বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পাঙাশের পুষ্টি বার্গার কাটলেটে

  •    
  • ২ জুলাই, ২০২২ ১৭:১৯

উদ্বৃত্ত পাঙাশ মাছ থেকে বিকল্প খাদ্যপণ্য তৈরির একটি গবেষণা চলতি বছরই সাফল্য পেয়েছে। ইতোমধ্যেই প্যানেল টেস্টের মাধ্যমে উদ্ভাবিত ১১টি পণ্যের জনপ্রিয়তাও পরীক্ষা করা হয়েছে।

মাছের বাজারে গিয়ে আর কোনো মাছের দেখা না পেলেও অন্তত পাঙাশের দেখা মিলবেই। বাজারের কোনাকাঞ্চি কিংবা রাস্তার পাশে কোনো না কোনো বিক্রেতা জীবন্মৃত কিছু পাঙাশের ডালি সাজিয়ে বসে থাকবেই। কারণ দেশে এ মাছটির সরবরাহ এখন সবচেয়ে বেশি।

কিন্তু গন্ধসহ কয়েকটি কারণে পাঙাশ মাছ অনেকের কাছেই অপছন্দের। তাই চাহিদার তুলনায় জোগান বেশি হয়ে যাওয়ায় উদ্বৃত্ত থেকে যায় এই মাছের বিপুল একটি অংশ।

পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এই উদ্বৃত্ত মাছ কীভাবে কাজে লাগানো যায় তা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একদল গবেষক। এরই ধারাবাহিকতায় অব্যবহৃত পাঙাশ মাছ থেকে ১১টি পণ্য উদ্ভাবন করে সাফল্য দেখিয়েছেন ওই গবেষকেরা। এসব পণ্য একদিকে যেমন সবার কাছে মাছের পুষ্টি পৌঁছে দেবে, অন্যদিকে মাছচাষিদের আর্থিক ক্ষতির হাত থেকেও রক্ষা করবে।

দীর্ঘ পাঁচ বছরের গবেষণায় এমন সাফল্য পাওয়া গেছে। গবেষক দলটির প্রধান ছিলেন ফিশারিজ টেকনোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. ফাতেমা হক শিখা। তার সঙ্গে ছিলেন একই বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ইসমাইল হোসেন। এ ছাড়া ওই বিভাগের আরও ১৪ জন স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীও ওই গবেষণায় যুক্ত ছিলেন।

পাঙাশ থেকে তাদের উদ্ভাবিত ১১টি পণ্য হলো ফিশ বার্গার, ফিশ আচার, ফিশ চাটনি, ফিশ কাটলেট, ফিশ সসেজ, ফিশ পাঁপড়, ফিশ ফ্লেক, ফিশ চিপস, ফিশ ম্যাকারনি-পাস্তা, ফিশ জেলাটিন ও ফিশ গ্লু বা আঠা।

২০১৮ সালে শুরু হওয়া গবেষণাটি চলতি বছরই সাফল্য পেয়েছে। ইতোমধ্যেই প্যানেল টেস্টের মাধ্যমে উদ্ভাবিত ১১টি পণ্যের জনপ্রিয়তাও পরীক্ষা করা হয়েছে। এ ছাড়া এসব পণ্য সংরক্ষণ করে খাবার উপযুক্ত রাখা যায় কি না, সে বিষয়েও গবেষণা হয়েছে।

গবেষক দলটির অন্যতম সদস্য অধ্যাপক ড. মো. ইসমাইল হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই মাছ খেতে পছন্দ করে না। এর মধ্যে গন্ধের কারণে পাঙাশ মাছ আরও অপছন্দের।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্যই ছিল সবার কাছে মাছের পুষ্টি পৌঁছানো এবং মাছচাষিদের আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করা। ফলে দীর্ঘ গবেষণায় মাছ থেকে খাদ্যপণ্য উদ্ভাবন করা হয়। বিশেষ করে উদ্ভাবিত পণ্যগুলো শিশুদের কাছে খুব প্রিয়। তারা সহজেই এসব পণ্যের মাধ্যমে মাছের পুষ্টি গ্রহণ করতে সক্ষম হবে।’

ইসমাইল হোসেন জানান, পণ্যগুলোর মধ্যে ফিশ বার্গারে ২০ দশমিক ৯৮, ফিশ আচারে ২২ দশমিক ৫০, ফিশ চাটনিতে ৬ দশমিক ৬৮, ফিশ কাটলেটে ১৮ দশমিক ৩৮, ফিশ সসেজে ১২ দশমিক ৫৪, ফিশ পাঁপড়ে ২৩ দশমিক ৯২, ফিশ ফ্লেকে ২৪ দশমিক ৫৬, ফিশ চিপসে ২৪ দশমিক ৮৭ এবং ফিশ ম্যাকরনি-পাস্তায় ২২ দশমিক ৭২ শতাংশ পাঙাশের প্রোটিন রয়েছে।

গবেষক দলের প্রধান ড. ফাতেমা হক শিখা বলেন, ‘পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা গেছে, পণ্যগুলোর মধ্যে শুকনো খাবার বায়ুশূন্য পলিথিন ব্যাগে ৬ থেকে ৯ মাস পর্যন্ত ভালো রাখা যায়। অন্যদিকে ভেজা খাবারগুলো ফ্রিজে তিন থেকে চার মাস পর্যন্ত ভালো থাকে। এ ছাড়া ফিশ আচার ও চাটনি প্রায় এক বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে।’

তাই ভবিষ্যতে দেশের পুষ্টি চাহিদা পূরণে নিজেদের উদ্ভাবিত পণ্যগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেই মনে করছে গবেষক দলটি।

এ বিভাগের আরো খবর