ঢাকার সাভারে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারকে হত্যা মামলায় প্রধান আসামি স্কুলছাত্র আশরাফুল ইসলাম জিতুকে গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
শ্রীপুরের নগরহাওলা গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি বুধবার সন্ধ্যায় নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।তিনি বলেন, ‘নগরহাওলা গ্রাম থেকে জিতুকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। এ বিষয়ে কাল সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে।’
কুষ্টিয়ার কুমারখালী থেকে এদিন ভোরে জিতুর বাবা উজ্জ্বল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে আশুলিয়া থানা পুলিশ। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডে পায় পুলিশ।মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এমদাদুল হক জানান, সকালে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাকে ঢাকার মুখ্য বিচারিক আদালতে তোলা হয়। শুনানি শেষে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয় আদালত।
যা ঘটেছিল
হাজি ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল হাসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রতি বছরের মতো এবারও আমরা ছেলেদের ফুটবল ও মেয়েদের ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছি। শনিবার স্কুলে মেয়েদের ক্রিকেট খেলা চলছিল। এ সময় প্রতিষ্ঠানের দ্বিতীয় তলা ভবনের বারান্দায় দাঁড়িয়ে খেলা দেখছিল ছেলে শিক্ষার্থীরা।
‘অভিযুক্ত ছাত্রও দ্বিতীয় তলায় ছিল। হঠাৎ সে নেমে মাঠের এক পাশে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষক উৎপলকে স্টাম্প দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে পালিয়ে যায়। আহত অবস্থায় উৎপলকে উদ্ধার করে এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই আজ (সোমবার) সকালে উৎপলের মৃত্যু হয়।’
অধ্যক্ষ জানান, উৎপলের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানার এঙ্গেলদানি গ্রামে। তিনি প্রায় ১০ বছর ধরে হাজি ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক ছিলেন। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করছিলেন।
দায়িত্বের অংশ হিসেবেই উৎপল শিক্ষার্থীদের আচরণগত সমস্যা নিয়ে কাউন্সেলিং করতেন ও তাদের নানা অপরাধ বা নিয়মবহির্ভূত কর্মকাণ্ডের বিচার করতেন বলে জানান অধ্যক্ষ। তার ধারণা, অভিযুক্ত ছাত্রকেও উৎপল কোনো কারণে শাসন করেছিলেন। সেই ক্ষোভ থেকে ওই কিশোর তার ওপর হামলা করেছে।
নিহতের ভাই ও মামলার বাদী অসীম কুমার সরকার বলেন, ‘আমি জানতে পেরেছি, ওই শিক্ষার্থী মেয়েদের ইভটিজিংসহ নানা উচ্ছৃঙ্খল কাজে অভিযুক্ত। তাকে শাসন করায় আমার ভাইকে মেরে ফেলেছে সে। আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এমদাদুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নিহত শিক্ষক প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি থাকায় নিয়মকানুন মানাতে শিক্ষার্থীদের শাসন করতেন। তিনি ওই শিক্ষার্থীকেও শাসন করায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে আমাদের প্রাথমিক ধারণা।’