ঢাকার সাভারে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পাঁচদিন ধরে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকার পর শনিবার থেকে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতের আশ্বাস দেয়া হয়েছে।
আশুলিয়ার চিত্রশাইল এলাকায় হাজী ইউনুছ আলী কলেজ প্রাঙ্গণে শুক্রবার দুপুরে শিক্ষক উৎপলকে স্মরণে এক শোক ও মতবিনিময় সভায় এসব কথা জানানো হয়।
কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল হাসানের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার। এ ছাড়া ঊর্ধ্বতন কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভার শুরুতে শিক্ষক উৎপলের মাগফিরাত কামনায় উপস্থিত সবাই দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করেন।
অধ্যক্ষ সাইফুল বলেন, ‘আপাতত কোনো পারিপার্শ্বিক চাপ আমরা অনুভব করছি না। এ রকম কোনো সুযোগও নেই, তবে মানসিকভাবে আমরা দুর্বল হয়ে পড়েছি। হয়তো বা জিতুর রিমান্ডে আরও কিছু তথ্য পাওয়া যাবে। অন্য আসামিরা গ্রেপ্তার হলে, তখন তৃপ্তিটা পরিপূর্ণ হবে।
‘পুলিশের সঙ্গে আমাদের ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। তারা আমাদের সার্বিক নিরাপত্তার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছেন। ছাত্রদের আন্দোলনের কারণে এতোদিন তারা বিক্ষিপ্ত ছিল এবং লেখাপড়ার ক্ষতিও হয়েছে। সামনে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা। তাদের দ্রুত ক্লাসে ফেরানোর চেষ্টা করছি।’
আধ্যক্ষ বলেন, ‘আগামীকাল থেকে শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হবে। এরই মধ্যে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঈদের ছুটি শুরু হয়ে গেছে। আমরা দুই, এক দিন ক্লাস নিয়ে পড়ার নির্দেশনা দিয়ে ছুটি দেব।’
এদিকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা যাতে নির্বিঘ্নে ক্লাসে ফিরতে পারে এ জন্য পুলিশ টহলসহ সার্বিক নিরাপত্তা জোরদারের নিশ্চিতের কথা জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার।
ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, ‘এখানে স্কুল ও কলেজ চলাকালীন সময়ে পুলিশের পেট্রোল টিম থাকবে, যা অলরেডি চলমান। কোনো জায়গায় কোনো সমস্যা থাকলে সুনির্দিষ্টভাবে অমাদের জানালে দ্রুত ব্যবস্থা নেব। কোনো জায়গায় ইভটিজিং, গ্যাং তৈরি করা হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। মামলার তদন্ত কার্যক্রম কোনোভাবেই বিঘ্নিত হওয়ার সুযোগ নেই। সঠিক বিষয়টিই আমরা তুলে ধরব।’
গত শনিবার কলেজ প্রাঙ্গণে মেয়েদের ক্রিকেট খেলার সময় দশম শ্রেণির ছাত্র আশরাফুল ইসলাম জিতু রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে জখম করে। পরদিন সাভারের একটি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
একই দিন শিক্ষকের উৎপলের বড় ভাই অসীম কুমার সরকার আশুলিয়া থানায় জিতুকে প্রধান করে অজ্ঞাত আরও ৩ থেকে ৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। বুধবার অভিযুক্ত ছাত্র জিতু ও তার বাবা উজ্জ্বল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বর্তমানে আসামিরা আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছ পাঁচদিনের রিমান্ডে আছেন।