নড়াইলে কলেজশিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাসের গলায় জুতার মালা পরানোর ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবারই রিটটি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী পূর্ণিমা জাহান।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আদালতের পরামর্শ অনুযায়ী আমরা রিট দায়েরের জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েছি। আজকেই রিটটি দায়ের করে শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হবে।’
এর আগে গত ২৮ জুন এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আদেশ চেয়ে বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন এই আইনজীবী। পরে বিষয়টি নিয়ে রিট করতে পরামর্শ দেয় হাইকোর্ট।
প্রেক্ষাপট
ফেসবুকে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বহিষ্কৃত মুখপাত্র নূপুর শর্মার সমর্থনে কলেজের এক হিন্দু শিক্ষার্থীর পোস্ট দেয়াকে কেন্দ্র করে গত ১৮ জুন দিনভর নড়াইল সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ, সহিংসতা চলে। গুজব ছড়িয়ে দেয়া হয় ওই শিক্ষার্থীর পক্ষ নিয়েছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস।
এরপর পুলিশের পাহারায় বিকেল ৪টার দিকে স্বপন কুমার বিশ্বাসকে ক্যাম্পাসের বাইরে নিয়ে যাওয়ার সময় তাকে দাঁড় করিয়ে গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয় একদল ব্যক্তি।
শিক্ষক স্বপন কুমার হাত উঁচিয়ে ক্ষমা চাইতে থাকেন। পরে তাকে তুলে নেয়া হয় পুলিশের গাড়িতে।
পুলিশের সামনে এমন ঘটনায় দেশজুড়ে তৈরি হয়েছে তীব্র ক্ষোভ।
শিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাসকে গলায় জুতার মালা দিয়ে অপদস্থ করার ঘটনায় কারও দায়িত্বে গাফিলতি আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে বুধবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
নিউজবাংলার অনুসন্ধানে দেখা গেছে, স্বপন কুমারকে জুতার মালা পরানোর পর তার আশপাশে পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাসহ বাহিনীর অন্তত ১০ সদস্য উপস্থিত ছিলেন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে যেখানে দাঁড় করিয়ে জুতার মালা পরানো হয়, তার তিন-চার হাত দূরেই দৃশ্যত নির্বিকার ভঙ্গিতে দাঁড়িয়েছিলেন নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শওকত কবীর।