানা করেছি। আগে ৭০ থেকে ৮০ ভাগ বাড়িতে লার্ভা পাওয়া যেত। এখন ১০০ বাড়ির মধ্যে তিন-চারটাতেও লার্ভা পাওয়া যায় না।’

নতুন প্রযুক্তির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মসকিটো ট্র্যাপ প্রযুক্তি বিশ্বে হাতে গোনা কয়েকটি দেশে ব্যবহার করা হচ্ছে। আমরা পরীক্ষামূলকভাবে এটার পাইলটিং করছি। মানুষের ঘামের গন্ধে মশা আসে। আমরা যে কার্বন-ডাই অক্সাইড ত্যাগ করি, এর গন্ধেও মশা আসে। এই প্রযুক্তি দিয়ে গন্ধের মাধ্যমে মশা সব এক জায়গায় চলে আসবে।

‘আমরা সচেতনভাবে কাজ করছি। সবাইকে সচেতনভাবে কাজ করতে হবে, না হলে মশা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না।’

এ বিভাগের আরো খবর