স্ত্রীর সিজার হওয়ার কথা ছিল রোববার সকাল ৯টার দিকে। ভুলবশত রোগীর আল্ট্রাসনোগ্রাফির রিপোর্টটি ফেলে এসেছেন পাঁচ কিলোমিটার দূরে গ্রামের বাড়িতে। সেই রিপোর্ট আনতে যাচ্ছিলেন জাহিদ হাসান জুয়েল নামের এক প্রকৌশলী। তবে শেষ পর্যন্ত বাড়ি পৌঁছাতে পারেননি তিনি।
মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে চৌগাছা-যশোর সড়কের কয়ারপাড়া এলাকায় একটি বাসকে সাইড দিতে গিয়ে নিজেই মারাত্মক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মারা যান তিনি।
জাহিদ হাসান জুয়েলের বাড়ি চৌগাছার সিংহঝুলী ইউনিয়নের মাজালি গ্রামে। তার বাবার নাম আব্দুল মালেক। ঢাকার তেজগাঁও টেক্সটাইল কলেজ থেকে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক শেষে ফ্রিল্যান্সিং পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। তিন বছর বয়সী একটি কন্যাসন্তান রয়েছে জাহিদের।
নিউজবাংলাকে তথ্য নিশ্চিত করেছেন চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম সবুজ।
নিহতের পরিবারের সদস্যদের বরাতে ওসি জানান, সন্তানসম্ভবা স্ত্রীকে চৌগাছা শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করেন জাহিদ। আজ সকাল ৯টার দিকে তার সিজার করার কথা। কিন্তু রোগীর সঙ্গে আল্ট্রাসনোগ্রাফির রিপোর্ট না থাকায় জাহিদ এটি আনতে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন।
পথে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা বাসকে সাইড দিতে গিয়ে সড়কের পাশের নিরাপত্তা খুঁটিতে সজোরে ধাক্কা খান। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্সে ওঠানোর আগেই তার মৃত্যু হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘জোরে আঘাতের ফলে জাহিদের বাম হাত ও পা ভেঙে গেছে। এ ছাড়া বুকে গুরুতর আঘাতের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।’
ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘নিহতের পরিবারের সদস্যদের কোনো অভিযোগ না থাকায় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফনের অনুমতি দেয়া হয়েছে।’এদিকে জাহিদুলের মৃত্যুর খবর শোনার পর তার স্ত্রীর সিজার করাননি স্বজনরা। চিকিৎসকের পরামর্শে সোমবার সিজার করা হবে বলে জানান পরিবারের সদস্যরা।