শরীয়তপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের দুটি ভবন নির্মাণে পাথরের পরিবর্তে ইটের খোয়া ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।
ভবন দুটির গ্রেডভিম ও কলামে (খুঁটি) ইটের খোয়া ব্যবহার করে ঢালাই শেষ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। অথচ সেখানে পাথর ব্যবহারের কথা ছিল।
বর্তমান বাজার মূল্য হিসেবে প্রতি বর্গফুট পাথর ২৩০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা। আর যে ইটের খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে তার দাম প্রতিবর্গ ফুট ১৩০ টাকা হতে ১৪০ টাকা। ভবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ গ্ৰেট ভিম ও পিলার ঢালাই দেয়া হয়েছে ইটের খোয়া দিয়ে। অথচ ওই ঢালাইয়ে পাথর ব্যবহারের কথা ছিল।
ইউনুছ অ্যান্ড ব্রাদার্স ও মাহাবুব খান এন্টারপ্রাইজ নামের দুটি প্রতিষ্ঠানকে গত বছর ২৫ নভেম্বর ভবন দুটি নির্মাণের কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। দুটি ভবন নির্মাণ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইউনুছ অ্যান্ড ব্রাদার্স।
ঢালাইয়ের কাজে থাকা এক নির্মাণশ্রমিক বলেন, ‘আমরা বাইরের জেলা থেকে আইছি। ঠিকাদার যেমনে কইছে আমরা হেমনেই ঢালাই দিতাছি। আমাগো ইটের খোয়া, সিমেন্ট আর বালু দিয়া ঢালাই দিতে কইছে। আমরা হেমনেই ঢালাই দিছি। ঢালাইতে কি ধরা আছিল না আছিল, হেইয়া আমরা কইতে পারুম না।’
ইউনুছ অ্যান্ড ব্রাদার্সের উপমহাব্যবস্থাপক সায়েম হাসান মুঠোফোনে বলেন, ‘আমরা সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে কাজ করছি। ভবনের নির্মাণ কাজটি সওজের প্রকৌশলীরা সরাসরি তদারকি করছেন। তারা তো খোয়ার ব্যবহার নিয়ে কোনো অভিযোগ দিচ্ছেন না।
‘আমাদের সঙ্গে কথা না বলে বিষয়টি নিয়ে সওজের সঙ্গে কথা বলেন। তারাই এর ভালো জবাব দিতে পারবেন।’
অনিয়মের বিষয়টি শরীয়তপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী ভূঁইয়া রেদওয়ানুর রহমান নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘শরীয়তপুর সওজ বিভাগের ক্যাম্পাসে পরিদর্শন বাংলো ও উপবিভাগীয় প্রকৌশলীর বাসভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। দ্বিতল বিশিষ্ট দুটি ভবনের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে যথাক্রমে পরিদর্শন বাংলোয় ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা এবং উপবিভাগীয় প্রকৌশলীর বাস ভবনের জন্য ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
‘পরিদর্শন বাংলো ভবনটি আয়তন আড়াই হাজার বর্গফুট। ভবনে ৫৫ ফুট দৈর্ঘের ৩টি ও ২৩ ফুল দৈর্ঘ্যের ৬ টি গ্ৰেট ভিম রয়েছে। এ ছাড়া সাড়ে ৯ ফুট উচ্চতার ২০টি কলমে ঢালাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে।’
রেদওয়ানুর রহমান বলেন, ‘চলমান রয়েছে প্রথম তলার ছাদ নির্মাণ কাজ। উপবিভাগীয় প্রকৌশলীর বাস ভবনটি দুই হাজার বর্গফুটের। ভবনে ৩৩ ফিট দৈর্ঘের ৩টি ও ২৪ ফিটের ৩টি গ্রেডভিম, সাড়ে ৯ ফুট উচ্চতার ১১টা কলাম নির্মাণ করা হয়েছে।
‘ঢালাইয়ের সময় শ্রমিকরা কলম ও গ্ৰেট ভিমে ভুল করে কিছু জায়গায় পাথরের পরিবর্তে ইটের খোয়া ব্যবহার করেছে। বিষয়টি নজরে এলে পরবর্তী ঢালাইয়ে ইটের খোয়ার পরিবর্তে পাথর ব্যবহার করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’