নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে রাজিয়া সুলতানা ও তার ছেলে তালহাকে পূর্ব পরিচিতরাই হত্যা করেছে বলে ধারণা পুলিশের।
উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের উজান গোবিন্দী এলাকার যে বাড়িটিতে মা-ছেলে খুন হয়েছেন সেই বাড়িটিতে মোট তিনটি কক্ষ। তবে মা-ছেলে একই কক্ষে ঘুমাতেন। রোববার সকালে তাদের লাশ পড়ে ছিল আলাদা দুটি কক্ষে।
রাজিয়ার মরদেহের পাশেই একটি বাটিতে কাঁঠাল ও কাঁঠালের বীচি রাখা ছিল। তার পাশেই ছিল পানির বোতল। আর নিহত তালহার পাশে থাকা ঘরের স্টিলের আলমারীটি চাবি দিয়ে খোলা। ঘরের দরজাও ছিল অক্ষত।
রাজিয়ার স্বামী আউয়াল নবী বিদেশে ছিলেন। বিদেশ থেকে ফিরে দুই বছর আগে তিনি মারা যান। তারপর থেকে স্বামীর রেখে যাওয়া আধাপাকা ঘরে রাজিয়া ও তার ছেলে তালহা বাস করতেন।
ঘটনাস্থল থেকে পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার আবির হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, পূর্ব পরিচিত কেউ এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে আমরা ধারণা করছি। কারণ মরদেহের পাশে সে সব আলামত দেখা গেছে। যদিও এখনও আমরা কাউকে চিহ্নিত করতে পারিনি।’
রাজিয়ার ঘরের পাশের ঘরে তার বৃদ্ধা চাচি শাশুড়ি ও আরেকটি পাকা ঘরে রাজিয়ার ভাতিজা বউ জান্নাতুল একা বসবাস করেন। জান্নাতুলের স্বামী সৌদিপ্রবাসী। গত রাতে তাদের কেউ কোনো শব্দ শুনতে পাননি বলে দাবি করেছেন।
রোববার ভোরে রাজিয়া ও তালহার মরদেহ সবার আগে দেখতে পান জান্নাতুল। পরে তিনি স্বজন ও পুলিশকে জানান।
জান্নাতুল বলেন, ‘রাতে কোনো সাড়াশব্দ পাইনি। আমি কাউকে আসা-যাওয়া করতেও দেখিনি।’
নিহতের মা বৃদ্ধা আকলিমা বেগম জানান, নিহত তালহা স্থানীয় একটি স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ত। গতকাল সে গণিত পরীক্ষা দিয়েছে। আজও তার পরীক্ষা ছিল।
আকলিমা বলেন, ‘প্রতিরাতে আমার মাইয়া-নাতির লগে ফোনে কথা কই। গতকাল কথা হয় নাই। সকালে শুনি ওগো গলা কাইট্টা মাইরা ফেলছে। আমি বিচার চাই। বিচার চাই।’
আড়াইহাজার থানা পুলিশ, সিআইডি ও পিবিআইয়ের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছে। দুপুর দেড়টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মরদেহ দুটি নারায়ণগঞ্জ ১০০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
আড়াইহাজার থানার ওসি আজিজুল হক জানান, ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, রাজিয়ার মরদেহ একটি কক্ষের মেঝেতে পড়ে ছিল। আরেকটি কক্ষের বিছানায় পড়ে ছিল তালহার মরদেহ।
ধারণা করা হচ্ছে, গতকাল শনিবার দিবাগত রাতের কোনো একসময় দুর্বৃত্তরা তাদের গলা কেটে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে পুলিশ কাজ করছে বলেও জানান ওসি।