বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অধ্যক্ষকে জুতার মালা: মাউশির তদন্ত শুরু

  •    
  • ৩ জুলাই, ২০২২ ১৮:৫৪

মাউশির খুলনা অঞ্চলের পরিচালক অধ্যাপক শেখ হারুনুর রশিদ বলেন, ‘আমরা আজ তদন্তের কাজ শুরু করেছি। ভুক্তভোগী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস ওই দিনের ঘটনার বিস্তারিত তথ্য আমাদের জানিয়েছেন। এ ছাড়া এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট আরও বেশ কয়েকজনের সঙ্গেও আমরা কথা বলেছি।’

নড়াইলে পুলিশের সামনে শিক্ষকের গলায় জুতার মালা দিয়ে লাঞ্ছিত ও কলেজে সহিংসতার ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।

রোববার বিকেলে নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানান মাউশির বেসরকারি কলেজ শাখার উপপরিচালক মো. এনামুল হক হাওলাদার।

তিনি বলেন, ‘নড়াইল সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে অপদস্থ করার ন্যক্কারজনক ঘটনায় তদন্ত হচ্ছে। মাউশির খুলনা অঞ্চলের পরিচালক অধ্যাপক শেখ হারুনুর রশিদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত দল আজ থেকে সরেজমিন তদন্ত শুরু করেছে।’

কবে নাগাদ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আশা করছি দুই-তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন আমাদের হাতে আসবে। এরপর আমরা তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

ফেসবুকে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বহিষ্কৃত মুখপাত্র নূপুর শর্মার সমর্থনে কলেজের এক হিন্দু শিক্ষার্থীর পোস্ট দেয়াকে কেন্দ্র করে গত ১৮ জুন দিনভর বিক্ষোভ, সহিংসতা চলে মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাসে। গুজব ছড়িয়ে দেয়া হয় ওই শিক্ষার্থীর পক্ষ নিয়েছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস।

এরপর পুলিশ পাহারায় বিকেল ৪টার দিকে স্বপন কুমার বিশ্বাসকে ক্যাম্পাসের বাইরে নিয়ে যাওয়ার সময় তাকে দাঁড় করিয়ে গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয় একদল ব্যক্তি। শিক্ষক স্বপন কুমার হাত উঁচিয়ে ক্ষমা চাইতে থাকেন। পরে তাকে তুলে নেয়া হয় পুলিশের গাড়িতে।

মোবাইল ফোনে ধারণ করা এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। পুলিশের সামনে শিক্ষকের এমন অপদস্থ হওয়ার ঘটনায় তৈরি হয়েছে তীব্র ক্ষোভ।

ঘটনার ৯ দিন পর গত ২৭ জুন দুপুরে নড়াইল সদর থানায় মামলা করেন পুলিশের উপপরিদর্শক ও মির্জাপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ শেখ মোরছালিন। এ মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ১৭০ থেকে ১৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার পর সেদিন রাতেই মির্জাপুরের শাওন খান, মনিরুল ইসলাম ও সৈয়দ রিমন আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন বুধবার গ্রেপ্তার করা হয় রহমত উল্লাহ রনি নামের যুবককে। শাওন ও রনিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে সরাসরি অধ্যক্ষের গলায় জুতার মালা পরিয়ে দিতে দেখা গেছে বলে জানায় পুলিশ।

ঘটনা তদন্তে পুলিশের পাশাপাশি একাধিক টিম কাজ করছে। মাউশি গত ২৯ জুন তদন্ত কমিটি গঠন করে। মাউশির খুলনা অঞ্চলের পরিচালক অধ্যাপক শেখ হারুনুর রশিদের নেতৃত্বে এ কমিটিতে আছেন উপপরিচালক (কলেজ) এস কে মোস্তাফিজুর রহমান ও সহকারী পরিচালক (কলেজ) মো. নিজামুল ইসলাম।

তদন্তের অগ্রগতি জানতে চাইলে অধ্যাপক শেখ হারুনুর রশিদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা আজ তদন্তের কাজ শুরু করেছি। ভুক্তভোগী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস ওই দিনের ঘটনার বিস্তারিত তথ্য আমাদের জানিয়েছেন। এছাড়া এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট আরও বেশ কয়েকজনের সঙ্গেও আমরা কথা বলেছি।’

এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি শনিবার রাতে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) জুবায়ের হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বে এ কমিটিতে ছিলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম ছায়েদুর রহমান ও নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শওকত কবীর।

প্রতিবেদন জমা দেয়ার পরের দিনই (রোববার) জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির সদস্য নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শওকত কবীরকে নড়াইল থেকে সরিয়ে খুলনা আরআরএফ (রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্স)-এ সংযুক্ত করা হয়েছে।

একই ঘটনায় পৃথক একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল নড়াইল জেলা পুলিশ। এ কমিটির আহ্বায়ক করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিয়াজুল ইসলামকে। অন্য সদস্যরা হলেন- ডিআই ওয়ান মীর শরীফুল হক ও পুলিশ পরিদর্শক (অপরাধ) রফিকুল ইসলাম।

এ বিভাগের আরো খবর