‘এখন তো গরু কেউ কিনবো না, খালি দাম হুনি চলে যাচ্ছে’- কথাগুলো বলছিলেন সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার গরু বিক্রেতা আব্দুল কুদ্দুস। রাজধানীর ডেমরা আমুলিয়া মডেল টাউনের পশুর হাটে একটি গরু নিয়ে গত বৃহস্পতিবার এসেছেন তিনি।
আব্দুল কুদ্দুসের সুরে সুর মিলিয়ে একই কথা বললেন মেহেরপুরের গরু বিক্রেতা আলম। ১৪টি গরু নিয়ে গাংনী উপজেলা থেকে ঢাকার মেরাদিয়া পশুর হাটে এসেছেন তিনি। নিউজবাংলাকে বলেন, ‘লোকজন আসছে দাম শুনে ছবি তুলে চলে যাচ্ছে।’
গো খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় গত বছরের তুলনায় এ বছর গরুর দাম বেশি থাকবে বলে জানান বিক্রেতারা। ঈদুল আজহার এক সপ্তাহ আর বাকি। তবে এখনও জমে ওঠেনি পশুর হাট।
রোববার রাজধানীর ডেমরার আমুলিয়া মডেল টাউন ও মেরাদিয়া বাজার ঘুরে জানা যায়, গত দুইদিনে এই দুই হাটে কোনো পশু বিক্রি হয়নি। দুই হাট ঘুরে দেখা গেছে, গরুর সর্বনিম্ন দাম ৭৫ হাজার। আর গরুর সর্বোচ্চ দাম ৪ লাখ টাকা।
আমুলিয়া মডেল টাউন হাটে যাওয়ার আগে চোখে পড়বে সু-সজ্জিত তোরণ। মাইকিং করে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা চলছে সেখানে৷ তবে ক্রেতাশূন্য হাট। সবে পাঁচ শতাধিক গরু উঠেছে এ হাটে।
অন্যদিকে হাট সম্প্রসারণেল কাজও চলছে পুরোদমে৷
সবে হাট বসছে বলে জানালেন কুষ্টিয়ার সাইদুল মন্ডল। তিনি নিউজবাংলাকে বলে, ‘ক্রেতারা আসে। আইসে চলে যায়। এত আগে লিয়ে পালবে না তো।’
মেহেরপুর থেকে গরু বিক্রির জন্য এসেছেন মিনারুল। ক্রেতারা যে দাম বলে তা তার প্রত্যাশার তুলনায় অনেক কম বলে জানালেন তিনি। বলেন, ‘গরুর দাম তিন লাখ টাকা চাইলে এক লাখ ৮০ হাজার টাকা বলে। বাজার ভালো হবে না। গরুর খাবারের দাম বেশি। গরুর জন্য আগে ৩৫ কেজির বস্তার ভুসি কিনেছি ১৩০০ টাকায়। তা এখন দুই হাজার টাকায় কিনতে পারছি না।’
কুষ্টিয়া থেকে ১৮টি গরু নিয়ে এসেছেন আসাদুল ইসলাম। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কাস্টমার আসে দাম জিগায়। দাম বলি তাতে পড়তা হয় না। গ্রামের থেকে গরু কিনে নিয়ে আসছি। যে দাম বলে তাতে লাভ আসে না।’
গত বারের তুলনায় এবার দাম একটু বেশি হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গতবার যে গরু ১ লাখে বিক্রি হয়েছে সেটা এবার ১ লাখ ২০ হয়ে যাবে। কারণ গরুর খাদ্যের দাম বেশি।’
আমুলিয়া হাটের ইজারাদার ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত মো. দিপু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পাঁচশ গরু উঠছে। এখনও হাট জমে উঠেনি। কোনো পশু বিক্রি হয়নি এখনও।’
এদিকে আমুলিয়া হাটের চেয়ে মেরাদিয়া হাটে পশুর সংখ্যা বেশি থাকলেও এখানে কোনো গরু বিক্রি হয়নি এখনও। কাস্টমার এখনও আসা শুরু করেনি বলে জানান নাটোর থেকে আসা গরু বিক্রেতা ইসমাইল ফকির। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তারাও কিনবানা এখন দেখবার আসছে। যাচাই করে আর কি?’