কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় সুবিধাভোগীদের কার্ড কৌশলে জমা নিয়ে টোকেনের মাধ্যমে টিসিবির পণ্য বিতরণের অভিযোগ তদন্তে কমিটি করেছে জেলা প্রশাসন।
কিশোরগঞ্জের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমানকে নিয়ে শনিবার এক সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়।
হাবিবুর রহমান নিজেই নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মাইজখাপন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ ওরফে তারুর বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়ে জেলা প্রশাসক তাকে প্রধান করে এক সদস্যের কমিটি করে দিয়েছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।
- আরও পড়ুন: গরিবের পণ্যে চেয়ারম্যানের চোখ
এর আগে গত শুক্রবার দুপুরে মাইজখাপন ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, যারা একটি ছোট টোকেন নিয়ে যাচ্ছেন তারা টিসিবির পণ্য পাচ্ছেন। টোকেনে নীলগঞ্জ পুরাতন জামে মসজিদের সিল ও চেয়ারম্যানের সই আছে। যাদের কাছে টোকেন নেই তারা লাইনে দাঁড়িয়েও পণ্য পাচ্ছেন না।
স্থানীয়দের অভিযোগ, চেয়ারম্যান কৌশলে প্রকৃত সুবিধাভোগীদের কার্ড জমা নিয়ে টোকেনের মাধ্যমে নিজের আত্মীয়স্বজন আর সমর্থকদের মধ্যে টিসিবির পণ্য বিতরণ করছেন।
এ নিয়ে ‘গরিবের পণ্যে চেয়ারম্যানের চোখ’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে নিউজবাংলা। এরপর বিষয়টি নজরে আসে জেলা প্রশাসনের।
চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের দাবি, সবাইকে দেয়ার মতো পর্যাপ্ত পণ্য তিনি পাননি। এ কারণে এই ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়েছেন। তবে কার্ড জমা রাখার বিষয়ে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা বলছেন, চেয়ারম্যান তাদের বলেছিলেন পণ্য কম এসেছে। তাই বেছে বেছে দেবেন। তবে প্রতি ওয়ার্ডে যতজনকে দেয়া হবে বলেছিলেন, দেয়া হয়েছে তার চেয়ে অনেক কম।
চেয়ারম্যানের দাবি, তার এই উদ্যোগের বিষয়ে প্রশাসনের সঙ্গে কথা হয়েছে।
তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আলী জানান, পণ্যের কোনো সংকট নেই।
তিনি বলেন, ‘টোকেনের মাধ্যমে পণ্য বিতরণের বিষয়টি জেনে আমি চেয়ারম্যানকে ফোন করে বিতরণ বন্ধ করে দিয়েছি। অনেক সময় সুবিধাভোগীদের কার্ড ছিঁড়ে যায়, হারিয়ে যায়। তাই প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের প্রতি নির্দেশনা আছে তারা যেন তালিকা দেখে পণ্য বিতরণ করেন।
‘তবে তারা যদি তালিকার বাইরে টোকেনের মাধ্যমে পণ্য বিতরণ করে থাকেন, তাহলে এ বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’