নড়াইলে পুলিশের সামনে শিক্ষককে হেনস্তা ও সাভারে এক শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় চট্টগ্রামে গলায় জুতার মালা পরে প্রতিবাদ জানিয়েছেন এক স্কুলশিক্ষক।
শনিবার নগরীর আন্দরকিল্লা চত্বরে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে এই প্রতিবাদ জানান তিনি।
ওই শিক্ষকের নাম শেখর ঘোষ। তিনি বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি রাউজানের (দক্ষিণ) যুগ্ম সম্পাদক ও রাউজান মহামুনি এংলো-পালি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক।
এই প্রতিবাদ সম্পর্কে নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘শিক্ষকদের জাতির বিবেক বলা হয়। বিভিন্ন থানায় ওসি, এসপি হিসেবে যারা আছেন তারাও কোনো না কোনো শিক্ষকের ছাত্র। তাদের সামনে যদি কোনো শিক্ষককে জুতার মালা পরানো হয়, এটা মেনে নেয়া যায় না।
‘এটা শিক্ষকের গলায় না, পুরো জাতির গলায় জুতার মালা পরানো হয়েছে। তা ছাড়া আরেকজন শিক্ষককে তারই ছাত্র পিটিয়ে হত্যা করেছে। শিক্ষক হিসেবে স্বাভাবিকভাবে এসব আমি মেনে নিতে পারি না। আমার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে এসব দেখে। তাই শিক্ষক সমিতির মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে গলায় জুতার মালা পরে আমার এই প্রতীকী প্রতিবাদ।’
এই দিন বিকেলে নগরীর আন্দরকিল্লা চত্বরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)।
সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিমুল মহাজন ও আলতাজ মিয়ার যৌথ সঞ্চালনায় এই কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন বিটিএর চট্টগ্রাম আঞ্চলিক শাখার সভাপতি সৈয়দ লকিতুল্লাহ। তাদের এ কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করেন বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় (বাকবিশিস) কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর।
মানববন্ধনে বক্তারা দেশব্যাপী শিক্ষক হেনস্তা বন্ধ করা, শিক্ষকদের সামাজিক নিরাপত্তা ও অ্যাকাডেমিক স্বাধীনতা নিশ্চিতের দাবি জানান।
বিটিএর চট্টগ্রাম আঞ্চলিক শাখার সাধারণ সম্পাদক অঞ্চল চৌধুরী বলেন, ‘শিক্ষক হেনস্তার ঘটনায় দেশপ্রেমিক জনগণ ক্ষোভে ফুঁসছে। লজ্জায় আর অপমানে যখন প্রতিটি বিবেকবান মানুষ ক্ষত-বিক্ষত হচ্ছিল, তখন সাভারের কলেজ শিক্ষককে পিটিয়ে মেরেছে তারই ছাত্র। শিক্ষকদের অপমান ও লাঞ্ছনার ঘটনায় সমগ্র জাতি লজ্জিত। শিক্ষকরা ভালো না থাকলে জাতিও ভালো থাকবে না।’
ওই সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সংগঠনের সহসভাপতি রঞ্জিত কুমার নাথ, চট্টগ্রাম মহানগরীর সভাপতি নুরুল হক ছিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কানুনগো, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার চক্রবর্ত্তী।