নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুই ছাত্রীকে বেত দিয়ে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে।
রূপগঞ্জের বরপা হাজী নুর উদ্দিন আহম্মেদ উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ওই দুই ছাত্রী এখন উপজেলার ইউএস বাংলা হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন।
শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এরপর রাতে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন এক শিক্ষার্থীর স্বজন।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম সায়েদ নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অভিযোগে বলা হয়, ঈদ উপলক্ষে শনিবার দুপুরে স্কুল ছুটি ঘোষণা করা হয়। ছুটির ঘোষণায় ছাত্রীরা জরি মাখামাখি শুরু করে। এতে বাংলা বিভাগের শিক্ষক জসিম উদ্দিন দুই ছাত্রীকে প্রধান শিক্ষকের রুমে নিয়ে যান।
সেখানে তাদের বেত দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। একপর্যায়ে দুই ছাত্রীই অচেতন হয়ে পড়ে যায়। এরপর অন্য শিক্ষকরা তাদের হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এক ছাত্রীর মামা শফিক মিয়া বলেন, ‘আমার বোন পোশাক কারখানায় কাম করে। মেয়েটারে অনেক কষ্ট কইরা পড়ালেখা করাইতাছে। ওর বাপ নাই। মেয়েটারে কখনও মারে না।
‘মেয়েটারে এমনভাবে পিটাইছে যে ওর শরীরে শুধু দাগ আর দাগ। আমাদের এলাকার আরেকটা ছাত্রীরেও মারছে, ওরও একই অবস্থা। ওরা এখন আইসিইউতে। আমরা এর বিচার চাই।’
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য জসিম উদ্দিনকে একাধিকবার কল দেয়া হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
কথা হয়েছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জরহর লাল ঘোষের সঙ্গে। তার রুমে নিয়ে মারধরের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেছেন।
জরহর বলেন, ‘স্কুল ছুটি শুনে ছেলেমেয়েরা বারান্দায় জরি মাখামাখি করছিল। তখন জসিম স্যার গিয়ে তাদের বেতের বাড়ি দেন। আমি সে সময় আমার রুমে ছিলাম। বিষয়টি দেখতে পেয়ে ছুটে গিয়ে তাকে বাধা দেই।
‘এরপর ছাত্রীদের মাথায় পানি ঢালা হয়। একজন অসুস্থ বোধ করলে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে আরেকজনকেও নেয়া হয়। সন্ধ্যায় আমরা তাদের দেখে এসেছি। বিষয়টি শিক্ষা অফিসারও জানেন।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রফিক উদ্দিন আহম্মদ বলেন, ‘আমি রাতে খবর পেয়েছি। এ বিষয়ে রোববার আমরা তদন্ত করব। স্কুল কমিটিও মিটিং ডেকেছে। যদি ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ওসি সায়েদ জানান, অভিযোগ পেয়ে তারা বিষয়টির তদন্ত শুরু করেছেন।
এ ঘটনায় স্কুল ম্যানেজিং কমিটির পক্ষ থেকে রোববার জরুরি মিটিং ডাকা হয়েছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ্ নুসরাত জাহান।