ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে। এর আগে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ভিড় জমাতে থাকেন টিকিটপ্রত্যাশীরা, তবে কমলাপুরে দুটি জায়গায় টিকিট বিক্রি হওয়ায় ঈদুল ফিতরের তুলনায় এবার টিকিটপ্রত্যাশীদের ভিড় কম দেখা গেছে।
কমলাপুরে আসা কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছে নিউজবাংলা। তাদের একজন সাকিবুল হাসান। নয়াপল্টন থেকে এসে টিকিট পেয়েছেন তিনি।
সাকিব বলেন, ‘আমার ছোট ভাই রাকিব গতকাল রাত ৯টা থেকে ছিল। আমি সকাল ৭টায় এসেছি। আমি ও আমার ভাই মোট সাতটি টিকিট কিনেছি।’
তিনি বলেন, ‘এবার টিকিট কাটার জন্য সিস্টেম ভালো হয়েছে। যারা লাইনে দাঁড়িয়েছেন, তারাই টিকিট পেয়েছেন। আমার কোনো অভিযোগ নেই।’
নটর ডেম কলেজের ছাত্র ইমাম মেহেদী নিউজবাংলাকে জানান, তিনি সিরাজগঞ্জে যাবেন। টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছেন ভোর ৫টার দিকে। প্রত্যাশিত টিকিট পাবেন বলেই আশা তার।
রাজধানীর বাসাবোতে থাকেন নুরুল আমিন। যাবেন টাঙ্গাইলে। টিকিট কিনতে ভোর ৫টায় লাইনে দাঁড়িয়েছেন। টিকিট পাওয়ার প্রত্যাশায় ছিলেন তিনি।
চকবাজার থেকে আসা তাজবাউল হক ইমন বলেছেন ভিন্ন কথা। তিনিও টাঙ্গাইলে যাবেন।
তার ভাষ্য, ‘ভোর ৬টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়েও পেছনে পড়েছি। জানি না আজকে টিকিট পাব কি না।’
পুলিশের বাঁশি
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে টিকিটপ্রত্যাশীদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা রোধে বাঁশি বাজাচ্ছে রেলওয়ে পুলিশ। মাইকে কিছুক্ষণ পরপর লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটার অনুরোধ করছেন দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা।
ঢাকায় ছয়টি স্টেশন এবং গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঈদযাত্রার ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাবে। কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে দেয়া হচ্ছে উত্তরাঞ্চলগামী আন্তনগর ট্রেনের টিকিট। কমলাপুর শহরতলী প্ল্যাটফর্ম থেকে রাজশাহী ও খুলনাগামী ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাবে।
তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশনে পাওয়া যাবে ময়মনসিংহ, জামালপুর ও দেওয়ানগঞ্জগামী ট্রেনের টিকিট।
কমলাপুর শহরতলীর রেলওয়ে স্টেশনে দক্ষিণাঞ্চলের টিকিট দেয়া হচ্ছে। সেখানে টিকিট পেয়েছেন মানিক শেখ। তিনি খুলনাগামী বেনাপোল এক্সপ্রেসের ট্রেনের টিকিট করেছেন।
মানিক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘টিকিটের জন্য বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় এসেছি। তখনও টিকিটের জন্য প্রায় ১০০ জন মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন।’
বাংলাদেশ রেলওয়ে জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে পাঁচ দিন কাউন্টারে কাউন্টারে সকাল ৮টায় টিকিট বিক্রি শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে। আর মোবাইল অ্যাপ এবং ইন্টারনেটে ই-টিকেটিংয়ের মাধ্যমে টিকিট বিক্রি শুরু হবে সকাল ৮টা থেকে।
এবার ঈদে ঢাকা থেকে বহির্গামী ট্রেনে প্রতিদিন আসন সংখ্যা হবে ২৬ হাজার ৭১৩টি। এর মধ্যে কাউন্টারে অর্ধেক টিকিট বিক্রি হবে। বাকি অর্ধেক টিকিট মোবাইল অ্যাপ ও ই-টিকেটিংয়ের মাধ্যমে বিক্রি হবে।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার আফসার উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কমলাপুর শহরতলী স্টেশন থেকে এবারই প্রথমবারের মতো দেয়া হচ্ছে রাজশাহী ও খুলনাগামী ট্রেনের টিকিট। এর বাইরে জয়দেবপুরেও এবার প্রথম ট্রেনের টিকিট দেয়া হচ্ছে। মানুষের ভোগান্তি কমানোর জন্যই এমন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’