মানিকগঞ্জ শহরের একটি টেইলার্সে বোরখা তৈরি করতে গেলে কর্মচারী ‘কুপ্রস্তাব’ দিয়েছেন বলে মাসখানেক আগে থানায় অভিযোগ করেছিলেন দুই সন্তানের জননী এক গার্মেন্টস কর্মী। এবার সেই কর্মচারীর দ্বারা অপহরণের শিকার হয়েছেন বলে নতুন অভিযোগ ২৮ বছর বয়সী ওই নারীর।
এ ছাড়া অভিযোগ জানালেও এ বিষয়ে থানা থেকে কোনো সহযোগিতা পাননি বলেও দাবি করেছেন তিনি।
অভিযোগপত্রে জানা যায়, প্রায় আট মাস আগে মানিকগঞ্জ শহরের আল মদিনা টেইলার্সে বোরখা তৈরি করতে আসেন ওই নারী। এ সময় স্লিপের কথা বলে তার ফোন নম্বর রাখেন কর্মচারী ছানোয়ার হোসেন। এরপর মাঝে মাঝেই ভুক্তভোগীকে ফোন করে বিরক্ত করতেন তিনি। এ ছাড়া বিয়ের আশ্বাস দিয়ে যৌন সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রস্তাবও দিতেন।
একাধিকবার নিষেধ করার পরও কাজ না হওয়ায় গত ৬ জুন সদর থানায় ছানোয়ারের নামে অভিযোগ করেন ওই নারী।
অভিযোগের পর কিছুদিন ফোন করা বন্ধ থাকলেও ভুক্তভোগীকে রাস্তাঘাটে বিরক্ত করতে শুরু করেন ছানোয়ার। বিষয়টি দোকানের মালিক ও পুলিশকে জানালে গত ২৯ জুন তাদের থানায় বসার কথা ছিল। কিন্তু সেদিন ভোরে গার্মেন্টসে যাওয়ার পথে বাড়ির অদূরে শহরের খাদ্যগুদামের সামনে থেকে কয়েকজন লোক তাকে অজ্ঞান করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়।
জ্ঞান ফেরার পর হাত-পা বাঁধা অবস্থায় নিজেকে একটি নদীর পাড়ে দেখতে পান ভুক্তভোগী। এ সময় অপহরণকারীরা তাকে থানায় ফোন দিয়ে অভিযোগ তুলে নিতে বলে। তা না হলে তাকে হত্যা করে নদীতে ফেলে দেয়ার হুমকি দেয়।
এ অবস্থায় ভয়ে চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে অপহরণকারীরা পালিয়ে যায়।
এ সময় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় সিরাজগঞ্জের কামারখন্দের কড্ডার মোডের নান্দিনা মধুর এলাকা থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। পরে তিনি মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
ভুক্তভোগী জানান, অভাবের কারণে স্বামী জীবিত থাকা অবস্থায় গার্মেন্টসে কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। দেড় বছর আগে স্বামী মারা যান। এরপর দুই সন্তানকে নিয়ে শহরের পশ্চিম দাশড়া এলাকায় বাবার বাড়িতে থাকতে শুরু করেন।
তিনি বলেন, ‘থানায় অভিযোগ করেছি অনেক দিন হয়ে গেছে। তবুও পুলিশ কিছু করছে না। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। যেন আমাকে কেউ বিরক্ত করতে না পারে।’
এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছানোয়ার হোসেনের মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
আল-মদিনা টেইলার্সের মালিক রবিউল ইসলাম জানান, ফোনে কথা বলার বিষয়টি জানালে কর্মচারী ছানোয়ারকে নিষেধ করা হয়। কিন্তু পরে ওই নারীকে তুলে নেয়ার ঘটনা জেনে প্রায় ২০ দিন আগে ছানোয়ারকে দোকান থেকে বের করে দেয়া হয়।
এ বিষয়ে সদর থানার ওসি আব্দুর রউফ সরকার নিউজবাংলাকে জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। তবে বিষয়টির তদন্ত কর্মকর্তা এসআই টুটুলের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি।