নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে লাঞ্ছিত ও কলেজে সহিংসতার ঘটনায় জেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
শনিবার রাত ৯টায় তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) জুবায়ের হোসেন চৌধুরী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমানের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন।
এডিএম জুবায়ের হোসেন চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘গত ১৮ জুন নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজে একটি ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনার বিষয়ে আমাকে আহ্বায়ক করে ৩ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করে দেয় জেলা প্রশাসন।
‘আমরা তদন্ত শেষ করে জেলা প্রশাসকের কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছি। তবে প্রতিবেদনে কারা জড়িত বা কাদের নাম এসেছে সেটা বলার সুযোগ নেই। যেহেতু মামলা হয়েছে সেজন্য কারও নাম বলা সম্ভব নয়। আমি এর বেশি আর কিছু বলতে চাচ্ছি না।’
কমিটির দুই সদস্য ছিলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম ছায়েদুর রহমান ও নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শওকত কবীর।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, ‘তদন্ত কমিটিকে ৩০ জুনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছিল। তবে কমিটি আরও দুইদিন সময় চেয়েছিল। আজ প্রতিবেদন হাতে পেয়েছি। এ বিষয়ে পরবর্তীতে মিটিং করে দোষীদের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এর আগে কিছু বলা সম্ভব নয়।’
একই ঘটনায় পৃথক একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল নড়াইল জেলা পুলিশ। এ কমিটির আহ্বায়ক করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিয়াজুল ইসলামকে। অন্য সদস্যরা হলেন- ডিআই ওয়ান মীর শরীফুল হক ও পুলিশ পরিদর্শক (অপরাধ) রফিকুল ইসলাম।
নড়াইলের পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় বলেন, ‘পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন এখনো জমা হয়নি।’
ফেসবুকে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বহিষ্কৃত মুখপাত্র নূপুর শর্মার সমর্থনে কলেজের এক শিক্ষার্থীর পোস্ট দেয়াকে কেন্দ্র করে ১৮ জুন মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ, সহিংসতা চলে।
গুজব ছড়িয়ে দেয়া হয় যে ওই শিক্ষার্থীর পক্ষ নিয়েছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস।
এরপর পুলিশ পাহারায় বিকেল ৪টার দিকে স্বপন কুমার বিশ্বাসকে ক্যাম্পাসের বাইরে নিয়ে যাওয়ার সময় তাকে দাঁড় করিয়ে গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয় একদল ব্যক্তি। শিক্ষক স্বপন কুমার হাত উঁচিয়ে ক্ষমা চাইতে থাকেন। পরে তাকে তুলে নেয়া হয় পুলিশের গাড়িতে।
মোবাইল ফোনে ধারণ করা এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। পুলিশের সামনে শিক্ষকের এমন অপদস্ত হওয়ার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে সারাদেশে।