বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রংপুরে বকেয়া আদায়ে বিপাকে নেসকো

  •    
  • ২৯ জুন, ২০২২ ১৬:৫৫

রংপুর নেসকো লিমিটেডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (অফিস পরিচালন ও সংরক্ষণ সার্কেল-১) মো. আশরাফুল ইসলাম মণ্ডল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা বকেয়া আদায়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। সরকারি অনেক অফিস তাদের বকেয়া পরিশোধ করেছে। যাদের বকেয়া আছে তারা বরাদ্দ পেলেই পরিশোধ করবে বলে সংশ্লিষ্ট অফিস থেকে আমাদের জানানো হয়েছে।’

রংপুরে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানসহ গ্রাহক পর্যায়ে ৪৭ কোটি টাকার বেশি বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে বলে জানিয়েছে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (নেসকো)। এর মধ্যে সরকারি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কাছেই পাবে ৩২ কোটি ২৯ লাখ ৭৫ হাজার ৩১১ টাকা।

গত ১ জুন জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রাহকরা বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করলে সংযোগ কেটে দেয়ার নির্দেশনা দেন। সে নির্দেশনার পর বকেয়া বিল আদায়ে তৎপর হয়েছে রংপুর নেসকো।

বিল পরিশোধ করার জন্য বেশ কয়েক দিন মাইকে প্রচার চালিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। দিয়েছে চিঠিও। তবে বিল পরিশোধে গ্রাহকের তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না।

সূত্র জানিয়েছে, নেসকো ডিভিশন-১-এর বকেয়া পড়েছে ৯ কোটি ২ লাখ ১০ হাজার ৩১১ টাকা। এর মধ্যে সিটি করপোরেশনের বকেয়া ৮ কোটি ৭৫ লাখ ৯৪ হাজার ১১১ টাকা, রংপুর পুলিশ ক্লাবের (মেট্রোপলিন কোতোয়ালি থানার সামনে) ১২ লাখ ২৮ হাজার টাকা।

এ ছাড়া রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানার ৬০ লাখ ৯ হাজার ৭০০ টাকা, রংপুর শিল্পকলা একাডেমির ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৫০০ টাকা এবং নবাবগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা বকেয়া জমেছে।

৮ কোটি ৮৪ লাখ ৫৫ হাজার টাকা বকেয়া পড়েছে ডিভিশন-২-এর। এর মধ্যে সিটি করপোরেশনের বকেয়া ৮ কোটি টাকা, রংপুর জেলা পুলিশের ৭২ লাখ, রংপুর গণপূর্ত বিভাগের ৪৫ লাখ ও স্টেডিয়ামের বকেয়া রয়েছে ১২ লাখ ১০ হাজার টাকা।

ডিভিশন-৩-এর পাওনা জমেছে ১৪ কোটি ৪৪ লাখ ১০ হাজার টাকা। যার মধ্যে সিটি করপোরেশনের ৮ কোটি ৫৪ লাখ ৯০ হাজার, বিহারি ক্যাম্পের ৫ কোটি ৮৬ লাখ ২০ হাজার, মাহিগঞ্জ রেঞ্জ রিজার্ভ পুলিশের ২ লাখ টাকা।

রংপুর নেসকো ডিভিশন-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল মতিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রংপুর সিটি করপোরেশনের বকেয়া বিল পরিশোধ করার জন্য প্রতি মাসে একটি করে চিঠি দেয়া হয়। কিন্তু তার কোনো উত্তর আমরা পাই না।

‘ইতোমধ্যে অনেক সরকারি অফিস তাদের বিদ্যুৎ বিলের অংশিক পরিশোধ করেছে, অনেকে অর্ধেক করেছেন। সবাইকে নিয়মিত চিঠি দেয়া হচ্ছে।’

ডিভিশন-৩-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘রংপুর সিটি করপোরেশনের কাছে সব থেকে বেশি পাওনা আমাদের। আমরা সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর সেই নির্দেশনা উল্লেখ করে চিঠি দিয়েছি। জুন মাস শেষ হচ্ছে, এখনও কোনো বিল পাইনি।

তিনি আরও বলেন, ‘রংপুরে অবস্থিত দুটি বিহারি ক্যাম্পে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে ৫ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। একসময় ত্রাণ মন্ত্রণালয় এদের বিল দিত। এখন দেয় না।

‘২০১৬ সালে উচ্চ আদালত বিহারিদের নাগরিকত্ব নিয়ে একটি আদেশ দেয়। সেই আদেশে বলা হয় বিদ্যুৎ বিল বিহারিরাই দেবে। কিন্তু তারা দিচ্ছে না। যতটুুকু শুনেছি, তারা উচ্চ আদালতে আপিল করেছে। আমরা বকেয়া বিলের জন্য প্রতি মাসে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিই, কিন্তু বিল পাই না।’

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বেসরকারি পর্যায়ে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া জমেছে ১৫ কোটি টাকার বেশি। এর মধ্যে প্রায় ১০ কোটি টাকার বিলের গ্রাহককে পাওয়াই যাচ্ছে না।

কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, রংপুরে বিভিন্ন বর্ধিত সড়কের কাজের ফলে সড়কের দুই পাশের বহু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর দোকান ভাঙা পড়েছে। এসব দোকানের নেয়া বিদ্যুৎ বিল বাকি। আর এ দোকানিরা এখন কোথায় আছে কেউ জানে না।

এদিকে কর্মকর্তারা নিউজবাংলাকে জানান, বেসরকারি পর্যায়ে বকেয়া আদায়ে প্রতিদিনই কমপক্ষে অর্ধশত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে। যারা বিল পরিশোধ করছে, তাদের পুরনরায় সংযোগ দেয়া হচ্ছে। যারা দিচ্ছে না, তাদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকছে। এ ছাড়া প্রতিনিয়তই মামলা করা হচ্ছে।

রংপুর নেসকো লিমিটেডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (অফিস পরিচালন ও সংরক্ষণ সার্কেল-১) মো. আশরাফুল ইসলাম মণ্ডল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা বকেয়া আদায়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। সম্প্রতি রংপুর সিটি করপোরেশন ডিভিশন-২-এ ১ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে।

‘সরকারি অনেক অফিস তাদের বকেয়া পরিশোধ করেছে। যাদের বকেয়া আছে তারা বরাদ্দ পেলেই পরিশোধ করবে বলে সংশ্লিষ্ট অফিস থেকে আমাদের জানানো হয়েছে।’

রংপুর সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র মাহমুদুর রহমান টিটু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মেয়র মহোদয় হজে গেছেন। প্রশাসনিক বিষয়টি তিনি দেখেন। আমার এ বিষয়টি জানা নেই।’

এ বিভাগের আরো খবর