বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভুয়া কাবিননামায় স্ত্রী সেজে সম্পত্তি দখলের অভিযোগ

  •    
  • ২ জুলাই, ২০২২ ২২:০৪

এমপি জোবেদা খাতুন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নিশাত আহম্মেদ খান কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গসহ ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে ২০২১ সালে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তার ব্যক্তিগত কোনো কাজের দায়ভার দল নেবে না।’

গত ২৩ জুন নিশাত আহম্মেদ খান নামের কুমিল্লার এক আওয়ামীলীগ নেতা সংবাদ সম্মেলন করে স্ত্রীর মর্যাদা ও জীবনের নিরাপত্তাসহ সন্তানের অধিকার চান। এ ঘটনার পর শনিবার ২ জুন দুপুরে কুমিল্লা শহরের একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করেন প্রবাসী মিনহাজুর রহমান।

নিশাত আহম্মেদ খান একসময় কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে ২০২১ সালে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন, কুমিল্লা দক্ষিণ মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি জোবেদা খাতুন পারুল।

মিনহাজ বলেন, ‘আমার সম্পত্তির লোভে নিশাত খান ভুয়া কাবিন বানিয়ে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করেন। পরে ভুয়া কাবিননামা তৈরির অভিযোগে মামলা দায়েরের পর সংশ্লিষ্ট নিকাহ রেজিস্ট্রার মো. জাইদুল হোসাইন আদালতে কাছে এ ব্যাপারে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন এবং তিনি বর্তমানে জেলহাজতে আছেন।’

সাংবাদিক সম্মেলনে আরও জানান, তার বাড়ি নগরীর রাজাপাড়া এলাকায়। ওই এলাকার শহীদুল হক স্বপনের মাধ্যমে নিশাতের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ওই সময় তার রূপগঞ্জের জমিজমা, কুমিল্লা হাউজিং এস্টেটে পাঁচ তলা বাড়ি ও ধানমন্ডির একটি ফ্ল্যাট দেখাশোনা ও ভাড়া সংগ্রহের জন্য একজন লোকের দরকার ছিল।

সে সময় নিশাত তাকে সাহায্য করার আগ্রহ প্রকাশ করলে মিনহাজ তাকে মৌখিক চুক্তিতে দায়িত্ব দেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, নিশাত অজ্ঞাতনামা একজনকে মিনহাজ সাজিয়ে ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর বিবাহ দেখিয়ে ২০২১ সালের ১৯ আগস্ট নগরীর অশোকতলা এলাকার নারীনেত্রী ফাহমিদা জেবিনের বাসায় কাজী মো. জাইদুল হোসাইনের মাধ্যমে দুজনের (মিনহাজ-নিশাত) একই জন্ম তারিখ দেখিয়ে ভুয়া কাবিননামা বানিয়েছে।

বিয়ে অনুষ্ঠানের যে তারিখ বলা হচ্ছে, সেই সময় তিনি ইংল্যান্ডে ছিলেন বলে জানান। ওই সময় নিশাত তার ধানমন্ডির ফ্ল্যাট দখল করে সেখানে তার মা, দুই সন্তান ও মেয়ের স্বামীসহ বসবাস শুরু করে। মিনহাজ বলেন, এর আগে ২০১৭ নিশাত পাসপোর্টে নিজেকে মিনহাজের স্ত্রী বলে ভুয়া তথ্য দিয়ে প্রতারণা শুরু করে। এমন পরিস্থিতিতে চলতি বছরের এপ্রিলে মিনহাজ দেশে আসেন। এরপর তিনি নিজের ফ্ল্যাটে গেলে নিশাত, তার মেয়ে ও মেয়ের স্বামী তাকে সেখানে প্রবেশে বাধা দেয় এবং তাকে নানাভাবে হুমকি দেয়।

এ ঘটনার পর নিশাত কুমিল্লা হাউজিং এস্টেটের মিনহাজের ৫তলা বাড়ির কেয়ারটেকারকে মারধর করে একটি ফ্ল্যাট দখল করে নেয়। এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় নিশাত বাড়ির কেয়ারটেকার জিলানী ও স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাকির হোসেনকে আসামি করে মামলা করেন। মিনহাজ বলেন, এই নারী ভুয়া কাগজপত্র সৃষ্টি করে সম্পত্তি আত্মসাতের জন্য তাকে স্বামী দাবি করছে। ভুয়া নিকাহনামায় নিশাত নিজেকে তালাকপ্রাপ্তা বললেও তিনি তা নন। তার সন্তান, মেয়ের স্বামী ও নাতি-নাতনী রয়েছে।

এখন নিশাত মিনহাজকে স্বামী দাবি করে বলছে, সে মিনশাত রহমান স্বাধীন নামের সন্তানের মা এবং ওই সন্তানের বাবা নাকি তিনি। স্বাধীন নামের ওই শিশুর জন্ম-পরিচয় সনাক্তের জন্য তিনি ডিএনএ টেস্টের জোর দাবি জানান।

তিনি বলেন, ‘নিশাত একজন প্রতারক নারী। আমি একজন রেমিট্যান্স যোদ্ধা। ভুয়া কাবিননামার বিষয়ে আদালতে মামলা চলমান আছে। এরই মধ্যে নিকাহ রেজিস্ট্রার ভুয়া কাবিননানা সৃষ্টির বিষয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন এবং বর্তমানে কারাগারে আছেন।’

তিনি নিশাত ও তার চক্রের দ্বারা হয়রানীর হাত থেকে মুক্তি পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক কাউন্সিলর জাকির হোসেন, ভ‚ক্তভোগী মিনহাজের বোন ফরিদা আক্তার, শাহনাজ রহমান, ভাবী মাসুদা বেগম, ভগ্নিপতি মতিউর রহমান প্রমুখ।অভিযোগের বিষয়ে নিশাত বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা। মিনহাজুর রহমান মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে আমাকে বিয়ে করেছে, বিয়ের প্রমাণও আছে।’

লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, ২০১৩ সালে মিনহাজ ইতালি থেকে দেশে আসেন। এর পর তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। ওই বছরের ১০ সেপ্টেম্বর তাদের বিয়ের দিন ঠিক হয়। এটি তাদের দুজনেরই দ্বিতীয় বিয়ে।

বিয়ের আগ মুহূর্তে মিনহাজ জানান, তার নামে মামলা আছে। সেই মামলা নিষ্পত্তি হতে দুই মাস সময় লাগবে। তাই তিনি এখন বিয়ে রেজিস্ট্রি করতে পারছেন না।

পরে হুজুর ডেকে ঘরোয়াভাবে তাদের বিয়ে হয়। এর পর তারা একসঙ্গে থাকা শুরু করেন।

বিয়ের ১৯ দিন পর মিনহাজ ইতালি ফিরে যান। ২০১৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর দেশে এসে বিভিন্ন কাগজে নিশাতের সই নিয়ে জানান, তাদের বিয়ের রেজিস্ট্রি হয়ে গেছে।

কুমিল্লা দক্ষিণ মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি জোবেদা খাতুন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নিশাত আহম্মেদ খান এ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গসহ ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে ২০২১ সালে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তার ব্যক্তিগত কোনো কাজের দায়ভার দল নেবে না।’

এ বিভাগের আরো খবর